সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ ছয় বছর পর যুক্তরাজ্যের জেলবন্দি পলাতক হীরা ব্যবসায়ী নীরব মোদির (Nirav Modi) ভারত প্রত্যাবর্তনের পথে অবশেষে আইনি বাধা দূর হলো। হ্যাঁ, ব্রিটেনের আদালত গত মাসে তার দায়ের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর ফলে নিরব মোদির ভারতের মাটিতে ফিরে আসে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আদালতের সাফ বার্তা
এদিন লন্ডন আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, ভারতের পক্ষ থেকে যেসব আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তা যথেষ্ট এবং নীরব মোদির পক্ষে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনোরকম সম্ভাবনা নেই। আদালত ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য, মানসিক চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কিত রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, নীরব মোদির আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিল যে, তার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ। এমনকি তিনি আত্মহত্যার তাগিদেও রয়েছে। এমতাবস্থায় তাকে ভারতে পাঠানো হলে ইউরোপিয়ান হিউম্যান রাইটস কনভেনশনের ধারা-3 অনুযায়ী তা অত্যাচার বলেই গণ্য করা হবে। পাশাপাশি ভারতীয় জেল ব্যবস্থার দুর্বলতার দিকটিও তিনি তুলে ধরেছেন।
তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যের আদালতের পাল্টা যুক্তি পেশ করে জানানো হয়, আত্মহত্যার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও কোনও নির্দিষ্ট নির্যাতনের প্রমাণ নেই। আর ঠিক এমনটা দেখা গিয়েছে পূর্ববর্তী বাবর আহমেদ বনাম ইউকে মামলাতে।
আরও পড়ুনঃ ব্রিটিশদের পিটিয়ে ডবল সেঞ্চুরি! কোহলির বিকল্প পেয়ে গেল টিম ইন্ডিয়া
13 হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, 2019 সাল থেকে নিরব মোদি ব্রিটেনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ জেলে বন্দী হয়ে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রায় 13,000 কোটি টাকার জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। তবে 2018 সালে এই কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসতেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই সিবিআই এবং ইডি সহ একাধিক ভারতীয় তদন্ত সংস্থা তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আর ভারতে ফেরানোর প্রয়াস চালাতে থাকে।
ব্রিটেনের আদালতের এই রায়ের পর নীরব মোদির ভারতে ফিরে আসা এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। এমনকি একাধিক মামলায় অভিযুক্ত নিরব মোদির দেশে ফেরা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থার জয় নয়, বরং আইনি ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থার জন্যও এক বিরাট জয় বলে মনে করছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ।