যত সময় এগোচ্ছে ভারত সহ বিশ্বের বড় বড় দেশগুলি নিজেদের অস্ত্র ভাণ্ডারকে আরও শক্তিশালী করার কাজ করে চলেছে। একদিকে যখন ভারতের মতো দেশ শত্রুদের বুকে কম্পন ধরিয়ে নিজেদের অস্ত্রে নিত্য নতুন অস্ত্র যোগ করাচ্ছে, ঠিক সেভাবেই চিন, পাকিস্তানও একই কাজ করছে। তবে পাকিস্তান সরকারের মাথায় নতুন বাজ ভেঙে পড়েছে রীতিমতো। লড়াকু ফাইটার জেট হিসেবে খ্যাত JF-17 Thunder পাক সরকারের চিন্তা বাড়িয়েছে। অভিযোগ, উড়লেই এটি ভেঙে পরছে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
চিন-পাকিস্তানের বড় চুক্তি
যত সময় এগোচ্ছে ততই পাকিস্তান ও চিন, এই দুই দেশের সঙ্গে নানা বিষয়ে সে সীমান্ত সমস্যা হোক কিংবা জঙ্গি হামলা… সম্পর্ক এক কথায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু এবার কিনা এই দুই দেশেরই মাথা আন্তর্জাতিক মঞ্চে হেঁট হয়ে গেল! যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ থান্ডারটি কয়েক কোটি টাকা খরচ করে চিন ও পাকিস্তান বানিয়েছিল। অতীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে এই যুদ্ধবিমান নিয়ে চিন, পাকিস্তান যতই গর্ব করেছে, ততবারই এই বিমান ভারতের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবে এই ফাইটার জেট নিয়ে প্রকাশ্যে যে তথ্য এসেছে তা চিন ও পাকিস্তান এই দুই দেশকেই চরম অস্বস্তির মধ্যে ফেলবে সেটা বলাই বাহুল্য।
কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছিল যে পাকিস্তান বিমান বাহিনী তাদের যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ থান্ডারে পরমাণু ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র রা’দ বসিয়েছে। এয়ার লঞ্চড এই ক্ষেপণাস্ত্র পরমাণু অস্ত্র বহন করতে সক্ষম। পাকিস্তান তাদের পুরনো মিরাজ যুদ্ধবিমানের পরিবর্তে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে চিনের নতুন জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান সজ্জিত করছে। কিন্তু এতকিছুর পরেও নতুন করে বিতর্কে জড়িয়েছে এই বিমান।
ভেঙে পড়ছে জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ২ বিমান
একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ২ বিমান ভেঙে পড়েছে বারবার। চলতি বছরের ৫ জুন পাকিস্তানের পঞ্জাবের ঝাং জেলার কাছে একটি জেএফ-১৭ থান্ডার ব্লক ২ বিমান ভেঙে পড়ে। মহড়ার সময়ই এই বিপর্যয় ঘটে বলে খবর। যদিও এই নিয়ে ‘স্পিকটি নট’ মুডে ছিল পাকিস্তান। চিনের সঙ্গে যৌথ ভাবে জেএফ-১৭ থান্ডার তৈরি করে পাক সরকার। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ মোটা অঙ্কের চুক্তিও হয়। তাহলে কি চিন পাকিস্তানের মাথায় হাত বুলিয়ে কোনওভাবে লুটে নিল? এই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জানলে অবাক হবেন, জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান গত ১৩ বছরে ৫ বার ভেঙে পড়েছে, যা স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে বাড়িয়েছে পাকিস্তানের। এই ফাইটার জেটটি ভারতের তেজসের মতো লাইটওয়েট মাল্টি-রোল ফাইটার জেটকে টেক্কা দিতে সক্ষম। এই জেএফ-১৭ থান্ডার হল একটি একক ইঞ্জিনবিশিষ্ট যুদ্ধবিমান।
কবে চুক্তি হয়েছিল
১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের অ্যারোনটিক্যাল কমপ্লেক্স (পিএসি) চিনের চেংডু এয়ারক্র্যাফ্ট ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ ভাবে জেএফ-১৭ তৈরি করার পক্ষে চুক্তি করেছিল। এরপর ১০ বছর পর জেএফ-১৭ থান্ডার পাক বিমানবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়। অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন, ভারতের ‘মেরুদণ্ড’ তেজসকে টেক্কা দিতে চিন-পাকিস্তান যৌথভাবে এই জেট বিমান তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। এই যুদ্ধবিমানে চিনের দেওয়া আরডি-৯৩ ইঞ্জিনের ব্যবহার হয়।
JF-17 Thunder জেটের বিশেষত্ব কী
JF-17 Thunder জেটের বিশেষত্ব সম্পর্কে শুনলে চমকে উঠবেন আপনিও। জানা গিয়েছে, এই জেএফ-১৭ থান্ডার ২০০০ কিলোমিটার অবধি পাড়ি দিতে পারে। এই জেট আবার ২৩০০ কিলোগ্রামের বেশি জ্বালানি বহন করতে পারে না। মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরার সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই জেট। এর শরীর অ্যালয় আর অ্যালুমিনিয়ামে তৈরি। তবে এতকিছু থাকলেও কী হবে, এই জেট বিমানের এমন অনেক কিছু খুঁটিনাটি গলদ আছে যা পাকিস্তানের সমস্যা বাড়িয়েছে। গলদের মধ্যে রয়েছে কম সহনশীলতা, নির্ভুল লক্ষ্যভেদ করতে পারে না। এছাড়া কম পেলোড বহনের ক্ষমতা রয়েছে এই বিমানের।
এদিকে এই বিমান রয়েছে মায়ানমার, নাইজেরিয়ার কাছেও। সেই দেশের বিমান বাহিনীও অভিযোগ করেছে এই বিমান নিয়ে। মায়ানমার ২০১৬ সালে চিনের সঙ্গে চুক্তি করে ১৬টি জেএফ-১৭ কেনে। যদিও পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, যুদ্ধবিমানকে আরও উন্নত করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।