সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক এখন একেবারে টালমাটাল অবস্থা। সূত্রের খবর, পহেলগাঁও হামলার জেরে পাকিস্তান এবার ভারতের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যের (India-Pakistan Trade) ইতি টানার ইঙ্গিত দিয়েছে। আর এর ফলে দেশটি ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি। বিশেষ করে ওষুধের সরবরাহে হতে পারে বড় ধরনের সমস্যা। এমনটাই আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা।
পাকিস্তানের বহু ওষুধ এবং কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানি করা হয় বলে খবর। আর সেক্ষেত্রে ভারত থেকে যদি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দেশের ওষুধ খাতে প্রচুর সংকট দেখা যেতে পারে। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, পাকিস্তানের ওষুধ বাজারে এবার ভরাডুবি আসতে পারে।
ভারত থেকে আমদানি হয় ৩০ থেকে ৪০% ওষুধ
পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত থেকে প্রতি বছর প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ওষুধ, কাঁচামাল এবং অন্যান্য সরঞ্জাম পড়শি দেশে যায়। আর এর মধ্যে ক্যান্সারের থেরাপি, ভ্যাকসিন, সাপের বিষ প্রতিষেধক সবই আমদানি করা হয়।
বিশেষ করে পাকিস্তান সরকার ২০১৯ সালে বালাকোটে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর দুই দেশের সম্পর্ক যখন সাপে-নেউলে হয়েছিল, তখন এই ধরনের সংকটের কবলে পড়েছিল। আর সে সময় পাকিস্তানে ওষুধের মহাসংকট দেখা গিয়েছিল। আর সেই অভিজ্ঞতা থেকে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে পাকিস্তানের রাজধানী।
বিকল্প পথ খুঁজছে পাকিস্তান
পাকিস্তান সরকার এবার বিকল্প পথ খোঁজার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা চীন, রাশিয়া, ইউরোপের মতো দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তবে কোনও দেশের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য চুক্তি করা এখনও সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতি যদি দিনের পর দিন আরও খারাপ হয়, তাহলে জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত।
তবে পাক সরকার আশঙ্কা করছে যে, ভারত থেকে যদি ওষুধ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বড় ধরনের সংকটের মুখোমুখি পড়তে পারে পড়শি দেশ। আর অতীতে এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়েই তারা আগেভাগে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বিপদে পড়বে সাধারণ মানুষ
কেবল দেশের বাজার নয়, বরং পাকিস্তানের সাধারণ মানুষও এই সংকটের মধ্যে পড়বে। হ্যাঁ, বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, ভারত-পাকিস্তানের বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেলে চোরাচালান এবং অবৈধভাবে বিদেশি ওষুধ বাজারে প্রবেশ করতে পারে। আর এর ফলে দুবাই, ইরান বা আফগানিস্তান থেকে ভুয়ো বা অনুমোদনহীন ওষুধ পাকিস্তানে আসতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে।
শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সঠিক ওষুধের যোগান নিশ্চিত করতে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারণ এই ধরনের ডুপ্লিকেট ওষুধ সাধারণ মানুষ ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। আর এর ফলে পাকিস্তানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বড়সড় চাপ পড়বে।
আরও পড়ুনঃ মসজিদের মাইকে আজানের বদলে হুঁশিয়ারি! ঝিলাম নদীতে বন্যার জেরে PoK-তে আতঙ্ক
ভবিষ্যতে কী হতে চলেছে পাকিস্তানে?
পাকিস্তান এখন কোনোদিকে কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। তবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের সম্পর্ক যদি পুনরুদ্ধার না হয়, তাহলে ওষুধের বাজার যে ভরাডুবিতে পড়বে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখার, তাঁদের স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেয়।