সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: নেপাল জুড়ে চলা Gen-Z আন্দোলন (Nepal Protest) দিনের দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া সেই সহিংসতায় এখনো পর্যন্ত 72 জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই ঘোষণা করলেন, যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের পরিবারকে 10 লক্ষ নেপালি রুপি অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় 10 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তাঁদেরকে শহিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
সরকারের রিপোর্টে মৃত্যুর পরিসংখ্যান
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারে রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় 59 জন আন্দোলনকারী প্রাণ হারিয়েছে। পাশাপাশি 10 জন পালিয়ে যাওয়া বন্দী নিহত হয়েছেন। এমনকি তিনজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছে। সবমিলিয়ে মোট 72 জনের প্রাণ গিয়েছে এই নৃশংস হামলায়। পাশাপাশি এর মধ্যে রবিবার সকালে কাঠমান্ডুর সুপারমার্কেট থেকে ছয়টি দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে চারজন পুরুষ এবং দু’জন মহিলা ছিল।
এছাড়া এখনো পর্যন্ত মোট 191 জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে খবর। এমনকি এর মধ্যে 134 জন আহত আন্দোলনকারী এবং 57 জন পুলিশ রয়েছে। তবে চিকিৎসার পর ইতিমধ্যেই 1000 জনের বেশি আহতকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার আশ্বাস দিয়েছে যে, এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকটি আহত ব্যক্তির সম্পূর্ণ চিকিৎসার বিনামূল্যে করা হবে।
The Government of Nepal has decided to declare those who died during the Gen Z movement as martyrs and will also provide Rs 10 lakh to the families of the deceased!
PS. So far, more than 70 people have lost their lives!
Photo. Suman Chandra Rauniyar pic.twitter.com/qu04mA0CQ3
— Routine of Nepal banda (@RONBupdates) September 14, 2025
অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, 9 সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডু সহ বিভিন্ন জেলায় যে সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগ ঘটেছে, তার বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হবে। জাতির উদ্দেশ্যে ভাসনে তিনি বলেছেন, আমরা যা দেখেছি তা কোনও স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনা নয়, বরং এটা ছিল পরিকল্পিত নাশকতা। সাধারণ মানুষের নামের আড়ালে সংঘটিত দলগুলি ঘরবাড়ি, দোকান, হোটেল সবকিছু জ্বালিয়ে দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, আন্দোলনকারীদের মূল দাবি ছিল দুর্নীতি ও অচল অবস্থায় জর্জরিত নিম্নকক্ষ ভেঙে দেওয়া। সেই দাবিকে কেন্দ্র করেই অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশে রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাওডেল শুক্রবার মধ্যরাতে সাংসদ ভেঙে দিয়েছেন। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়েই শুরু হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্ক।
আরও পড়ুনঃ কমিশনের গা থেকে কলঙ্কের দাগ কি এবার মুছবে? SSC পরীক্ষায় বসে যা জানালেন রাজন্যা
আগামী মার্চেই নির্বাচন
এদিকে আন্দোলনের উত্তাপের মাঝেই নেপালে আগামী বছরের 5 মার্চ নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত অরাজকতা এড়াতে বড়সড় ভূমিকা রাখবে, যা দেশকে আবারও শান্তিপূর্ণ পথে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছে, নেপাল কি সত্যিই আগের জায়গায় ফিরতে পারবে নাকি এই সিদ্ধান্ত নতুন কোনও সংকট তৈরি করবে? সব উত্তর সময় বলবে।