সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পাকিস্তানে (Pakistan) আবারও যুদ্ধের হাওয়া বইছে। নেতারা একদিকে পরমাণু হামলার হুমকি দিচ্ছে, অন্যদিকে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিচ্ছে। আর দেশের দুর্দশার দিকে নজর নেই কারোরই। এখন পাকিস্তানের যা অবস্থা, তাতে যুদ্ধ তো দূরের কথা, বরং সাধারণ মানুষের পেট চালানোই দায় হয়ে পড়েছে।
একটু চোখ খুলে তাকালেই দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের বাজারে আগুন লেগেছে। চাল থেকে শুরু করে ডাল, আঠা, সবজি, ফলমূল, মাংস এমনকি পেট্রোল-ডিজেল সবকিছুই যখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ভারতে যেখানে ১ কেজি মুরগির মাংস ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, সেখানে পাকিস্তানে ১ কেজি মুরগির মাংস কিনতে গেলে খোয়াতে হচ্ছে ৭৯৮ পাকিস্তানি রুপি।
কোন কোন জিনিসের দাম বেড়েছে?
একটু খতিয়ে দেখলে আমরা দেখতে পাব, পাকিস্তানের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিসেরই গায়েই আগুন। যেমন-
- ১ ডজন মুরগির ডিমের দাম ৩৩২ পাকিস্তানি রুপি,
- ১ লিটার দুধের দাম ২২৪ পাকিস্তানি রুপি,
- ৫০০ গ্রাম পাউরুটির দাম ১৬১ পাকিস্তানি রুপি,
- ১ কেজি আলুর দাম ১০৫ পাকিস্তানি রুপি,
- ১ কেজি আপেলের দাম ২৮৮ পাকিস্তানি রুপি,
- ১ ডজন কলার দাম ১৭৬ পাকিস্তানি রুপি।
- ১ কেজি চিকেন ৮০০ টাকা।
শুধু এখানেই শেষ নয়। পাকিস্তানে জ্বালানির দামেও লেগেছে আগুন। হ্যাঁ, ১ লিটার পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৫২.৬৬ পাকিস্তানি রুপিতে এবং ১ লিটার ডিজেল ২৯৮.৩৪ পাকিস্তানি রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। যদিও পেট্রোল ও ডিজেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তবে সাধারণ মানুষের জন্য এই দামে পেট্রোল-ডিজেল কেনা নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
কেন এরকম দুর্দশা?
আসলে পড়শি দেশে জিনিসপত্রের এই ঊর্ধ্বগতির পিছনে অন্যতম কারণ হলো- ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়া। সূত্র বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় ৩৮৩৮ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ভারতের ভয়? পরিবারকে বিদেশে পাঠিয়ে দিলেন আসিম মুনির! আতঙ্ক পাকিস্তানে
আর এই বাণিজ্যের মাধ্যমে পাকিস্তান ভারতের কাছ থেকে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন ওষুধ, কেমিক্যাল, খাদ্যদ্রব্য, মাছ, মাংস, ফলমূল, লবণ ইত্যাদি আমদানি করত। তবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে পাকিস্তান নিজেদের সিদ্ধান্তে আটারি সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে। এর জেরেই বাজারে ভয়াবহ আগুন লেগেছে।
ওষুধ সংকট
শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারদাবার নয়, বরং ওষুধের বাজারেও আরও বিপদ অপেক্ষা করছে। হ্যাঁ, পাকিস্তান তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশই ভারত থেকে আমদানি করত। আর বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওষুধের বাজারে একেবারে টালমাটাল অবস্থা হয়ে পড়েছে।