ধীরে ধীরে সামনে আসছে আসল খেলা, বাংলাদেশে নৌসেনা আড্ডা বানানো শুরু করলো আমেরিকা

Published on:

american navy in bangladesh

ঢাকাঃ বর্তমানে নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। যার মধ্যে অন্যতম হল কোটা বিরোধী আন্দোলন। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে অবধি হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সে দেশের পরিস্থিতি। তবে এখন সে দেশে নতুন সরকার গঠন হয়েছে। তারপরেও যে একেবারে বিক্ষোভের আঁচ দেশে নিভে গেছে সেটাও কিন্তু জোর দিয়ে বলা যায় না। যাইহোক, এই ঘটনার মাঝেই বাংলাদেশ নিয়ে বড় সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল আমেরিকা, এমটাই শোনা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ নিয়ে বড় প্ল্যান আমেরিকার!

এখন আপনার মাথাতেও প্রশ্ন আসছে নিশ্চয়ই যে বাংলাদেশ নিয়ে তলে তলে কী পরিকল্পনা করছে আমেরিকা? তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি রইল শুধুমাত্র আপনার জন্য। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সরকারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। এদিকে এবার এই সুযোগে যে আমেরিকা বড় কিছু করবে সেটা আগেভাগেই আন্দাজ করেছিল বিশিষ্ট মহল। আর সকলের সেই আশঙ্কা যেন মিলেও গেল বলে মনে হচ্ছে। আসলে এখন শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশে নৌঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র !

বাংলাদেশে আমেরিকার নৌঘাঁটি!

জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে নৌঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতে আসার কয়েকদিন মাথায় শেখ হাসিনা আমেরিকার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন। হাসিনা সেই সময় বলেন, তিনি যদি সেন্টমার্টিন দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতেন, আজও তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকতেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তা অস্বীকার করে বলেছেন, তার মা হাসিনা এ ধরনের কোনও বক্তব্য দেননি। বাংলাদেশে অস্থিরতার তিন মাস আগে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপে বিদেশি শক্তির নজর রয়েছে। শেখ হাসিনা তখন বলেছিলেন, ওই দেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্বীপটি হস্তান্তর করলে তাদের কোনও সমস্যা হবে না। এ সময় শেখ হাসিনা দেশটির নাম উল্লেখ না করলেও স্পষ্টতই আমেরিকার প্রতি ইঙ্গিত ছিল।

আমেরিকার নজরে বাংলাদেশের এই জায়গা

সূত্রের খবর, আসলে আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরেই বঙ্গোপসাগরে তাদের সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে চেয়েছিল। এ জন্য তার চোখ রয়েছে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এরই মাঝে মর্যাদাপূর্ণ মার্কিন নেভাল ইনস্টিটিউটের প্রসিডিংস ম্যাগাজিনে বাংলাদেশের কাছে একটি মার্কিন নৌঘাঁটির গুরুত্ব তুলে ধরে একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। আর সেখানে যা বলা হয়েছে তা দেখে সকলেরই চোখ কার্যত কপালে উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক তানভীর আহমেদ ও পৃথু বিশ্বাসের নিবন্ধে বঙ্গোপসাগরের প্রান্তে বাংলাদেশকে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

WhatsApp Community Join Now

আর্টিকেলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একটি প্রাণবন্ত জাহাজ নির্মাণ শিল্প রয়েছে এবং এর নৌবাহিনীর মালিকানাধীন মেরামত কেন্দ্রগুলো যেকোনও সংঘাতের সময় মার্কিন নৌবাহিনীর সম্পদকে সমর্থন করতে পারে। এ ছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর লক্ষ্যবস্তুকে সমর্থন করে অবরোধ অভিযানে তাদের নৌঘাঁটিগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। বাংলাদেশের প্রাথমিক নৌঘাঁটি মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল এবং চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের গুরুত্বপূর্ণ অংশ চীন-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর (সিএমইসি) তত্ত্বাবধান করে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহযোগিতায় মার্কিন নৌবাহিনী চীনা প্রকল্প পরিদর্শনের জন্য ওই ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করতে পারে। উপরন্তু, বঙ্গোপসাগরের চূড়ায় বাংলাদেশের কৌশলগত সুবিধাটি মালাক্কা প্রণালী রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রকে একটি সুবিধা দিতে পারে, যা চীনা অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর দ্রুত আধুনিকায়ন করা হয়েছে, যা এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। চীন থেকে সাবমেরিন কিনে সামুদ্রিক নিরাপত্তা সক্ষমতা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। তবে এখন বাংলাদেশে মার্কিন নৌঘাঁটি তৈরির দাবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

সঙ্গে থাকুন ➥
X