সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আবারও যুদ্ধের আগুন জ্বলছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (PoK Protest)। গতকাল হাজার হাজার মানুষ আওমি অ্যাকশন কমিটির পতাকা হাতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলেন। আর ঠিক সে সময়ই পাক সেনারা রণমূর্তি ধারণ করে। মুহূর্তের মধ্যেই গোলাগুলির শব্দে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। আর ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয় এবং 22 জন আহত হয়। তবে এই বিক্ষোভের নেপথ্যে আসল কারণ কী?
কেন এই বিক্ষোভ?
আসলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ বহু বছর ধরেই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিষ্কার পানীয় জল, পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে দাবি জানিয়ে আসছে। দুর্নীতি, ঘুষ আর প্রশাসনিক উদাসীনতায় তাঁদের জীবনযাত্রা কার্যত বিপর্যস্তের মধ্যে। আর এরই প্রতিবাদে নীলম ভ্যালি পাবলিক অ্যাকশন কমিটির আহ্বানে ধর্মঘট, শাটার ডাউনের মতো আন্দোলন শুরু হয়। ওই কমিটির মুখপাত্র শওকত নওয়াজ মির ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছেন, 70 বছর ধরে আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। যদি এবারও সরকার আমাদের দিকে মুখ ফিরে না তাকায়, তাহলে জনগণের রোষের মুখে পড়তে হবে।
🚨 #POJK में पाक सरकार विरोधी प्रदर्शन हिंसक और बेकाबू.
⚡सुरक्षा बलों ने चलाई गोलियां तो स्थानीय लोगों ने भी कई इलाकों में सुरक्षा बलों को बंधक बनाया.
⚡महंगाई, करप्शन, शोषण और प्रताड़ना के खिलाफ बगावत 🔥 pic.twitter.com/6S6Xrz4oLQ— Madhurendra kumar मधुरेन्द्र कुमार (@Madhurendra13) September 29, 2025
সেনা, সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ
এদিকে শওকত নওয়াজ মিরের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার রাস্তায় নেমেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। ব্যানার হাতে তাঁরা শান্তিপূর্ণ মিছিলই চালাচ্ছিল। তবে আচমকাই পাক সেনা এবং আইএসআই সমর্থিত মুসলিম কনফারেন্সের দুষ্কৃতীরা পরিস্থিতি দমন করতে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আর সেখানে দেখা যাচ্ছে, বন্দুক হাতে কয়েকজন যুবক খোলা রাস্তায় দাপাদাপি করছে আর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। অভিযোগ উঠছে, পরিস্থিতি দমন করতে গিয়ে ইসলামাবাদ থেকে অতিরিক্ত সেনাও মোতায়ন করা হয়েছে।
এদিকে শওকত নওয়াজ মিরের নেতৃত্বে 38 দফার দাবি তোলা হয়েছে। আর এর মধ্যে রয়েছে পরিকাঠামগত সংস্কার, দুর্নীতি রোধ আর পানীয় জলের ব্যবস্থা করা। এমনকি পাকিস্তানের বসবাসকারী কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য বিধানসভায় সংরক্ষিত 12টি আসন বাতিল করার দাবিও তোলা হয়। তবে পাক সেনাদের এই গুলি চালানো এবং দমন নীতির কারণে শেহবাজ শরীফ সরকার এখন চরম বিপাকের মুখে। ইতিমধ্যে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষের ন্যায্য দাবি দমন করতে গিয়ে সরকার নিজের আস্থা নিজেই হারাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ২০২৫ সালে দেবীর বরণ, সিঁদুর খেলা, বিসর্জন কখন হবে? জানুন বিজয়া দশমীর সময়সূচী
প্রসঙ্গত, এই উত্তেজনামূলক পরিস্থিতিতে ভারতও নজর রাখছে। সম্প্রতি মরক্কো সফরে গিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, আমাদের পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালানোর কোনওরকম প্রয়োজন নেই। কারণ ওটা আমাদেরই জমি। আর একদিন PoK এর মানুষ নিজেরাই বলবে যে, আমরা ভারতেরই অংশ। এখন এই উত্তেজনা ঠিক কতদিন চলে, সেটাই দেখার।