বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে ক্ষমতাচ্যুত হন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিষিদ্ধ হয়ে যায় তাঁর আওয়ামী লিগও। বর্তমানে ভারত সরকারের আশ্রয়ে এ দেশেই রয়েছেন তিনি। তবে ক্ষমতার সর্বস্ব হারানোর পরও মানসিক দিক থেকে রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট সক্রিয় তিনি। বিশেষ করে, বাংলাদেশের আসন্ন সাধারন নির্বাচনের আগে সক্রিয় হয়েছেন হাসিনা। এরই মাঝে শোনা যাচ্ছে, হঠাৎ ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান (Sheikh Hasina On Muhammad Yunus)।
ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ দায়ের
TV 9 এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লিগ শেখ হাসিনার পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই আবেদনে বলা হয়েছে, গত 14 মাসে বাংলাদেশে তাদের 400 জন শ্রমিককে গুলি করে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। ওই মামলায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শেখ হাসিনাও। তাঁর কথায়, ‘আমাদের লাখ লাখ সমর্থকের উপর প্রতিদিন নির্যাতন হচ্ছে। তাদের হত্যা করা হচ্ছে। অবিলম্বে বিচারের দাবি করছি।’
আওয়ামী লিগের 12 হাজার শ্রমিক জেলবন্দি
ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পরই বাংলাদেশের সমস্ত দাগি আসামি, জঙ্গি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কুখ্যাত ব্যক্তিরা জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। অভিযোগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তে আসামিরা জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই ওপার বাংলা জুড়ে বেড়েছে খুন, রাহাজানি, লুঠপাট এমনকি হিন্দু হত্যার মতো ঘটনা। এদিকে হাসিনার দল দাবি করছে, দাগি আসামিদের মুক্তি দিয়ে হাসিনা সমর্থকদের জেলবন্দি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জমা দেওয়া আওয়ামী লিগের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত 25 জন আওয়ামী লিগ কর্মীকে পুলিশের হেফাজতেই হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়াও কমপক্ষে 12 হাজার শ্রমিক এই মুহূর্তে কারাগারে রয়েছেন।
হাসিনাদের দাবি, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ইউনূসের প্রশাসন কোনও রকম চার্জশিট দাখিল করছে না। তাছাড়াও একেবারে বিনা কারণে কারাগারে আটকে রাখা আওয়ামী লিগ কর্মীরা যাতে জেল থেকে বেরোতে যা পারেন তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে ইউনূসের প্রশাসন।’ এমতাবস্থায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইউনূস এবং তার সাঙ্গপাঙ্গোদের বিরুদ্ধে হাসিনার এমন মামলায় হতবাক বাংলাদেশের অনেকেই।
অবশ্যই পড়ুন: ২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদের অভিযোগ কুণালের, মুখ খুলল কমিশন
উল্লেখ্য, হঠাৎ বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার সক্রিয় হয়ে ওঠার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে মহম্মদ ইউনূসের সরকার। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে আওয়ামী লিগের সমর্থকরা বিদ্রোহ করতে পারে।’ এর আগে শেখ হাসিনা তাঁর এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলেছিলেন, ‘আমার দল যদি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত থাকে, তবে আমার সমর্থকরা চুপ থাকবেনা।’ যদিও প্রথমবারের মতো সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসিনা নাকি সমর্থকদের ভোট বয়কট করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সাথে, এখনই যে তিনি দেশে ফিরছেন না সেটাও জানিয়েছেন। বলা বাহুল্য, আগামী বছর অর্থাৎ 2026 সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গঠিত হবে ওপার বাংলার নতুন সরকার।












