সৌভিক মুখার্জী, কলকাতাঃ ৯ মাস ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা ISS-এ আটকে থাকার পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরতে চলেছেন নাসার মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস (Sunita Williams) এবং ব্যারি উইলমোর। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। দীর্ঘ ৯ মাস মহাকাশে আটকে থেকে তারা এবার পৃথিবীতে ফিরছেন। কিন্তু এতদিন মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে ফিরে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল- আবার স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে শেখা। সুনিতা উইলিয়ামস নিজেই বলেছেন, “এখন আমি হাঁটতে পুরো ভুলে গেছি। পৃথিবীতে এসে হাঁটাটা অনেকটা কাঁটার উপর হাঁটার মতো লাগবে আমার।”
১০ দিনের মিশন, অথচ ফিরতে লেগে গেল ৯ মাস!
নাসার এই দুই মহাকাশচারী বোয়িংয়ের স্টারলাইনার স্পেসক্রাফ্টে মাত্র ১০ দিনের একটি মিশনে মহাকাশে গিয়েছিল। কিন্তু অপ্রত্যাশিত যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তারা টানা ৯ মাস মহাকাশে আটকে পড়েছিলেন। এখন অবশেষে নাসা ঘোষণা করেছে যে, আগামী ১৬ই মার্চের মধ্যে তাদের পৃথিবীতে ফেরানো হবে। এজন্য স্পেসএক্স ড্রাগন স্পেসক্রাফ্ট পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে নাসার তরফে।
মহাকাশ থেকে ফেরার পর চ্যালেঞ্জ
মহাকাশে অভিকর্ষ বল না থাকায় সেখানে হাঁটার কোন রকম দরকার পড়ে না। ফলে দীর্ঘদিন ভাসমান থাকার কারণে শরীরের পেশী এবং হাড় অনায়াসেই দুর্বল হয়ে যায়। ফলে সাময়িকভাবেই পৃথিবীতে ফিরে আসার পর শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া কয়েক সপ্তাহ ধরে পেশি ও হাড় দুর্বল থাকবে। এমনকি হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের কাজও কমে যাবে। ফলে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নেওয়াতেও সমস্যা হতে পারে। শুধু তাই নয়, মহাকাশের প্রচন্ড রশ্মির কারণে ত্বক এবং কোষেরও ক্ষতি হতে পারে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
পৃথিবীতে ফিরে আগে চিকিৎসা
পৃথিবীতে ফিরে শুরুতেই সুনীতা উইলিয়ামস বাড়ি যেতে পারবেন না। প্রথমেই তাকে পা বাড়াতে হবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। ডাক্তারের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী দেহে শক্তি ফিরে পেতে কমপক্ষে দেড় মাস সময় লাগতে পারে। বিশেষ এক্সারসাইজ এবং ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাকে পুনরায় অভিকর্ষ বলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। সূত্র বলছে, সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পরেই তাকে বাইরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ঝুঁকি
মহাকাশ থেকে ফেরার পর নতুন কোন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। কারণ মহাকাশে মানবদেহ এমন কিছু জীবাণুর সংস্পর্শে আসে যা পৃথিবীতে বিরলতর। ফলে চিকিৎসকরা তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে এই সমস্ত বিষয়গুলি খুঁটিয়ে দেখবেন।
মহাকাশে যাওয়া যেমন কঠিন, তেমনই কঠিন সেখানে দীর্ঘ সময় থাকার পর পৃথিবীতে ফিরে আসা। যা আমরা সুনিতা উইলিয়ামসদের দেখেই বুঝতে পারছি। এখন সকলের চোখ থাকবে ১৬ই মার্চের দিকে। নাসার এই দুই মহাকাশচারী কীভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ কী হয়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |