বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত নেপালের মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা 8,848 মিটার। তবে এই উচ্চতা সত্ত্বেও বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না হিমালয়ের (Glaciers) এই পর্বতমালা। জানা যাচ্ছে, প্রবল উষ্ণায়নের কারণে এভারেস্টের উচ্চতম হিমবাহ সাউথ কোল ক্রমশ গলে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, 1990 সাল থেকে আজ পর্যন্ত, ব্যাপক গলনের কারণে 58 মিটারেরও বেশি অংশ কমে এসেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, হিমবাহের এমন গলনের কারণে ভবিষ্যতে বড়সড় বিপদের মুখে পড়তে পারে নেপাল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাড় পাবে না ভারতও।
ঘনিয়ে আসছে বিরাট বিপদ
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেডেড ডেভেলপমেন্টের ক্রায়োস্ফিয়ার বিশেষজ্ঞ শারদ জোশি জানিয়েছেন, বিগত বছরগুলিতে হিমালয়ের হিমবাহ গুলি দ্রুত গলছে। এমন গলনের কারণে আগামী দিনে বিপদ অনিবার্য। জানা যাচ্ছে, হিমবাহের এমন গরমের ফলে সমুদ্রের জলস্তর বাড়বে। একই সাথে, জলের উৎসের সঙ্কটও বিরাট আকার ধারণ করতে পারে।
কেন এত দ্রুত গলে যাচ্ছে হিমবাহ?
মাউন্ট এভারেস্টের হিমবাহ অঞ্চল গুলি দ্রুত গলে যাচ্ছে বলেই দাবি করছে সমীক্ষা। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ব উষ্ণায়ন, স্থানীয় আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া অর্থাৎ প্রচন্ড শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাস হিমবাহ গুলিকে গলতে বাধ্য করছে। জানা যাচ্ছে, আবহাওয়ার এমন বৈশিষ্ট্যের কারণে বৃষ্টিপাতের ধরনও ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। ফলত, পাহাড়ের উঁচুতে অতিরিক্ত মাত্রায় বৃষ্টি ও কম তুষারপাত হচ্ছে।
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট খতিয়ে জানা গেল, 2011 থেকে 2020 সালের মধ্যে হিন্দুকুশ পর্বতমালার প্রায় 56 হাজার হিমবাহ কমপক্ষে 65 শতাংশ গলে গিয়েছে। আর এই হিসেব দেখেই মাথায় হাত পড়েছে বিজ্ঞানীদের। বিশেষজ্ঞ মহল দাবি করছে আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে হিমবাহ গুলি। জানা যাচ্ছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায়, ভবিষ্যতে 80 শতাংশ পর্যন্ত হিমবাহের গলন শুরু হয়ে যেতে পারে।
হারিয়ে যাবে একটি হিমবাহ!
সম্প্রতি, নেপালের লাংটাং উপত্যকায় অবস্থিত ইয়ালা হিমবাহের ওপর একটি বিশেষ সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, ফলাফলে দেখা গিয়েছে বিগত কয়েক বছরে ব্যাপক হারে গলছে সেই হিমবাহ। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, আগামী 20 থেকে 30 বছরের মধ্যে প্রচন্ড গরমের কারণে হিমবাহটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। অন্যান্য হিমবাহ গুলির ক্ষেত্রেও এমন অবস্থা হতে পারে।
অবশ্যই পড়ুন: ‘মুসলিম হিসেবে আমি লজ্জিত!’ পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা নিয়ে মুখ খুললেন সেলিম মার্চেন্ট
প্রভাব পড়বে ভারতেও
বিশেষজ্ঞ শারদ জোশি জানিয়েছেন, নেপালের হিমবাহ গুলির এমন গলনের বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে ভারতেও। জানিয়ে রাখি, হিমবাহ থেকেই প্রাকৃতিক রদ তৈরি হয়ে থাকে, যা সাধারণত সেচের প্রধান রসদ। অন্যদিকে হিমবাহের মুখ থেকেই তৈরি হয়, বিভিন্ন নদী। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমবাহ থেকে সৃষ্ট রদ গুলির চারিধার আটকানো থাকে। তবে আচমকা ভূমিকম্প বা ভূমিধস শুরু হলে সেগুলিকে ঠকিয়ে রাখা যাবে না। তা দ্রুত ভেঙে হড়পা বান তৈরির আশঙ্কায় রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যার কারণে প্রবল জলোচ্ছাসের জেরে ভেসে যাবে গ্রামের পর গ্রাম।
জোশির দাবি, ভারতের নদীগুলি মূলত হিমালয়ের বরফ বলা জলেপুষ্ট। তবে হিমবাহ যেভাবে গলছে, তাতে আগামী বছরগুলিতে গলনের পরিমাণ বাড়লে হিমবাহ গুলি হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে! যার জেরে ভারতের নদীগুলিও একেবারে শুকিয়ে যাবে। যার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব পড়বে ভারতের কৃষি ব্যবস্থায়। অনেকেই মনে করছেন, হিমবাহ একেবারে গলে গেলে ভারতীয় নদীগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না, যার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হবে দেশের কৃষকদের। ঘনিয়ে আসতে পারে দুর্যোগও!
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |