চীনের ঋণের জালে পড়ে ধুঁকছে এই ১০ দেশ! তালিকায় ভারতের তিন প্রতিবেশী রাষ্ট্র

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্ব রাজনীতিতে ফের হাওয়া গরম! এবার চীনের ঋণের জালে (China Debt Trap) ফেঁসেছে একের পর এক দেশ। হ্যাঁ, যখন তারা আর্থিক সংকটে পড়েছে, ঠিক তখনই তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বেজিং। তবে সেই সাহায্য যে কতটা বিষাক্ত হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সেই দেশগুলি। এমনকি তালিকায় রয়েছে ভারতের তিন প্রতিবেশী। তো চলুন সেই দেশগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানি আজকের প্রতিবেদনে।

পাকিস্তান

গত এক দশক ধরে চীনের ঋণের সবথেকে বেশি চাপের মুখে পড়েছে ভারতের এই পড়শি দেশ। রিপোর্ট বলছে, পাকিস্তানের মোট বৈদেশিক ঋণের 23% চীনের থেকে নেওয়া। আর বিশেষ করে এই ঋণের একটা বড় অংশ এসেছে চীনা-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর থেকে, যেখানে চীন 2013 সাল থেকেই 65 বিলিয়নের বেশি ডলার বিনিয়োগ করেছে।

মালদ্বীপ

ভারত মহাসাগরের বুকে এই দ্বীপ রাষ্ট্রটি চীনের ঋণের বোঝায় জর্জরিত। হ্যাঁ, ভারত বিরোধী কার্যকলাপে সম্প্রতি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে এই দেশ। আর এখন তারা চীনের থেকে বিপুল পরিমাণে ঋণ নিয়ে সংকটে ভুগছে।

লাওস

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিও চীনের ঋণের প্রভাবে জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি চীন এই দেশকে প্রচুর পরিমাণে ঋণ দিয়েছে।

মঙ্গোলিয়া

খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এই দেশটিও চীনের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে ঋণ নিয়েছে। হ্যাঁ, এমনটাই দাবি করছে বেশ কিছু সংবাদ সংস্থা।

জিবুতি ও অ্যাঙ্গোলা

পূর্ব আফ্রিকার ছোট্ট দেশটি বন্দর এবং সামরিক ঘাঁটি উন্নয়নের জন্য চীনের কাছ থেকে বিশাল পরিমাণে ঋণ নিয়েছে। যার কারণে তারা এখন ফ্যাসাদের জালে আটকে। এমনকি আফ্রিকার আরেকটি দেশ অ্যাঙ্গোলা, যারা তেল এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য চীনের কাছে ঋণের হাত পেতেছিল। তারাও এই পথে আটকা পড়েছে।

শ্রীলংকা

শ্রীলংকা চীনের ঋণের ফাঁদে আটকে পড়া সাধারণ উদাহরণ। কারণ হাম্বানটোটা বন্দরের মতো বড় পরিকাঠামো প্রকল্প চীনের বিনিয়োগ ছাড়া কোনোদিনই সম্ভব হতো না। যাতে করে শেষ পর্যন্ত তাদের অর্থনৈতিক সংকটের মুখে ভুগতে হচ্ছে।

ভেনেজুয়েলা ও কম্বোডিয়া

দক্ষিণ আফ্রিকার ভেনেজুয়ালা তাদের তেল সম্পদকে কাজে লাগাতে চীনের কাছ থেকে মোটা অংকের ঋণ নিয়েছে বলেই খবর। ফলে এখন তাদের কাছে এই ঋণ বিরাট আর্থিক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কম্বোডিয়া চীনের অবকাঠামো বিনিয়োগের অংশ হিসেবে প্রচুর পরিমাণে ঋণ নিয়েছিল, যা তাদের অর্থনীতিতে বর্তমানে চাপ চলছে।

আরও পড়ুনঃ পুশ ব্যাক করতে নয়া পদ্ধতি অসমের! ভারতের চাপে বিপাকে বাংলাদেশ

কেনিয়া

ওদিকে আফ্রিকার কেনিয়া দেশটি রেলওয়ে এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত খাতে উন্নয়নের জন্য চীনের কাছ থেকেও প্রচুর পরিমাণে ঋণ নিয়েছিল। যার কারণে তারা এখন আর্থিক সমস্যায় ধুঁকছে।

তবে সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বাংলাদেশ এই তালিকায় নেই। চীনের ঋণের ফাঁদ আসলে কূটনীতি নিয়েই বিশ্বজুড়ে বিতর্কের দানা বাঁধাচ্ছে। এখন দেখার, এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক পরিকাঠামোগত অবস্থা ভবিষ্যতে কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।