বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: নিজের দেশে মাত্রা ছাড়িয়েছে বেকারত্ব, লাফিয়ে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। কিন্তু সেসব ভুলে অন্যদের জ্ঞান দিতে পিছু পা হন না পাকিস্তান দরদী তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ এরদোয়ান। সম্প্রতি, রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ফোরামে বক্তব্য রাখার সময়, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে মুখ খোলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট (Turkey President On Kashmir)। শুধু তাই নয়, এদিন ভারতকে ইকোনমিক করিডোর নিয়েও হুঁশিয়ারি দেন এরদোয়ান।
কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ফের মুখ খুললেন এরদোয়ান
মঙ্গলবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের মঞ্চ থেকে আরও একবার কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রস্তাবনা মেনে কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান অবশ্যই হওয়া উচিত। এর জন্য ভারত এবং পাকিস্তান উভয়পক্ষের আলোচনায় বসাটা জরুরী। আমি কাশ্মীরি ভাই বোনেদের জন্য এটা চাই।
তুর্কি প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি বজায় থাকুক এটাই দেখতে চায় তুরস্ক। কিন্তু ভুললে চলবে না, গত মে মাসে অপারেশন সিঁদুরের সময় এই তুরস্কই পাকিস্তানকে ভারতের বিরুদ্ধে সব রকম অর্থশাস্ত্র, রণতরী এমনকি উন্নত ড্রোন মিসাইল দিয়ে সাহায্য করেছিল। আসলে, সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয়দাতা তুরস্কের গলায় যখন শান্তির বার্তা আসে, সেটা খানিকটা হজম করতে সমস্যা হয় বাকিদের। গতকালও তেমনটাই হয়েছে। তুর্কির এমন মন ভোলানো কথা একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না সিংহভাগই।
রাষ্ট্রসংঘ থেকেই ভারতকে হুঁশিয়ারি দিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট!
ভারত থেকে সরাসরি মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত একটি ইকোনমিক করিডোর গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও সেই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি তুরস্ককে! গতকাল তা নিয়েই ভারতের নাম না করে হুঁশিয়ারি দেন পাকিস্তান দরদী তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তাঁর কথায়, তুরস্ককে বাদ দিয়ে, প্রজাতন্ত্র সাইপ্রাসকে বাদ দিয়ে ইউরোপে কোনও প্রকল্প সফল হতে পারে না। এদিন, রিচেপের হাভভাব এবং কথাবার্তায় বোঝা গিয়েছে, ভারত এবং সাইপ্রাসের ঘনিষ্ঠতায় তিনি যথেষ্ট চিন্তিত।
#WATCH | New York | At the 80th session of UNGA, Turkish President Recep Tayyip Erdoğan says, “… We are pleased with the ceasefire achieved following the tensions last April between Pakistan and India, which had escalated into a conflict… The issue of Kashmir should be… pic.twitter.com/YqWx3l5X1C
— ANI (@ANI) September 23, 2025
অবশ্যই পড়ুন: IFA শিল্ডের আগে বৈঠকে অনুপস্থিত মোহনবাগান
উল্লেখ্য, গত জুনেই তুরস্কের শত্রু হিসেবে খ্যাত সাইপ্রাস সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই থেকেই দেশটির সাথে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে ভারতের। শুধু তাই নয়, সূত্রের দাবি, খুব শীঘ্রই এই দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। সেই প্রতিশ্রুতি নাকি গত জুনেই দিয়ে এসেছেন মোদি। তাছাড়াও সম্প্রতি ভারত থেকে অত্যাধুনিক রণতরী আইএনএস ত্রিকান্দকে পাঠানো হয়েছিল সাইপ্রাস বন্দরে। আর এইসব ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বেজায় ক্ষুব্ধ তুর্কি। ভারতের সাথে শত্রু দেশের ঘনিষ্ঠতা যে একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না সেদেশের প্রেসিডেন্ট, তা গতকালের বক্তব্য থেকেই একেবারে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।