বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও চোরের মতো রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। আর এরপরই ফের সন্ত্রাসবাদের আশ্রয়দাতাকে যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারত। সব মিলিয়ে, ভারত-পাক দ্বন্দ্ব এখন চরমে। এমতবস্থায়, মাঝে দুই দেশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছিল আমেরিকা।
তবে তাতে বিশেষ কোনও লাভ হয়নি! নিজের জাত চিনিয়েছিল পাকিস্তান। আমেরিকার পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশই ভারত-পাক যুদ্ধ আবহে নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে। তবে উল্টো পথে হেঁটেছে শুধুই তুরস্ক ও বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলি। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বের একাধিক উন্নত দেশ যেখানে জঙ্গি দমনে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে, সেই পর্বে বারংবার কেন একেবারে খোলামেলাভাবে পাকিস্তানকে সমর্থন করছে তুরস্ক (Turkiye) ?
কেন পাকিস্তানকে সমর্থন করে তুরস্ক?
ভারত-পাক সংঘাতে বারংবার পাকিস্থানের সহায় হয়েছে তুরস্ক। সে দেশে তৈরি একাধিক তুর্কি ড্রোন ও মিসাইল ব্যবহার করছে পাকিস্তানও। ভারতের সাথে চলমান যুদ্ধ আবহে এইসব ড্রোনের ব্যবহার হয়েছে বলেই খবর। কিন্তু কেন এভাবে সন্ত্রাসবাদের দেশ পাকিস্তানকে সমর্থন করছে তুরস্ক? সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেন তায়িপ এরদোয়ান জানিয়েছেন, পাকিস্তানের মানুষ আমার ভাইয়ের মতো। আমি পাকিস্তানের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করি।
ভারতের সাথে সংঘাত চরমে ওঠার আগে, তুর্কি পাকিস্তানে একাধিক সামরিক অস্ত্রশস্ত্র পাঠাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল, তবে সেই খবরকে একেবারে ভুয়ো বলে চালিয়ে দেয় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দেশটির তরফে জানানো হয়, শুধুমাত্র জ্বালানি নেওয়ার জন্যই পাকিস্তানের মাটিতে নেমেছিল তুরস্কের বিমানগুলি।
আর এই বিবৃতির কয়েক দিনের মধ্যেই পাল্টে যায় চিত্র। ভারতের সাথে সংঘাত চরমে উঠলে তুর্কি ড্রোন ব্যবহার করে একের পর এক হামলা চালাতে থাকে কাঙাল পাকিস্তান। বলা বাহুল্য, এর আগেও বহুবার পাকিস্তানের সহায় হয়ে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে একাধিক যুদ্ধজাহাজ করাচি বন্দরে পাঠিয়েছিল তুর্কি।
কাজেই তুরস্কের একাধিক পদক্ষেপের পরই পাকিস্তানকে সমর্থন করে এরদোয়ানদের লাভের অংশ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন অনেকেই। এই প্রসঙ্গে বলি, অতি সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জাহাক তানভীর জানিয়েছেন, তুরস্কের পাক সরকারকে সমর্থনের পেছনে ইসলামিক কারণ জড়িয়ে। ওই সাংবাদিক বলেন, এরদোয়ান অটোমান খিলাফত সাম্রাজ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনতে চাইছেন।
তিনি মূলত হারিয়ে যাওয়া তুরস্কের অটোমান সাম্রাজ্য ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলেই পাকিস্তানকে একেবারে খোলাখুলি সমর্থন করছেন। তাতে লাভ? আসলে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে অন্যতম পাকিস্তান। তাছাড়াও ইসলামিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অস্তিত্বের কারণ ও দেশটির ভৌগোলিক দিককে সামনে রেখে পাক সরকারকে গুরুত্ব দিচ্ছে তুরস্ক। তুরস্ক চায়, পাকিস্তানকে কাজে লাগিয়ে ফের অটোমান সাম্রাজ্য ফিরিয়ে আনতে। আর সেই কারণেই, বারংবার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্যের পাশাপাশি ইসলামী বিশ্বের মিত্র বলে উল্লেখ করে তুরস্ক।
অবশ্যই পড়ুন: ২৫ মে থেকে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক শেষ! বিরাট ঘোষণা বাংলাদেশের
মতাদর্শিক মিত্রতা
তুরস্ক কেন একেবারে খোলাখুলি ভাবে পাকিস্তানকে সমর্থন করছে? সৌদি আরবে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তালমিজ আহমেদের কাছে এমন প্রশ্ন রাখতেই তিনি বলে বসেন, পাকিস্তানের সাথে তুরস্কের মতাদর্শিক মিত্রতা আছে। এ ছাড়াও স্নায়ুযুদ্ধের সময় তুরস্ক এবং পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে কাছের বন্ধু ছিল। মূলত নিরাপত্তা বিষয়ক সহযোগিতার কারণেই পাকিস্তানের সাথে তুরস্কের ব্যক্তিগত সম্পর্ক মজবুত। প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, আমার মনে হয় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান পাকিস্তানের সাথে সখ্যতা বাড়িয়ে ইসলামিক ইস্যুগুলিতে গুরুত্ব দিতে চান। সেই কারণেই প্রায়শই কাশ্মীর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেটিকে একটি ইসলামিক ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেন তুরস্কের প্রধান।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |