প্রীতি পোদ্দার: বরাবরই সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক নানা বিষয়ে মন্তব্য করে প্রায় বিতর্কিত হয়ে থাকেন লেখিকা তথা মানবাধিকার কর্মী তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বারবার দাবি করে থাকেন যে এইমুহুর্তে বাংলাদেশে তরুণদের মগজ ধোলাই করছে ইসলামী কট্টরপন্থীরা। তাদের ভারতবিরোধী, হিন্দুবিরোধী, পাকিস্তানপন্থী এবং জিহাদিতে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। কাজেই, খুব তাড়াতাড়ি বাংলাদেশ আরও একটা আফগানিস্তানে পরিণত হতে পারে। এমনকি কিছুদিন আগে ছাত্রদের কোটা বাতিলের আন্দোলনকে তিনি মৌলবাদীদের চক্রান্ত হিসেবে বর্ণনা করে এসেছেন। আর এই আবহেই এক ভয়ংকর পোস্ট করে বসলেন তসলিমা নাসরিন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর সেখানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে, যার প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। আর নতুন সরকার গঠনের পরেই সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নানা অত্যাচার চলছে। আর কিছুদিন পরেই পুজো। সবজায়গায় এখন মায়ের আগমনের পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু সেই আনন্দের এক চিলতে ভাগও পাচ্ছে না বাংলাদেশের হিন্দুরা। সবসময়ই মুসলিমদের অত্যাচারে ভীত-সন্ত্রস্ত। মন্দির থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় ভগবানের মূর্তি ভাঙার খবর উঠে আসছে শিরোনামে। সঙ্গে পুজো আয়োজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় উদ্যোক্তাদেরকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে আদেও বাংলাদেশে সুষ্ঠভাবে দুর্গাপুজো সম্ভব হবে কি? কিন্তু ভয় ধরাচ্ছে লেখিকা তসলিমা নাসরিন এর পোস্ট।
তসলিমা নাসরিনের পোস্ট !
লেখিকার পোস্টে দেখা যায় দেবীর মূর্তি ভাঙার ছবি। দাবি করা হয়েছে যে, ‘পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেও শেষ রক্ষা হল না, রাতের আঁধারে ঢাকা জেলার ধামরাই থানার দক্ষিণ পাড়া সার্বজনীন কালী মন্দিরে কার্তিক ও দুর্গা প্রতিমার হাত এবং গণেশ প্রতিমার শুঁড় ভাংচুর।’ এই পোস্টটি গতকাল ৪ অক্টোবর মধ্যরাতে করা হয়েছিল। সেখানে ক্যাপশনে লেখেন, ‘যে মুসলমানদের মূর্তি পাহারা দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল, তারাই এসে মূর্তি ভেঙ্গে যাচ্ছে।’ এছাড়াও তাঁর আরেকটি পোস্টে দেখা যায় বাকেরগঞ্জ বরিশালের শ্যামপুরের একটি বাড়িতে দুর্গা ঠাকুর থেকে কার্তিক, কারওই মাথা নেই ধরের সঙ্গে। ছত্রভঙ্গ হয়ে রয়েছে গোটা জায়গাটা।
৫ লক্ষ টাকার হুমকি চিঠি
এছাড়াও বেশ কয়েকটি হিন্দু পরিবারে হুমকি চিঠিও এসেছিল। যেখানে জানানো হয়েছিল যে দুর্গাপুজো আয়োজন করতে চাইলে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, এও বলা হয়েছে যে এই চিঠির ব্যাপার প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ বা গণমাধ্যমের কাছে জানালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন শেখ হাসিনার সরকারের সময় থেকেও খারাপ হতে চলেছে।