ভারত হয়ে ৩৬ দেশে রপ্তানি, দিল্লি বেঁকে বসায় বিপুল ক্ষতির মুখে বাংলাদেশের বস্ত্র ব্যবসা

Published on:

india bangladesh border

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বস্ত্রশিল্পে আবারো বড়সড় ধাক্কা খেলো ইউনূসের দেশ (Bangladesh)। হ্যাঁ, গত ১৫ মাসে ভারতীয় রোড ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ব্যবহার করে বাংলাদেশ প্রায় ৫৬৪০ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি করেছিল ৩৬টি দেশে। কিন্তু হঠাৎ করেই ভারত এই সুবিধা দেওয়ার ইতি টানে। আর এর ফলে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে পড়শী দেশের পোশাক খাত।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

কীভাবে রপ্তানি হচ্ছিল?

২০২০ সালের ২৯শে জুন ভারত “Ease of Doing Business” এর উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। আর এই সুবিধা পেয়ে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশি পণ্য খুব সহজেই কলকাতার দমদম বিমানবন্দর এবং বিভিন্ন সমুদ্র বন্দর দিয়ে অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা হত। এতে সময়ও বাঁচত, সাথে খরচও হত কম।

তবে ২০২৫ সালের ৯ই এপ্রিল হঠাৎই ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (CBIC) এই সুবিধা বন্ধের পথে হাঁটে। জানলে অবাক হবেন, এর ফলে চারটি পণ্য বোঝাই ট্রাক যেগুলিকে স্পেনে পাঠানো হচ্ছিল, সেগুলিকে কার্যত  বেনাপোল বর্ডারে আটকে দেওয়া হয়। শেষমেষ তারা পণ্য ফেরত পাঠাতে বাধ্য হয়।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

পরিসংখ্যান কী বলছে?

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (BGMEA) সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, গত ১৫ মাস ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে প্রায় ৩৪,৯০৯ মেট্রিক টন পোশাক দ্বারা বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেছে। যার বাজার মূল্য দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৬৪০ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি মাসে তারা গড়ে ৩৭৬ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে।

সূত্র বলছে, ২০১৮ সাল থেকে এই সুবিধার পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু করা হয়। আর এই সময়ে ৬২৪টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৯৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পণ্য রপ্তানি করে। যার মধ্যে ৯৭% প্রতিষ্ঠানই ছিল বস্ত্র খাত।

কলকাতার থেকে ঢাকা সুবিধা নাকি দুর্ভোগ?

কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করতে প্রতি কেজিতে ৫০ সেন্ট থেকে ১ ডলার পর্যন্ত খরচ করতে হত। তবে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের ভিড় এড়িয়ে দ্রুত ডেলিভারি করা কার্যত দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। আর এখন ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৭৩০টি অতিরিক্ত ফ্লাইট লাগবে পণ্য পরিবহন করার জন্য। যা খরচ তো বাড়াবেই, পাশাপাশি সিডিউলের উপরেও বড়সড় প্রভাব ফেলবে।

পণ্যগুলি কোথায় রপ্তানি হত?

বেশ কিছু সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এই ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশ যে সমস্ত দেশে পোশাক পাঠিয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ড, চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ আরো বিভিন্ন দেশ।

কী ধরনের পোশাক রপ্তানি হত?

সূত্র খতিয়ে জানা যাচ্ছে, এই দেশগুলিতে রপ্তানি করা হয়েছে মূলত মেয়েদের ব্লাউজ, প্যান্ট, স্কার্ট, অন্তর্ভাস, ট্রাকসুট, কোর্ট, কটন ও সিনথেটিকের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পোশাক। এমনকি পুরুষ, মহিলা ও শিশু প্রত্যেকের জন্যই এই পোশাকগুলি রপ্তানি করা হত।

আরও পড়ুনঃ ISL-র সেরা ফুটবলার কে? কে পেল গোল্ডেন বুট? দেখুন তালিকায় মোহনবাগানের কজন

তবে বর্তমানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন জানিয়েছেন, “এই সমস্যা খুব বেশি দূর গড়াবে না। আমাদের সক্ষমতা দিয়ে আমরা দ্রুত এই জাল কাটিয়ে উঠবো।” তিনি আরো জানান, ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টন পণ্য রপ্তানি হত।”

এখন বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয় সেটা সময়েই বলা যাবে। তবে যদি বিকল্প পথ তারা খুঁজে না পায়, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখা দায় হয়ে পড়বে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group