প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত প্রত্যেকটি এলাকার বাসিন্দাদের সঠিক পরিষেবা প্রদান করার জন্য একের পর এক নয়া উদ্যোগ নিয়েই চলেছে। নতুন নিকাশি নালা থেকে শুরু করে রাস্তা সংস্কার কোনো কিছুতেই কার্পণ্য করছে না। আর এই উদারতার মাঝেই এবার বড়সড় চাপের মুখে পড়ল কলকাতা পুরসভা। দেনার দায় পড়ল ৯০০ কোটিতে।
দেনার দায়ে বিরাট চাপে কলকাতা পুরসভা
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ২০২১ সালের পর থেকে পুরসভার আয় অনেকটা বেড়েছে। তার জেরে দেনার পরিমাণ কমে ৪০০ কোটিতে নেমে এসেছিল। কিন্তু চলতি বছরে সম্পত্তি কর, বিল্ডিং, লাইসেন্স, পার্কিং, মার্কেট, জঞ্জাল সাফাই এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নানা বিভাগের আয় একদম বাড়েনি। আর তার ফলেই রাজস্ব আয় অনেকটা ধাক্কা খেয়েছে। পাওনাদারদের টাকা মেটাতে রীতিমত ব্যাপক চাপের মুখে পরে গেছে পুরসভার অর্থ বিভাগ। হিসাব করে দেখা গিয়েছে, ২০২২ সালের ১ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুরসভাকে ৮৯৪ কোটি টাকা দিতে হবে পাওনাদারদের।
প্রতি অর্থবর্ষের আর্থিক দেনার সংখ্যা
কলকাতা পুরসভার কর্মরত এক সদস্যের থেকে জন্য গিয়েছে, ‘গত বছর পর্যন্তও এতটা বেশি ছিল না আর্থিক বোঝা। তবে এই বছর আর্থিক সমস্যা এতটাই বেড়েছে যে কোনো কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। নানা প্রকল্পের খরচের বিল যতটা সম্ভব মেটানো হয়েছে। তবে অনেকটা বাকি পড়ে আছে। আগামী নভেম্বর মাস থেকে আবার সম্পত্তি কর এবং অন্যান্য খাতে রাজস্ব আয় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।” এছাড়াও পরিসংখ্যান সূত্রে জানা গিয়েছে ২০২২–২৩ অর্থবর্ষে কলকাতা পুরসভার ওপর ৩৯৭ কোটি টাকা আর্থিক বোঝা বেড়েছিল। আবার পরের অর্থবর্ষে ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে আর্থিক বোঝা দাঁড়িয়েছিল ৪৭২ কোটি টাকা। কিন্তু এর ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত আর্থিক বোঝা অগস্ট পর্যন্ত ২৫ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসে মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুরবোর্ড গঠনের সময় একটি প্রেস কনফারেন্সে জানিয়েছিলেন, “৭০০ কোটি টাকার দায়ভার নিয়ে এই দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার রোজগার বৃদ্ধি করে বিষয়টির মোকাবিলা করাই হবে আমাদের কাজ।” বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের তরফে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার কাছে এখন দুটি উপায়ে এই দেনা শোধ করা যাবে। একটি হল রাজস্ব আয় বাড়ানো। এবং অন্যদিকে আরও একটি উপায় হল রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্য নেওয়া।