সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আজকের দিনে ব্যাংকে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা সহজ। কিন্তু সঠিকভাবে সেটিকে বজায় রাখা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ন্যূনতম ব্যালেন্স না থাকলেই গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের জরিমানা (Bank Charges)। এক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের ১১টি বেসরকারি ব্যাংক এই জরিমানার মাধ্যমেই প্রায় ২৩৩১ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। আর এই এত বড় টাকার অঙ্ক সাধারণ গ্রাহকদের পকেট থেকেই যাচ্ছে। এখন স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মনে প্রশ্ন আসছে, এত টাকা কেন জরিমানা করা হচ্ছে? আর এই টাকা কোথায় যাচ্ছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
গোপনে কাটছে টাকা!
এই বিষয়টি সম্প্রতি রাজ্যসভায় উত্থাপন করেছেন আম আদমি পার্টির এক সাংসদ। তিনি অভিযোগ তুলেছেন, ব্যাংকগুলি গ্রাহকদের না জানিয়েই বিভিন্ন রকম চার্জ কেটে নিচ্ছে। যেমন ন্যূনতম ব্যালেন্সের জন্য চার্জ কাটা হচ্ছে। পাশাপাশি ATM ব্যবহারের জন্যও বাড়তি চার্জ কাটা হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ইনঅ্যাক্টিভিটি ফি এবং SMS এলার্টের জন্য অতিরিক্ত চার্জ কাটা হচ্ছে।
কোন ব্যাংক থেকে কত জরিমানা আদায় করা হয়েছে?
২০২৩-২৪ অর্থবছরের পরিসংখ্যান বলছে, সবথেকে বেশি জরিমানা করা হয়েছে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের (PNB) গ্রাহকদের থেকে। এই ব্যাংক থেকে মোট ৬৩৩.৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, যেখান থেকে ৩৮৬.৫১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ডিয়ান ব্যাংক, যেখান থেকে ৩৬৯.১৬ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলছে, গত তিন বছরে ১১টি সরকারি ব্যাংক মোট ৫৪১৪ কোটি টাকা কেবল নূন্যতম ব্যালেন্স না রাখার জন্যই জরিমানা কেটেছে।
RBI-এর নিয়ম কী বলছে?
আমরা যদি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের (RBI) নিয়ম সম্পর্কে একটু ঘেঁটে দেখি তাহলে দেখতে পাব, সেখানে স্পষ্ট বলা রয়েছে, গ্রাহককে ব্যাংকের নিয়ম আগেভাগেই জানাতে হবে। নূন্যতম ব্যালেন্সের কম ব্যালেন্স থাকলে প্রথমেই নোটিশ দিতে হবে। এছাড়া একমাস সময় দিতে হবে। তার আগে জরিমানা নেওয়া যাবে না। এমনকি জরিমানা নিতে গিয়ে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নেগেটিভ ব্যাল্যান্সে নামিয়ে আনা যাবে না। তবে সুখবর হচ্ছে, দেশের সবথেকে বড় ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI) ২০২০ সাল থেকেই ন্যূনতম ব্যালেন্সের জন্য কোন চার্জ নেয় না।
কীভাবে এই চার্জ থেকে মুক্তি পাবেন?
যদি আপনি অ্যাকাউন্টের ন্যূনতম ব্যালেন্সের চার্জ এড়াতে চান, তাহলে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। প্রথমত, জনধন অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এখানে নূন্যতম ব্যালেন্সের কোন প্রয়োজন নেই। এছাড়া স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ব্যালেন্স রাখার দরকার পড়ে না। পাশাপাশি জিরো ব্যালেন্সের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন। কারণ কিছু ব্যাংক এই পরিষেবা দিয়ে থাকে, যেখানে ন্যূনতম ব্যালেন্স রাখার কোন ঝামেলা নেই।
আরও পড়ুনঃ ‘চাল চোর’ পাকিস্তান! হাতেনাতে ধরল ভারত, চরম বেইজ্জত প্রতিবেশী দেশ
ব্যাংকগুলির মূল দায়িত্ব হল গ্রাহকদের সুরক্ষা এবং সুবিধা প্রদান করা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বলছে, তারা উল্টে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আপনাদের কি মনে হয়? এই নিয়ম কি যথাযথ, নাকি এই নিয়ম বদলানো উচিত?
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |