সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে ব্যাঙ্কগুলি তাদের ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। হ্যাঁ, সেরকম একটা মিলছে না। তবে যারা নিশ্চিত বা ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ (Investment) করতে চান এবং মোটা অঙ্কের ফান্ড গড়ে তুলতে চান, তাদের জন্য পোস্ট অফিসের কিষাণ বিকাশ পত্র (Kisan Vikas Patra) হতে পারে সেরা বিকল্প। কারণ, এই স্কিমে বর্তমানে 7.5% হারে সুদ দেওয়া হয়। ফলে মাত্র 115 মাসেই টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে।
কী এই কিষান বিকাশ পত্র স্কিম?
কিষান বিকাশ পত্র স্কিম হলে ভারত সরকারের একটি নিশ্চিত বিনিয়োগের প্রকল্প। হ্যাঁ, মূলত কৃষকদের লক্ষ্য করেই এই প্রকল্প চালু করা। তবে এখন এই স্কিমে দেশের যেকোনো নাগরিকই বিনিয়োগ করতে পারে। আর এই স্কিমের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য, নির্দিষ্ট সময় পর এখানে টাকা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এমনকি এখানে রিটার্নের নিশ্চয়তা ১০০%।
জানা যাচ্ছে, বর্তমানে KVP স্কিমে 7.5% হারে বার্ষিক সুদ দেওয়া হয়। আর মাত্র 115 মাস বা 9 বছর 7 মাসে টাকা দ্বিগুণ হয়ে যায়। অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলি যেখানে 5 বছরের এফডিতে মাত্র 6.5% থেকে 7.15% হারে সুদ দিয়ে টাকা দ্বিগুণ করাচ্ছে 10 বছরের বেশি সময় ধরে, সেখানে এই স্কিম অনেকটাই এগিয়ে।
কারা বিনিয়োগ করতে পারবেন এই স্কিমে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এই স্কিমে বিনিয়োগ করতে গেলে 18 বছর বয়স হতে হয়। এমনকি যে কেউ একক বা যৌথভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্করাও এখানে বিনিয়োগ করতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে অভিভাবক দরকার হয়। কিন্তু জানিয়ে রাখি, হিন্দু অখন্ড পরিবার বা এনআরআই’রা এই স্কিমে বিনিয়োগ করতে পারবে না।
কত টাকা পাওয়া যায়?
জানা যাচ্ছে, এই স্কিমের সার্টিফিকেট বাবদ 1000 টাকা, 5000 টাকা, 10,000 টাকা এবং 50,000 টাকা পাওয়া যায়। তবে যত খুশি পরিমাণে বিনিয়োগ করা যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, এই স্কিমে Section 80C-র আওতায় কর ছাড় পাওয়া যায় না। সুতরাং সুদের উপর অতিরিক্ত কর প্রযোজ্য হবে।
কী কী ডকুমেন্ট লাগবে?
পোস্ট অফিসের কিষান বিকাশ পত্র স্কিমে বিনিয়োগ করতে গেলে অবশ্যই আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, জন্ম সার্টিফিকেট, ঠিকানার প্রমাণপত্র এবং KVP ফর্ম নিজের সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে পূরণ করে জমা দিতে হবে।
কীভাবে খুলবেন অ্যাকাউন্ট?
এই স্কিমের অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে নিকটবর্তী কোনও পোস্ট অফিসে গিয়ে KVP ফর্ম পূরণ করতে হবে। এমনকি অনলাইনে গিয়েও জমা দিতে পারেন। তবে ফর্মে নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, নমিনির নাম স্পষ্টভাবে লিখতে হবে। বলে রাখি, আপনি চেক বা ক্যাশের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে পারেন।
তবে চেক দিয়ে টাকা জমা দিলে অবশ্যই চেক নম্বর ফর্মে উল্লেখ করতে হবে। এমনকি একক নাকি যৌথ অ্যাকাউন্ট খুলছেন, সেটাও ফর্মে উল্লেখ করতে হবে। আর ফর্ম জমা দেওয়ার পর আপনাকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে, যেখানে বিনিয়োগকারির নাম, ম্যাচিউরিটি তারিখ এবং ম্যাচিউরিটি অ্যামাউন্ট বিস্তারিত দেওয়া থাকবে।
বলে রাখি, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কিষাণ বিকাশ পত্র স্কিমের অ্যাকাউন্ট স্থানান্তরও করা যায়। যেমন- অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের যদি মৃত্যু হয়, তাহলে তার নমিনি বা আইনত উত্তরাধিকারীর নামে অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার করে নেওয়া যায়। এমনকি যৌথ অ্যাকাউন্টের কোনও একজনের মৃত্যু হলে অ্যাকাউন্ট স্থানান্তর করা একজনের নামে করে নেওয়া যেতে পারে।