প্রীতি পোদ্দার, লখনউ: বেকারত্বের জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে রীতিমত দিশেহারা হয়ে উঠেছে দেশের নিম্নবর্গের মানুষেরা। কেউ দিন মজুরির কাজ করে সংসারের হাল ধরেছে তো কেউ আবার সবজি বিক্রি করে। আর এই কাজে কারোর অতি কষ্টে দুবেলা অন্ন জুটছে তো কারোর আবার এক বেলা অন্ন জোটাতে গিয়ে নাকানি চুবানি খেতে হচ্ছে। অর্থাৎ বলতে গেলে সারাদিনে দু’টাকা রোজগার করতে কালঘাম ফেলতে হচ্ছে সকলকে। আর এই আবহে আয়কর বিভাগের কীর্তিতে মাথায় হাত দেশের দুই রাজ্যের দুই ছোট ব্যবসায়ীর পরিবারের। সম্প্রতি সংস্থা মারফৎ তাঁদের বাড়িতে যে সরকারি নোটিস এসেছে সেখানে বলা হয়েছে, কোটি কোটি টাকার জিএসটি (GST) বাকি রয়েছে তাঁদের নামে। যা পরিশোধ না করলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের দামো জেলার ডিম বিক্রেতা হলেন প্রিন্স সুমন। ঠেলাগাড়িতে করে প্রতিদিন ডিম বেচতে বেড়ান। কোনও রকমে ডিম বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। আর্থিক চাপ এইভাবেই পরিবারকে নিয়ে দিন কাটে তাঁর। আর এই আবহে সম্প্রতি আয়কর দপ্তর থেকে তিনি GST নোটিস পান। যেখানে লেখা রয়েছে দিল্লিতে তাঁর নামে একটি কোম্পানি নথিভুক্ত করা রয়েছে। এবং সেই সংস্থার নাম প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ। চামড়া, কাঠ এবং লৌহদ্রব্যের ব্যবসা করে সংস্থাটি। অভিযোগ উঠছে, দুবছর ধরে নাকি ওই সংস্থা GST বিল মেটায়নি। এদিকে ওই কোম্পানির বার্ষিক ব্যবসা ৫০ কোটি টাকার। তাই প্রিন্স সুমন এর বিরুদ্ধে নোটিশ এসেছে ৬ কোটি টাকার বকেয়া জিএসটি মেটানোর। আর এই খবর জানতে পেরে রীতিমত মাথায় বজ্রাঘাত হল সুমনের।
নোটিস গিয়েছে এক জুস বিক্রেতার কাছে
শুধু সুমন নয় এই একই কাণ্ড ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। সম্প্রতি সেখানকার আলিগড়ের এক জুস বিক্রেতা মহম্মদ হরিস এর নামে ৭ কোটি টাকার বকেয়া জিএসটি-র নোটিস এসেছে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে মহম্মদ হরিস বলছেন যে, “সামান্য ফলের রস বেচে কোনো রকমে সংসার চলে। জানি না কেন এই নোটিস পেলাম। আশা করি সরকার পুরো বিষয়টা ভালো করে যাচাই করে দেখবে।” তবে অনুমান করা হচ্ছে এই দুই ঘটনায় সুমন এবং হরিসের তথ্য গোপনে কেউ অপব্যবহার করেছে। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে আয়কর দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে। যদিও পুলিশের কাছে ইতিমধ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন হরিস।
আরও পড়ুনঃ ঘরে বসেই ক্যানসেল করা যাবে কাউন্টার থেকে কেনা ট্রেনের টিকিট, পদ্ধতি জানালেন রেলমন্ত্রী
এর আগে চলতি মাসে তেলাঙ্গানার ভাণ্ডারি কোঠাগুদেম জেলার চন্দ্রগুণ্ডার বাসিন্দা জনপতি ভেঙ্কটেশ্বরালুর কাছে ২২ লাখ ৮৬ হাজারেরও বেশি টাকার GST নোটিস এসেছিল। পেশে তিনি একজন দিনমজুর। দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারের বিরুদ্ধে এই হেন নোটিস সত্যিই অবাক করে তুলেছিল সকলকে। অভিযোগ উঠেছিল ২০২২ সাল থেকে ভাগ্যলক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ নামে সংস্থার মালিক হিসেবে নাকি উঠে এসেছিল জনপতি ভেঙ্কটেশ্বরালুর নাম। শেষে দেখা গিয়েছিল এই নামের কোনো কোম্পানি নেই।
রাজ্য রাজনীতি, বিনোদন থেকে শুরু করে খেলা সংক্রান্ত নানা ধরনের খবরের লেটেস্ট আপডেট পেতে এখনই ফলো করুন আমাদের India Hood Bangla কে।