বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: স্টক মার্কেটের বাজারেও প্রতিবছর গ্রাহকের সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারতীয় পোস্ট অফিস (Indian Post Office)। মূলত নিত্য নতুন স্কিম ও আকর্ষণীয় অফারের কারণেই বিভিন্ন নামজাদা সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক গুলিকে দূরে সরিয়ে ভারতীয় পোস্ট অফিসে বিনিয়োগ করেন গ্রাহকরা।
কিন্তু যদি আচমকা পোস্ট অফিসের একজন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার বা বিনিয়োগকারীর মৃত্যু হয়, সেক্ষেত্রে তাঁর খাতায় সঞ্চিত অর্থ কীভাবে তোলা যাবে? স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্ন থাকে অনেকেরই। সে ক্ষেত্রে বলি, ভারতীয় ডাকঘরে মৃত ব্যক্তির সঞ্চিত অর্থ তোলার মূলত দুটি প্রক্রিয়া রয়েছে। একটি হল নমিনির মাধ্যমে এবং অপরটি একেবারে ভিন্ন উপায়ে। কেমন উপায়? জেনে নিন বিস্তারিত।
কীভাবে মৃত ব্যক্তির অর্থ দাবি করবেন?
ভারতীয় পোস্ট অফিসে অর্থ জমিয়েছেন এমন কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পর সাধারণত ওই মৃত ব্যক্তির মনোনীত অধিকারী যেকোনও ব্যক্তি জমানো আমানতের দাবিদার হয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে বলি, যদি কেউ নমিনি হিসেবে অর্থ দাবি করতে চান সেক্ষেত্রে মূলত কয়েকটি উপায় রয়েছে। প্রথমটি হল, মৃত ব্যক্তি যাঁকে নমিনি করে গিয়েছেন তিনি ওই অর্থের দাবি করতে পারবেন পোস্ট অফিসে।
তাছাড়াও আরও দুই উপায়ে রয়েছে। মূলত আইনি প্রমাণ অর্থাৎ উইল বা উত্তরাধিকার শংসাপত্র দেখিয়ে ওই জমানো অর্থের দাবি করা সম্ভব। পাশাপাশি নমিনি না থাকলেও একজন ব্যক্তি হলফনামা এবং ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত নথিপত্র দেখিয়ে সঞ্চিত অর্থের দাবিদার হয়ে উঠতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যক্তির দাবি নিষ্পত্তির জন্য উত্তরাধিকার সার্টিফিকেট থাকা বাধ্যতামূলক।
দাবি জানানোর ঠিকানা ও প্রক্রিয়া
ভারতীয় পোস্ট অফিসের মৃত অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের মনোনীত ব্যক্তি অর্থাৎ নমিনি পোস্ট অফিসের ওয়েবসাইট মারফত তাঁর হকের অর্থ দাবি করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে পোস্ট অফিস সঞ্জয় প্রকল্পের জন্য SB-84 ফর্ম পূরণ করতে হবে। এছাড়াও মৃত ব্যক্তির ডেড সার্টিফিকেট, নমিনির আধার, প্যান কার্ড, ঠিকানার প্রমাণপত্র ও সম্প্রতি তোলা ছবি জমা দিতে হবে। এক কথায়, অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের মৃত্যু হলেও নমিনিকে প্রমাণ করতে হবে তিনি আসলে মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী।
আইনি প্রমাণের মাধ্যমে কীভাবে দাবি করবেন?
নমিনি উত্তরাধিকারী মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া উইলের মাধ্যমে প্রাপ্য অর্থ দাবি করতে পারেন আইনি প্রমাণপত্র দেখিয়ে। এর জন্য দাবির ফর্ম, ডেথ সার্টিফিকেটের মূল কপি অথবা জেরক্স কপি, উইলের প্রমাণপত্র, উত্তরাধিকার সার্টিফিকেট ও আইনি প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। একই সঙ্গে, মৃত ব্যক্তির অর্থ পেতে হলে যিনি দাবি করছেন অর্থাৎ দাবিদারের কেওয়াইসি ও দাবির ফর্ম জমা দিতে হবে। ভারতীয় পোস্ট অফিসের নিয়ম অনুযায়ী, দাবিদারের যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখার পর আইনি পদ্ধতিতে উত্তরাধিকারীকে প্রাপ্য অর্থ দেওয়া হবে।
অবশ্যই পড়ুন: সাঁতরাগাছিতে সিগনাল বিভ্রাট, বাতিল একাধিক লোকাল-এক্সপ্রেস ট্রেন! হাওড়ায় নামল র্যাফ
নমিনি না হলেও করা যায় দাবি
নমিনি না হলেও আমানতকারীর সঞ্চিত অর্থের দাবি করতে পারেন তাঁর আত্মীয় বা ছেলেমেয়েরা। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ওই মৃত বিনিয়োগকারীর মৃত্যুর তারিখ থেকে 6 মাস পর মৃত ব্যক্তির ডেথ সার্টিফিকেট, কেওয়াইসি ও উত্তরাধিকার প্রমাণ পত্র সহ পোস্ট অফিসের তরফে চাওয়া অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিয়ে তা যাচাইয়ের মাধ্যমে টাকা পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে নমিনি না হলে একজন ব্যক্তি 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাবি করতে পারেন বলেই খবর।