শ্বেতা মিত্র, কলকাতা: সংসার খরচ কিংবা হাত খরচের জন্য স্ত্রীকে মোটা টাকা দেন তাহলে আপনার জন্য রইল জরুরি খবর। আপনারও যদি স্ত্রীকে টাকা দেওয়া অভ্যাস হয়ে থাকে প্রতি মাসে তাহলে জেনে রাখুন, আপনিও কিন্তু আয়কর দফতরের (Income Tax Department) নজরে চলে আসতে পারেন। নিয়ম অনুযায়ী, আপনার ঘরেও পৌঁছে যেতে পারে নোটিশ। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন। আরও বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
আয়করের নিয়ম | Income Tax Rules |
আয়কর নিয়ম অনুসারে, স্ত্রীকে দেওয়া টাকা আপনার আয়ের একটি অংশ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে এবং এর ফলে আইটি নোটিশ জারি হতে পারে। অনেকেই এই নিয়ম সম্পর্কে অবগত নন এবং পরে সমস্যায় পড়তে পারেন। আসুন জেনে নিই আয়কর আইন এ সম্পর্কে কী বলে এবং এটি এড়াতে আপনার কী করা উচিত?
আপনাকে আয়কর আইনের কিছু বিশেষ নিয়ম মনে রাখতে হবে। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নগদ লেনদেন সাধারণ, আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে নগদ বা টাকা দেন, তাহলে কিছু পরিস্থিতিতে আপনি আয়কর নোটিশ পেতে পারেন। ভারতীয় আয়কর আইনের নিয়ম অনুসারে ধারা 269SS এবং 269T অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, যদি একজন স্বামী তার স্ত্রীকে সংসার খরচের জন্য বা উপহার হিসেবে নগদ টাকা দেন, তাহলে তার উপর কোনও কর দায় নেই। এই পরিমাণ স্বামীর আয় হিসেবে বিবেচিত হয় এবং স্ত্রীর উপর কোনও কর আরোপ করা হয় না। কিন্তু যদি স্ত্রী এই টাকা বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করেন যেমন ফিক্সড ডিপোজিট, শেয়ার বাজার বা সম্পত্তি কেনা এবং তা থেকে পরে আয় করেন, তাহলে এই আয়ের উপর কর দিতে হবে।
ধারা 269SS এবং 269T কী?
কালো টাকা রোধ করার জন্য ধারা 269SS এবং 269T এর মাধ্যমে নগদ লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ধারা 269SS: ২০,০০০ টাকার বেশি নগদ অর্থ ঋণ, আমানত বা অগ্রিম অর্থ প্রদান হিসাবে গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। যদি স্বামী তার স্ত্রীকে নগদ ২০,০০০ টাকার বেশি দেন, তাহলে তা ব্যাংকিং মোডের মাধ্যমে (যেমন চেক, এনইএফটি, আরটিজিএস) করা বাধ্যতামূলক।
ধারা 269T: যদি ধার করা পরিমাণ ২০,০০০ এর বেশি হয় এবং তা পরিশোধ করার প্রয়োজন হয়, তাহলে তাও ব্যাংকিং মোডের মাধ্যমে করতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর মতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রে, এই ধারাগুলি লঙ্ঘনের জন্য কোনও শাস্তি নেই, তবে স্বচ্ছতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
স্ত্রীকে দেওয়া টাকার ক্ষেত্রে কী কী নিয়ম প্রযোজ্য জানুন
পারিবারিক খরচের জন্য
স্বামী তার স্ত্রীকে পারিবারিক খরচের জন্য যেকোনো পরিমাণ অর্থ টাকা দিতে পারেন। এর উপর কোনও কর দায় নেই এবং এটি স্বামীর আয়ের একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিনিয়োগের জন্য
যদি স্ত্রী স্বামীর দেওয়া অর্থ দিয়ে কোনও বিনিয়োগ করেন, যেমন ফিক্সড ডিপোজিট, স্টক মার্কেট বা সম্পত্তি কেনা, তাহলে তা থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপর কর দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি স্ত্রীর বিনিয়োগ থেকে ১,০০,০০০ আয় হয়, তাহলে তা স্বামীর আয়ের সঙ্গে যোগ হবে এবং কর ধার্য করা হবে।
ভাড়া থেকে আয়
যদি স্ত্রীকে দেওয়া টাকা দিয়ে সম্পত্তি কেনা হয় এবং তা থেকে ভাড়া নেওয়া হয়, তাহলে এই ভাড়া স্ত্রীর আয় হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এর উপর কর ধার্য করা হবে।
যদি স্বামী তার স্ত্রীকে উপহার হিসেবে টাকা দেন, তাহলে তা করযোগ্য নয়। আয়কর আইন অনুসারে, স্বামী এবং স্ত্রীকে নিকটাত্মীয় হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় এবং উপহারের উপর কর ছাড় দেওয়া হয়।
কীভাবে আয়কর নোটিশ এড়াবেন জানুন
১) ২০,০০০ টাকার বেশি নগদ লেনদেন করবেন না।
২) ব্যাংকিং মাধ্যম (চেক, এনইএফটি, আরটিজিএস) ব্যবহার করুন।
৩) স্ত্রীর করা বিনিয়োগ এবং তা থেকে প্রাপ্ত আয় আয়কর রিটার্নে (ITR) সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা উচিত।
৪) যদি স্ত্রী সম্পত্তি, এফডি বা অন্যান্য বিনিয়োগ করে থাকেন, তাহলে তার আয়ের উপর সময়মতো কর প্রদান করুন।
আরও পড়ুনঃ পোয়া বারো সরকারি কর্মীদের, বকেয়া মেটাতে ১৪,০০০ কোটি টাকা মঞ্জুর! মিলবে DA, DR
বাড়িতে কখন ট্যাক্স নোটিশ আসতে পারে?
যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নগদ লেনদেনে স্বচ্ছতা না থাকে, অথবা স্ত্রী সেই পরিমাণ থেকে অর্জিত আয় প্রকাশ না করে থাকেন, তাহলে আয়কর বিভাগ নোটিশ জারি করতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |