সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দেশের সবথেকে বড় বীমা সংস্থা LIC-র শেয়ার বিক্রির (LIC Share Sale) পথে হাঁটছে সরকার। বেশ কিছু সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে LIC-র 6.5% শেয়ার বিক্রি হতে চলেছে। তবে না, এক সঙ্গে নয়। বরং ছোট ছোট কিস্তিতে এই শেয়ার বিক্রি করা হবে বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বেশ কয়েকটি সূত্র দাবি করছে, এই শেয়ার বিক্রির মূল লক্ষ্য শুধুমাত্র রাজস্ব আদায় করা নয়, বরং বাজারের সরকারি সংস্থাগুলির অংশীদারিত্ব আরও বাড়িয়ে তোলা। এমনকি SEBI-র নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী নূন্যতম পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং-এর নিয়ম মেনে চলার জন্যই এই শেয়ার বিক্রির পথে হাঁটছে কেন্দ্র সরকার।
কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?
SEBI-র নিয়ম অনুযায়ী, যেকোনো কোম্পানির 25 শতাংশ শেয়ার অন্তত জনসাধারণের কাছে থাকতে হবে। বেশিরভাগ কেন্দ্র সরকার পরিচালিত পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজ এই শর্ত পূরণ করে। তবে এখনও এমন কিছু সংস্থা রয়েছে, যারা এই শর্ত মানতে নারাজ। বিশেষ করে প্রতিরক্ষা, রেল বা আর্থিক খাতের সংস্থাগুলি। আর সেই তালিকায় এতদিন ছিল LIC।
এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়েই Dipam-র সেক্রেটারি অরুনিশ চাওলা জানিয়েছেন, আমরা সারা বছর ধরে ছোট ছোট সেলের অফার আয়োজন করব। আর এতে বিনিয়োগকারীরা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে পারবে এবং জনসাধারণের হাতে সংস্থার শেয়ার অনেকটাই উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
LIC-র পক্ষে এই শেয়ার বিক্রি কতটা লাভজনক হতে পারে?
বর্তমানে যা বাজার দর, তাতে যদি সরকার LIC-র 6.5 শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে ফেলে, তাহলে আনুমানিক 35,256 কোটি টাকা আয় হবে বলেই হিসাব বলছে। জানিয়ে রাখি, এর আগে 2022 সালে LIC-র 3.5 শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হয়। আর সেই সময়ও প্রচুর বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রিতে অংশগ্রহণ করেছিল।
তবে জানা যাচ্ছে, SEBI-র অনুমতি অনুযায়ী, LIC-কে ধাপে ধাপে 2027 সালের 16 মের মধ্যে মোট 10% পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং-এ পৌঁছতে হবে। তাই ধাপে ধাপে 6.5% শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা করেছে সংস্থাটি।
কবে থেকে হবে এই শেয়ার বিক্রি?
যদিও এখনও সরকার এই শেয়ার বিক্রি নিয়ে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানায়নি। তবে বেশ কয়েকটি ধাপে এই শেয়ার ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রতিটি শেয়ার বিক্রির আগে আগাম নোটিশ দিয়ে দিতেও বলা হয়েছে, যাতে ছোটখাটো বিনিয়োগকারীরাও এই শেয়ার বিক্রিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ তৎকাল টিকিট বুক করা যাবে মাত্র কয়েক মিনিটেই! মেনে চলুন এই ৫ নিয়ম
অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলির কী হালচাল?
শুধু LIC নয়, বর্তমানে কিছু সরকারি ব্যাঙ্ক, যেমন ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র, ইউকো ব্যাঙ্ক এখনো SEBI-র এই নিয়ম মানতে পারেনি। আর তাদের 2026 সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত শেষ সময় সীমা দেওয়া হয়েছে। আর এই সংস্থাগুলোকেও ধাপে ধাপে পাবলিক শেয়ারহোল্ডিং বাড়াতে হবে। হ্যাঁ, এমনটাই জানানো হয়েছে SEBI-র তরফ থেকে।
এক কথায় এই ধরনের শেয়ার বিক্রির ফলে বিনিয়োগকারীদের সামনে বিরাট সুযোগ আসতে চলেছে। কারণ LIC-র মতো সংস্থায় বিনিয়োগ করা মানেই লক্ষ্মীলাভ। যেহেতু একসাথে পুরো শেয়ার ছাড়বে না সরকার, তাই বাজারে সেরকম কোনো চাপ পড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।