প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে ডিএ মামলা নিয়ে সরগরম পরিস্থিতি। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বিশেষ বেঞ্চে। রায় বেড়ায়নি এখনও, আর তার মধ্যেই সপ্তম বেতন কমিশন (West Bengal 7th Pay Commission) পিছিয়ে পড়ার প্রসঙ্গ রটছে। এমতাবস্থায় কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের এক ভিডিও বার্তায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা এবং নতুন বেতন কমিশন নিয়ে আরও একবার জোরালোভাবে দাবি জানিয়েছেন।
বেতন কমিশন নিয়ে বড় আপডেট মলয়ের
সম্প্রতি এক ভিডিয়ো বার্তায় কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক শ্রী মলয় মুখোপাধ্যায় সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ আপডেট দিয়েছেন। সেই ভিডিয়োতে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে মোট ৫৮ শতাংশ DA পাচ্ছেন, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অধীনে মাত্র ১৮ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন। অর্থাৎ, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র ফারাক এখনও ৪০ শতাংশ। এই আবহে তাঁর দাবি, যতক্ষণ না এই বকেয়া মেটানো হচ্ছে রাজ্যে নতুন কোনও বেতন কমিশন চালু করা সম্ভব নয়।”
ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
মলয় মুখোপাধ্যায় এদিন আরও দাবি করেন যে, ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তাদের নতুন বেতন কমিশন কার্যকর করার পথে এগোচ্ছে। তবে তাঁর আক্ষেপ, রাজ্যের সরকারি কর্মীরা এখনও তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত। তাই রাজ্য সরকারের প্রতি বেশ ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাই এবার তাঁদের ন্যায্য পাওনা ফিরে পেতে প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। অর্থাৎ পুজোর পরে নতুন বেতন কমিশনের দাবি আরও একবার জোরালোভাবে উঠে এসেছে প্রশাসনের কাছে। যার মূলে রয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি কর্মীদের DA-র ফারাক। এদিকে পঞ্চম বেতন কমিশনের ডিএ নিয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন কর্মীরা আর সেই মামলার রায় চলতি মাসেই প্রকাশিত হতে চলেছে বলে বেশ আশাবাদী মলয়বাবু।
আরও পড়ুন: মিরিকে ভূমিধস, ভাঙল দুধিয়া সেতু! লাগাতার বৃষ্টিতে ভয়ংকর বিপর্যয় উত্তরবঙ্গে, মৃত ৯
এদিন পঞ্চম বেতন কমিশনের ডিএ মামলা নিয়ে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক একপ্রকার হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছেন যে, যদি আদালতের রায় কর্মচারীদের পক্ষে আসে, তাহলে সেই বকেয়া ডিএ কীভাবে আদায় করতে হয়, তা কর্মচারী সমাজ খুব ভালোভাবেই জানে। অর্থাৎ এই আইনি লড়াইয়ের ফলাফল পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যে পালন করতে চলেছে তা বলা বাহুল্য।
এদিকে সামনেই ২৬ এর নির্বাচন, হাতেগোনা মাত্র আর কয়েকটা মাস তার মধ্যেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি এবং বঞ্চনার এক জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি প্রশাসনকে রীতিমত নাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে, রাজ্য সরকারি কর্মীরা তাদের অধিকার আদায়ে আর কোনও আপোষ করতে রাজি নন।