প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রায় শোনা যায়, বাম আমলের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ। তবে এই ধরনের অভিযোগ একদমই উড়িয়ে দিয়েছে মুখ্যসচিব। এমনকি রাজ্যে শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা রকম কটাক্ষ করে থাকেন বিরোধীরা। কর্মসংস্থান নিয়েও তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল। কিন্তু এই আবহে রাজ্য সরকার বিভিন্ন সংস্থাগুলিকে কর্মসংস্থান চালিয়ে যাওয়ার জন্য ঋণ দিলেও এখনও মেলেনি বকেয়া টাকা। তাই এবার সেই নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিল সরকার।
বকেয়া টাকা নিয়ে ক্ষুব্ধ বাবুল সুপ্রিয়
রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থাগুলিকে রাজ্যের দেওয়া ঋণের সুদে-আসলে বকেয়া গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪২২ কোটি টাকা। কিন্তু সেখান থেকে ফেরত এসেছে মাত্র ৫৬ কোটি। আর তাতেই বেশ ক্ষুব্ধ মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনি জানান, “সাধারণ মানুষের টাকায় অনেক নিম্নমুখী সংস্থাগুলিকে পুনরুজ্জীবনের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই তা শোধ করে না। আর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই সংস্থাগুলি রাজ্যের ঋণ না মিটিয়েই উল্টে বাজার থেকে আরও নতুন ঋণ নেয়। তবে এই পদ্ধতি আর চলবে না। সমস্যা গড়াতেই নির্মূল করতে তাই বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।
চালু হল ‘লোন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার’
সূত্রের খবর, সংস্থাগুলির তরফ থেকে বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে এ বার ‘লোন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার’ তৈরি করতে চলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও শিল্প পুনরুজ্জীবন দফতর। এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে জানা যাবে কোন কোন সংস্থা সরকারের থেকে ঋণ নিয়েছে এবং বকেয়ার অঙ্ক কত। এমনকি সেই সংস্থাগুলি যদি ঋণ সম্পূর্ণ রূপ পরিশোধ করে তাহলে সেই সব সংস্থাগুলিকে ঋণ শোধের শংসাপত্র দেওয়া হবে এবং সেটি সফটওয়্যারে আপলোড করা হবে। তবে এই শংসাপত্র পোর্টালে আপলোড না হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বাজার থেকে আর ধার করতে পারবে না বলে জানা গিয়েছে।
এই নয়া সফটওয়ার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছিল গত মঙ্গলবার। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব স্মিতা পাণ্ডে এবং মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এছাড়াও ছিলেন ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব রাজেশ পাণ্ডেও। জানা গিয়েছে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকছেন রাজ্যের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল, অর্থ দফতর, ঋণ নেওয়া সংস্থা। আশা করা যাচ্ছে নয়া এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রাজ্য সরকারের দ্রুত ঋণ মেটাতে বাধ্য হবে সংস্থাগুলি। স্মিতাও জানান, বহু পুরনো ঋণের নথি ডিজিটালে তোলা যেত না। নথি হিসেবে রাখা হত। এতে আশি-নব্বইয়ের দশকে দেওয়া ঋণের নথিও রয়েছে। সেগুলিও পোর্টালে তোলা হচ্ছে।