শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ বছর শেষে ভারতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রকাশ্যে উঠে এল বিরাট তথ্য যেটি সম্পর্কে শুনলে চমকে উঠবেন আপনিও। টাকার পতন রোধ করতে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (Reserve Bank of India) ২০২৪ সালের অক্টোবরে স্পট বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে ৯.২৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। অক্টোবর শেষে নেট আউটস্ট্যান্ডিং ফরোয়ার্ড বিক্রয় দাঁড়িয়েছে ৪৯.১৮ বিলিয়ন ডলার, যা সেপ্টেম্বরের শেষে ছিল ১৪.৫৮ বিলিয়ন ডলার। আরবিআই অক্টোবর মাসে ২৭.৫ বিলিয়ন ডলার কিনেছে এবং ৩৬.৭৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। এর আগের বছর সেপ্টেম্বরে স্পট মার্কেটে ৯৬৪ কোটি ডলারের নিট ক্রয় করেছিল RBI। তবে জানিয়ে রাখি, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন ৮৫.৮১-তে নেমে যায় দর। ডলারের তুলনায় টাকার দামের এই পতনের প্রভাব পড়েছে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে। কয়েকশো কোটি টাকা খুইয়েছে আরবিআই বলে খবর।
৮৫০ কোটি ডলার খুইয়ে ফেলল RBI!
জানা গিয়েছে, ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এতে ৮৫০ কোটি ডলার খুইয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার। শুক্রবার প্রকাশিত আরবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ টানা তৃতীয় সপ্তাহে ৬৪৪.৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ৮৪৮ কোটি ডলার। আগের রিপোর্টিং সপ্তাহে রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলার কমে ৬৫২.৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
RBI সাধারণত তার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে যখন খুব বেশি অস্থিরতা রোধ করতে রুপির চাপে থাকে। শুক্রবার, মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুপির মূল্য ৫৩ পয়সা কমে রেকর্ড সর্বনিম্ন ৮৫.৭৯ এ দাঁড়িয়েছে, যা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে একদিনে সবচেয়ে বড় পতন।
সামনে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য
বহু বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদদের মতে, রুপির খারাপ পর্ব এখনো শেষ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির নীতি গ্রহণের হুমকি দেওয়ায় ২০২৫ সালে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে ভারতীয় বন্ড এবং ইক্যুইটি ২৯,২৪০ কোটি টাকা প্রবাহ দেখেছে, যেখানে এফপিআইগুলি নভেম্বরে ভারতীয় বাজার থেকে ২১,৪৪৪ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে।
আরবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৫৬.৫৬ বিলিয়ন ডলারে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে থাকা ইউরো, পাউন্ড এবং ইয়েনের মতো নন-ইউএস মুদ্রার মূল্যবৃদ্ধি বা অবমূল্যায়নের প্রভাব হিসাবে প্রকাশিত। সপ্তাহজুড়ে দেশের সোনার মজুদ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলারে।