সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ককে (IndusInd Bank Crisis) ঘিরে যে খবর ছড়িয়ে পড়েছে, তা নিয়ে বর্তমানে চর্চা শিরোনামে। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট দাবি করেছিল যে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নাকি ইন্ডাসইন্ড ব্যাংকের CEO সুমন্ত কঠপালিয়া ও তার ডেপুটি অরুণ খুরানাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। অবশ্য ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক এই তথ্য সম্পূর্ণ গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, এই ধরনের কোনো নির্দেশ RBI দেয়নি এবং মিডিয়া সম্পূর্ণ ভুয়ো তথ্য রটিয়েছে। কিন্তু আসল ঘটনা কী ছিল এবং কেনই বা হঠাৎ করে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ককে নিয়ে এত চর্চা শুরু হল? চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।
মিডিয়া রিপোর্টে কী বলা হয়েছিল?
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক এর হিসাব নিকাশের কিছু গরমিল হওয়ার কারণে RBI ব্যাঙ্কের শীর্ষ আধিকারিকদের পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল। এর মূল কারণ হিসাবে তারা দেখিয়েছিল, ব্যাঙ্কের ফিউচার এবং অপশন সেগমেন্টের অডিট রিপোর্টে ২১০০ কোটি টাকার আর্থিক গরমিল ধরা পড়েছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক চেয়েছিল যাতে ব্যাঙ্কের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অটুট থাকে এবং কোন খারাপ প্রভাব না পড়ে। তবে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক জানিয়েছে যে, এই সব তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের প্রতিক্রিয়া
ব্যাঙ্কের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “RBI এর পক্ষ থেকে আমাদের ম্যানেজমেন্টকে কোনও পদত্যাগ করতে বলা হয়নি। মিডিয়া সমস্ত ভুয়ো তথ্য প্রকাশ করেছে। বাস্তবের সঙ্গে এর কোন মিল নেই।” ব্যাঙ্ক এখানেই থেমে থাকেনি। তারা এও জানিয়েছে যে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে একটি স্বাধীন অডিট টিমকে নিয়োগ করা হচ্ছে। এই টিম ব্যাঙ্কের হিসাবের গড়মিল, সম্ভাব্য ভুল এবং দায়বদ্ধতার দিকগুলিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখবে। ব্যাঙ্কের স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এক ধাক্কায় ৩০% শেয়ারের মূল্য পতন
ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে ওঠা হিসাব সংক্রান্ত সেই অভিযোগের পর ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক শেয়ার মার্কেটে বিশাল ধাক্কা খেয়েছে। জানলে অবাক হবেন, চলতি একমাসে ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ৩০% পড়ে গিয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, যদি ব্যাঙ্কের হিসাবনিকাশে গরমিল পাওয়া যায়, তাহলে এটি তাদের গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারীদের সরাসরি ধাক্কা দেবে। এতে ব্যাঙ্কের তহবিল এবং লিকুইডিটি প্রবাহের উপর প্রভাব পরবে।
আরও পড়ুনঃ ৯৭ কোটির দুর্নীতিতেও নাম উঠেছিল হাইকোর্টের বিচারপতির, CBI দায়ের করেছিল মামলা
ভবিষ্যতে ব্যাঙ্কের পরিস্থিতি কী হতে পারে?
বর্তমানে এই ব্যাঙ্কটি অডিট কোম্পানির রিপোর্টের উপর আস্থা রেখেছে। তারা যদি প্রমাণ করে যে, তারা কোন আর্থিক গরমিল করেনি তাহলে ব্যাঙ্কটি এক কথায় স্বস্তি পাবে। কিন্তু যদি সত্যিই ২১০০ কোটি টাকা হিসাবের গরমিল ধরা পড়ে, তাহলে RBI এই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হবে। ফলে ব্যাঙ্কের ব্যবসার উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। তবে ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক সমস্ত অভিযোগের জবাব দিতে আত্মবিশ্বাসী। এখন দেখার তারা এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয়।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |