প্রীতি পোদ্দার, দিল্লি: বাড়ি বা গাড়ি কেনার সময়, অথবা ব্যবসার কাজে হোক কিংবা কোনও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বরাবরই ভরসাযোগ্য ব্যাঙ্ক এর উপর নির্ভরশীল থাকে সাধারণ জনগণ। আর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক হিসেবে ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া’-র (State Bank of India) ওপর সাধারণ মানুষের ভরসাও বেশি। তবে এখন ঋণ নিতে চলেছে খোদ SBI। তবে সেটা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া নয়, এই ঋণ নেওয়া হবে বিদেশের ব্যাঙ্কগুলির তরফ থেকে। সেই কারণেই দেশের সবচেয়ে বড় ঋণ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে SBI।
১২৫ কোটি ডলারের ঋণ নেবে SBI!
সূত্রের খবর, এ দেশের ব্যাঙ্কগুলিকে ব্যবসার প্রয়োজনে সব সময়েই ঋণ দিয়ে থাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা RBI। তবে এবার SBI ১২৫ কোটি ডলারের ঋণ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের থেকে নিচ্ছে না। এর জন্য তিনটি বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিয়েছে এই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা। পাঁচ বছরের মেয়াদে ওই ঋণ নিতে চায় স্টেট ব্যাঙ্ক। আর সেই তিনটি বিদেশী ব্যাঙ্ক হল সিটিবিসি ব্যাঙ্ক, এইচএসবিসি হোল্ডিংস এবং তাইপেই ফুবন ব্যাঙ্ক। একটি বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯২.৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের মার্জিনে ঋণ পেতে চলেছে SBI। যা দেশের আর্থিক খাতে সবচেয়ে বড় ডলার নির্ধারিত ঋণ হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি এই সুদের হার ঝুঁকিমুক্ত সুরক্ষিত এবং রাতারাতি অর্থায়নের হারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে জানা গিয়েছে।
কেন এমন পদক্ষেপ নিল SBI?
এই ঋণ বিষয়ে স্বাভাবিকভাবে নানা প্রশ্ন জাগছে কেন SBI ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে RBI কে বেছে নিল না। এই বিষয়ে আর্থিক বিশ্লেষকদের দাবি, গত কয়েকদিন ধরেই ডলারের তুলনায় ভারতীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হচ্ছে। বর্তমানে ডলারের দাম বাড়তে বাড়তে প্রায় ৮৫ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্টেট ব্যাঙ্ক ডলারে ঋণ নিলে সেই পরিস্থিতি কিছুটা সামলানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও চলতি বছরে দেশে ডলারে ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৭ শতাংশ কমে গিয়েছে। ওই ঋণ কমে ১ হাজার ৪২০ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে SBI।
তবে শুধু SBI নয়, বিদেশী ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে আরও কয়েকটি ব্যাঙ্ক। যার মধ্যে অন্যতম হল ‘চোলামণ্ডলাম ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি’। ৩০ কোটি ডলারের সিন্ডিকেট মেয়াদি সুবিধা বৃদ্ধি করেছে এই ব্যাঙ্ক যা ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অন্য দিকে, ৭৫ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা। তবে ১২৫ কোটি ডলারের ঋণ নেওয়ার ব্যাপারে অবশ্য এখনও সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি SBI। যদি এই পদক্ষেপ সত্যি হয় তাহলে তিনটি বিদেশি ব্যাঙ্কের থেকে ওই অর্থ হাতে পেলে তা ‘গুজরাট ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল টেক সিটি’-এর শাখায় ব্যবহার করবে স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।