বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বুধবার ব্যাপক বাক্য-চালাচালির মাঝে লোকসভায় ওয়াকফ (Waqf) সংশোধনী বিল পেশ করেন সংখ্যালঘু কল্যান মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। এদিন লোকসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে ওয়াকফ সংশোধনী বিলটির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, এই বিলটি নিয়ে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
2014 সালে নির্বাচনী জয়ের পর আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এই ওয়াকফ সম্পর্কিত বেশ কিছু ভয়ানক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কাজেই যদি এই সংশোধনী বিল না আনা হতো, তবে আজ হয়তো সংসদ ভবনও ওয়াকফ সম্পত্তিতে পরিণত হতো। যদিও এই বিলের বিরোধিতা করেছে বিরোধীরা। বিপরীত পক্ষের তরফে বলা হয়েছে, এই বিল পেশ করে দেশের জনগণকে বোকা বানাচ্ছে কেন্দ্র।
ওয়াকফ বিল নিয়ে বড় বক্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
বুধবার লোকসভা কক্ষে ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে কথা বলতে বলতে আচমকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন বলেন, মোদি সরকার যদি এই বিল না আনত, তবে এতদিনে হয়তো এই সংসদ ভবনটিও ওয়াকফ বোর্ডের আওতায় চলে যেত। এদিন আইন স্মরণ করিয়ে মন্ত্রী বলেন, ওয়াকফ আইনের 108 ধারায় বলা রয়েছে, এই আইন যেকোনও আইনের ঊর্ধ্বে।
সেই সাথে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যোগ করেন, ওয়াকফ সংশোধনী বিলে এমন কোনও বিষয় নেই যা সংখ্যালঘু মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে। এদিন সংখ্যালঘু কল্যান মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, মুসলিমদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনও রকম উদ্দেশ্য আমাদের নেই। ভারত সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর কোনও রকম জোর জুলুম বা তাদের ব্যক্তিগত বিষয় হস্তক্ষেপ করছে না।
ওয়াকফ সম্পত্তি আসলে কী?
ওয়াকফ সম্পত্তি হল সেই স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি যা আইনি পদ্ধতিতে দলিলের মাধ্যমে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করা হয়। সহজে বলতে গেলে, এই ধরনের সম্পত্তি মূলত আইনি পথে মসজিদ নির্মাণ, চ্যারিটি বা সেবার কাজে ব্যবহার করা যায়। সেক্ষেত্রে বলে রাখি, মূলত উত্তরসূরি হিসেবে ব্যক্তিগত কাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, কবর স্থান তৈরি অথবা দরিদ্রদের আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করা যায়। তবে এই ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করা সম্ভব নয়।
বিশ্বের বেশিরভাগ ওয়াকফ সম্পত্তিতে কবরস্থান, মসজিদ ও দরগা তৈরি হয়েছে…
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মূলত ইরান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, মিশর, তুরস্ক ও আলজেরিয়া সহ বিশ্বের একাধিক বেশে দেশেই কাজ করে এই ওয়াকফ বোর্ড। বলা ভাল, যেসব দেশে মুসলিম সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠদের বাস সেই সব দেশেই ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্বের প্রায় 90 শতাংশ ওয়াকফ সম্পত্তি ইমামবাড়া, কবরস্থান, মসজিদ ও দরগা কমিটির দখলে।
অবশ্যই পড়ুন: হায়দরাবাদ ম্যাচের আগেই KKR-র অন্দরে তুমুল অশান্তি!
এগিয়ে পাকিস্তান….
বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ভারতীয় ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে মোট 3,804 বর্গ কিলোমিটার জমি রয়েছে। যেই হিসেবটা পাকিস্তানের ক্ষেত্রে অনেকটাই বেশি। রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে পাকিস্তান ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে আনুমানিক 8,81,913 বর্গ কিলোমিটার ওয়াকফ জমি আছে। যা ভারতের থেকে অন্তত 200 গুণ বেশি।