শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ পৃথিবীতে সমুদ্রপ্রেমীর সংখ্যা কিন্তু নেহাতই কম নয়। সমুদ্র তটে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত কিংবা সূর্য উঠতে দেখার মজাই আলাদা। ঘন্টার পর ঘন্টা সমুদ্রতটে বসে কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু এবার এই সমুদ্র তটগুলি নিয়ে প্রকাশ্যে উঠে এলে চাঞ্চল্যকর খবর। যেটি সম্পর্কে জানলে আপনারও পিলে চমকে যেতে পারে বৈকি। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বিশ্বজুড়ে বালুকাময় সমুদ্রতটগুলি ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। এমনকি ক্ষতির মুখে পড়ছে বঙ্গোপসাগরও (Bay Of Bengal)।
হারিয়ে যাচ্ছে সমুদ্রতট!
বিশ্বের প্রায় ৩৩ শতাংশ বালুকাময় সৈকত শক্ত হয়ে গেছে। বঙ্গোপসাগর ৮৪ শতাংশ উপকূল শক্ত হয়ে প্রথম স্থান দখল করেছে বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বলা হচ্ছে, বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ বালুকাময় উপকূলরেখা মানুষের তৈরি কাঠামোর কারণে বদলে গিয়েছে। মানুষের সৃষ্টি করা কিছু কাজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৫০-এর দশক থেকে উপকূলের দিকে জনসংখ্যার অভিবাসন দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলগুলিকে ক্ষয় ও বন্যা থেকে সুরক্ষা দেওয়া দরকার। এর ফলে কাঠামো নির্মাণ এবং ফলস্বরূপ সৈকতগুলি শক্ত হয়ে উঠছে বঙ্গোপসাগরের পরেই রয়েছে পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপ, যেখানে দ্বিতীয় বৃহত্তম উপকূলীয় কঠোরতা দেখা গেছে ৬৮ শতাংশ, তারপরে ভূমধ্যসাগরে ৬৫ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ রাঁধুনি, ওয়েটার, মিস্ত্রী পদে মাধ্যমিক পাসেই সরকারি চাকরি! আবেদন ২৪ ফেব্রুয়ারি অবধি
পশ্চিম উত্তর আমেরিকা এবং পূর্ব এশিয়া যথাক্রমে ৬১ শতাংশ এবং ৫০ শতাংশ দেখিয়েছে। বিজ্ঞানীরা শক্ত হওয়ার পরিমাণ বিশ্লেষণ করতে গ্লোবাল ইমপারভিয়াস সারফেস এরিয়া (জিআইএসএ) ডেটাসেট ব্যবহার করেছিলেন।
বিস্ফোরক বিজ্ঞানীরা
জলবায়ু বিজ্ঞানী রক্সি কোল বলেন, আগামী দিনে উপকূলীয় অঞ্চলে কঠিন কাঠামোর জন্য উপকূলীয় ক্ষয় ও সমুদ্রের দখলের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। উপকূল এলাকা শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন সৈকত তীব্র ক্ষয়ের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। গবেষণার তথ্যমতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি এভাবে কার্বন দূষণ বর্তমান হারে চলতে থাকে, তাহলে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ ২৬ শতাংশ বালুকাময় সৈকত হারিয়ে যেতে পারে।