কলকাতাঃ সামনেই একটা লম্বা ছুটির দিন আসছে। আর সেই ছুটির দিনগুলোর সদ্ব্যবহার করতে ইচ্ছুক? কোথাও ঘুরতে যেতে চান? তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনে আপনার জন্য রইল ঘুরতে যাওয়ার কয়েকটি সেরা ঠিকানা। এই জায়গাগুলোতে গেলে আপনার শরীর, মন দুটোই একদম চনমনে হয়ে যাবে। কেউ কেউ আছেন যারা কয়েকদিনের ছুটিতে পাহাড়ে ঘুরতে যান, আবার কেউ কেউ আছেন যারা সমুদ্রে ঘুরতে যান। আপনিও কি সমুদ্রে ঘুরতে যেতে চান? কিন্তু দিঘা-মন্দারমণি একঘেঁয়ে লাগে? তাহলে আজ আপনাদের জন্য রইল বাংলার বুকে থাকা অফবিট কিছু সমুদ্র সৈকতের ঠিকানা।
দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর
নিরিবিলিতে ছুটি কাটাতে অন্যতম সেরা ঠিকানা হল পূর্ব মেদিনীপুরের বুকে থাকা এই দক্ষিণ পুরষোত্তমপুর। এই জায়গাটি একদমই অফবিট, পর্যটনের ভাষায় ‘ভার্জিন’ জায়গা। এখানে খুব বেশি হোটেল এখনও গড়ে ওঠেনি। তবে বেশ কয়েকটি ছোট হোটেল এবং ব্যাকপ্যাকার্সের টেন্ট ব্যবস্থা রয়েছে। মাথাপিছু ১৫০০ টাকা খরচ করলেই কয়েক বেলা থাকা খাওয়া পেয়ে যাবেন।
জুনপুট
বিগত কিছু সময়ে এই জুনপুট সি বিচ সমুদ্রপ্রেমীদের কাছে এক আলাদাই ভালো লাগার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। এই সমুদ্র সৈকতে কিন্তু বেশি মানুষের ঢল নামে না। যারা একটু নিরিবিলি জায়গা খোঁজেন সময় কাটানোর জন্য তাদের জন্য এই জুনুপুট সি বিচ একদম আদর্শ ঠিকানা। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে জুনপুটের দূরত্ব মেরেকেটে ১০ কিলোমিটার।
লক্ষ্মীপুর
হলফ করে বলা যায় এই জায়গাটি সম্পর্কে আপনি হয়তো শোনেননি। এখানে একপ্রকার পিন ড্রপ সাইলেন্স। কলকাতার কাছের এই কোলাহলহীন সমুদ্রতট। বকখালির কাছেই রয়েছে এই লক্ষ্মীপুর সমুদ্র সৈকত। কলকাতা থেকে এই জায়গার দূরত্ব মেরেকেটে ১৩৬ কিলোমিটার। কেউ যদি বকখালি সি বিচ থেকে পায়ে হেঁটে এখানে যায় তাহলে সময় লাগবে মিনিট ২০। অনেকে আবার একে বলে মিনি গোয়া।
মৌসুনী দ্বীপ
সমুদ্রপ্রেমী অথচ মৌসুনী দ্বীপ যাননি বা জায়গাটির নাম শোনেননি তা হতেই পারে না। শহর কলকাতা থেকে এই দ্বীপটির দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। যারা নিরিবিলিতে একটু সময় কাটাতে ভালোবাসেন তাদের কাছে এই জায়গা একদম সোনায় সোহাগার সমান। নিজের গাড়ি বা ট্রেনে করেও আপনি এই জায়গায় পৌঁছে যেতে পারেন। আপনি যদি ট্রেনে যান তাহলে আপনাকে শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকাল ধরে নামখানা পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে যেতে হবে টোটোয়। তারপর নৌকা করে পৌঁছন যাবে মৌসুনী দ্বীপ। এখানে একাধিক ক্যাম্প রয়েছে যেখানে মাথাপিছু ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ করে অনায়াসেই চারবেলা থাকা-খাওয়া পেয়ে যাবেন এবং থাকতে পারবেন।
বাঁকিপুট
যারা ঝাউগাছ দেখতে পছন্দ করেন তাঁদের কাছে এই বাঁকিপুট একদম হিডেন জেম। সমুদ্রের টানে এখানে ছুটে যান পর্যটকরা। নিরিবিলিতে উইকেন্ড কাটানোর সেরার সেরা ঠিকানা এই বাঁকিপুট। এখানে আরও একটা আকর্ষণীয় জায়গা রয়েছে, যা হল ইংরেজ আমলে তৈরি বাতিঘর। বাতিঘরের মাথায় উঠে গোটা বাঁকিপুটের সৌন্দর্য্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগের সুযোগ মিলবে। শুধু তাই নয়, এখানে রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত কপালকুণ্ডলার মন্দির।
বগুড়ান জলপাই
পূর্ব মেদিনীপুরের আরও একটা ‘ভার্জিন’ সমুদ্র সৈকত। এখানে জোয়ারের সময় তড়তড়িয়ে জল এগিয়ে আসে, তবে ভাঁটার সময় জল অনেকটাই নেমে যায়। এখানে লাল কাঁকড়া, সমুদ্রের গর্জন দেখলে মন ভালো হয়ে যাবে আপনার। এখানকার সৌন্দর্য আপনাকে পাগল করে দেবে। কলকাতা থেকে মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন এখানে। কাঁথি থেকে এই জায়গা আরও কাছে।