শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ একদম দোরগোড়ায় এসে হাজির হয়েছে দুর্গাপুজো। আর দুর্গাপুজোকে ঘিরে সকলের প্রস্তুতি রীতিমতো শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই পুজোর সময় কে কী করবে তা নিয়ে সকলেরই বিস্তর প্ল্যান ইতিমধ্যেই হয়তো তৈরি হয়ে গিয়েছে। কেউ করবেন প্যান্ডেল হপিং, কেউ করবেন খাওয়া-দাওয়া তো আবার কেউ কেউ আছেন যারা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেবেন বলে একদম মনস্থির করেছেন। তবে প্রতিবছর পুজো আসলেও একটা জিনিসের চেহারা কোনদিনই পাল্টায় না। আর সেটা হলো গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরোনোর সময় হয়রানি। একে তো দীর্ঘক্ষণ ধরে জ্যামে আটকে থাকতে হয়, তার ওপর যদি পুলিশে তরফে চেকিং করা হয় তাহলে সেই সময় অনেকেই আবার আছেন যারা মাথা ঠিক রাখতে পারেন না। এ বছরেও যে সেটার ব্যতিক্রম ঘটবে না সেটা বলাই বাহুল্য। তবে চিন্তা নেই, আজ এই প্রতিবেদনে এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে যেটি আপনার দৈনন্দিন জীবনে খুবই কাজে লাগবে।
বিশেষ করে বাইক নিয়ে বেরোলে এমন কিছু আইন আছে যেগুলি সম্পর্কে আপনি যদি জেনে রাখেন তাহলে অনায়াসেই হয়রানি হওয়ার হাত থেকে রেহাই পাবেন। অনেক সময় দেখা যায় রাস্তায় বাইক নিয়ে বেরোনোর সময় গাড়ি আটকে পুলিশ চেকিং করে। সেই সময় আপনার কাছে কী কী ডকুমেন্ট থাকলে পুলিশ আপনাকে ছুঁযেও দেখবে না সে সম্পর্কে জেনে নিন।
রাস্তায় বাইক নিয়ে বেরোনোর সময় এই ডকুমেন্টগুলি রাখুন
ড্রাইভিং লাইসেন্স, আরসি বুক, হেলমেট, পিইউসি অর্থাৎ পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল সার্টিফিকেট, বীমা। এই পাঁচটি জিনিস যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে রাস্তায় পুলিশ যদি আপনার গাড়ি চেকিংও করে তাহলে কোনওরকম ভয় পাওয়ার দরকার নেই। তবে আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন গাড়িটি আপনার নয়, আপনার দাদার, অথচ আপনি চালাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে অথরাইজেশন লেটারের দরকার পড়ে। ট্যাক্স টোকেন লাগে। এছাড়া গাড়ি যদি ১৫ বছরের বেশি হয়ে যায় তাহলে সিএফ লাগে।
ভোটের কাজে লাগবে বলে কোনো মানুষের গাড়ি কি সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে?
এমনি ভোটের সময়ে আমরা দেখি পুলিশ বাস, ট্রেকার বাঁ ছোট হাতিকে অধিগ্রহণ করে ভোটের কাজ করতে যাচ্ছে। তবে প্রশ্ন ওঠে, ভোটের কাজে লাগবে বলে কোনো মানুষের পার্সোনাল গাড়ি কি সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে? উত্তর হল হ্যাঁ। সর্বোপরি, একজন নাগরিক হিসেবে ব্যক্তি নিজের গাড়ি সরকারকে দিতে বাধ্য। সেই ব্যক্তি যদি গাড়ি দিতে না চায় তাহলে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে সরকার। চার চাকার পাশাপাশি আপনার দু চাকাও কিন্তু সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে।
তবে এর থেকে বাঁচার উপায় কী? ধরুন ট্র্যাফিক সার্জেন্ট আপনার গাড়ি আটকালো এবং বলল যে আপনার গাড়ি ভোটের জন্য অধিগ্রহণ করা হবে এবং ভোটের পর দিয়ে দেওয়া হবে। এই সময়ে আপনাকে খুব ঠান্ডা মাথায় এবং কোনোরকম ঝামেলা বা ভয় না পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। নিশ্চয়ই ভাবছেন কীভাবে? তখন আপনি বলতে পারেন, ‘না স্যার এই গাড়িটা আমার খুবই দরকার। কারণ আমার বাড়িতে এখন রোগী আছেন। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হলে এই গাড়িটা আমার খুবই দরকার। যে কোনো সময়ে এটা এমার্জেন্সি ক্ষেত্রে লাগতে পারে।’ এটা একমাত্র বড় পয়েন্ট হতে পারে যেখানে আপনি আপনার গাড়ি অধিগ্রহণ হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে পারেন।
পুলিশের চেকিং থেকে বাঁচার উপায় কী?
অনেকেরই প্রশ্ন থাকে যে পুলিশের চেকিং থেকে বাঁচবো কিভাবে? সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক ঘুরে ঘুরে যেতে হবে। যাইহোক, কলকাতা পুলিশের আধিকারিকের কথায়, আপনার কাছে যদি সবকয়টি ডকুমেন্টস না থাকে তাহলে চিন্তা নেই। আপনার মাথায় যদি হেলমেট থাকে তাহলে ৯৯% নিশ্চিত যে পুলিশ আপনাকে ধরবে না। যদিও একটা বিশেষ পরামর্শ, রাস্তায় বেরিয়ে হয়রানি এড়াতে আপনার কাগজপত্র সব সময় আপটুডেট রাখতে ভুলবেন না।