পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ প্রতিদিন কর্মসূত্রে লক্ষ লক্ষ মানুষ কলকাতা যাতায়াত করেন। যার মধ্যে বেশিরভাগ লোকেই হাওড়া থেকেই কলকাতায় যান, যার জন্য হাওড়া ব্রিজ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আজ ৩রা ফেব্রুয়ারি সেই হাওড়া ব্রিজের জন্মদিন। হ্যাঁ ঠিকই দেখছেন আজ থেকে ৮ দশক আগে আজকের দিনেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল রবীন্দ্র সেতু যাকে আমরা সকলে হাওড়া ব্রিজ বলে চিনি।
হাওড়া ব্রিজের জন্মদিন
যত সময় এগিয়েছে হাওড়া ব্রিজের গুরুত্ব ততই বেড়েছে। দিনের ২৪টা ঘন্টাই লক্ষ লক্ষ গাড়ি, দুচাকা থেকে মালবাহী যানবাহন যাতায়াত করে এই ব্রিজের উপর দিয়েই। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঝুলন্ত এই ব্রিজটি ১৯৪৩ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি চালু করা হয়। সেই থেকে অবিরাম ৮২ বছর ধরে সগর্বে দাঁড়িয়ে বাঙালির প্রিয় হাওড়া ব্রিজ।
হাওড়া ব্রিজ তৈরির ইতিহাস
যেমনটা জানা যায়, ১৮৬২ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথম এই ব্রিজ তৈরী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যার দায়িত্ব ছিল ব্রিটিশ চিফ ইঞ্জিনিয়ার জর্জ টার্ন বুলকে রেইকির উপরে। তিনি ব্রিজ তৈরী জন্য সমস্ত স্টাডি রিপোর্ট তৈরী করেন। এরপর শুরু হয় হাওড়া ও কলকাতার মাঝে সংযোগকারী ঝুলন্ত ব্রিজ তৈরির কাজ। এটি একটি পন্টুন ব্রিজ অর্থাৎ কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরী ব্রিজ।
পরবর্তীতে আধুনিক ব্রিজ তৈরির জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় দ্য ব্রেথওয়েথ ও বার্ন অ্যান্ড জেসপ কোম্পানিকে। ব্রিজের নকশা তৈরী করেছিলেন ব্রিটিশ আর্কিটেক্ট রেন্ডেল, পামার ও ট্রিটন। কিন্তু ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় ব্রিজ তৈরির জন্য ২৬,০০০ টন স্টিল প্রয়োজন হলেও মাত্র ৩,০০০ টন আসে ইংল্যান্ড থেকে। শেষমেশ টাটা স্টিলের তরফ থেকে ২৩,০০০ টন স্টিলের যোগান দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীর ভান্ডারে আরও মহিলা পাবেন সুবিধা, দুয়ারে সরকারেই মিলল সুখবর
তৎকালীন ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে তৈরী হয় ৭০৫ মিটার লম্বা হাওড়া ব্রিজ। ১৯৪৩ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আজকের দিনেই এই ব্রিজের উদ্বোধন হয়। নামকরণ করা হয় এশিয়ার প্রথম নোবেল জয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে। তবে রবীন্দ্র সেতুর নয়, বাঙালি তথা বিশ্ববাসীর কাছে হাওড়া ব্রিজ নামেই পরিচিত হাওড়া ও কলকাতার যোগাযোগ তৈরী করা এই সেতুটি।