৪২ ঘণ্টার রাস্তায় সাড়ে তিন বছর লেট করেছিল ভারতের এই ট্রেন! কী হয়েছিল? তা আজও অজানা

Published on:

indian rail

ভারতীয় রেল বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক। ১৮৫৩ সালে মুম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত প্রথম ট্রেন চলাচল শুরু হয়, যা ভারতের আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করে। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা রেললাইনগুলি দেশের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যের এক প্রতিচ্ছবি তৈরি করে। ভারতের রেল ব্যবস্থা ছড়িয়ে রয়েছে পাহাড় থেকে মরুভূমি, উপকূল থেকে ঘনজঙ্গল – সব জায়গায়। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী পরিবহন করে রেল। ভারতীয় রেলের প্রাচীন সেতু, ঐতিহাসিক স্টেশন, এবং শতাব্দী প্রাচীন ট্রেনগুলো দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাক্ষী।

WhatsApp Community Join Now

তবে ভারতীয় রেলকে জুড়ে এমন এক ঘটনা রয়েছে, যার সঠিক ব্যাখ্যা আজো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আসলেই এই ঘটনা বড় বিস্ময়কর। কারণ, ভারতীয় রেলের একটি ট্রেন সাড়ে তিন বছর পর পৌঁছেছিল গন্তব্যে। যেখানে ৪২ ঘন্টার কিছু বেশি সময় সেটির পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনটি পৌঁছাতে পেড়িয়ে যায় অনেকগুলি বছর। এটিই ভারতীয় রেলের সবথেকে দীর্ঘতম রেলযাত্রা হিসেবে পরিগণিত হয়। কিন্তু, এতদিন কি কোথাও আটকে ছিল ট্রেনটি? এর উত্তর আজো সঠিকভাবে পাওয়া যায়নি।

সাড়ে তিন বছর পর গন্তব্যে পৌঁছেছিল ট্রেন

আসলে এখানে যে ট্রেনের কথা বলা হচ্ছে, সেটি কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন নয়। এখানে একটি মালগাড়ি ওয়াগনের অদ্ভুত যাত্রা নিয়ে আলোচনা হবে। জানা যায়, ইন্ডিয়ান পটাশ লিমিটেড থেকে সার আনার জন্য এই পণ্যবাহী ওয়াগনটি বুক করেছিলেন রামচন্দ্র গুপ্ত নামে উত্তরপ্রদেশের বস্তির এক ব্যবসায়ী। ট্রেনটি ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে বিশাখাপত্তনম থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। সেটির গন্তব্য ছিল ১,৪০০ কিলোমিটার দূরে। তখনকার দিনে একটি মালগাড়ি এই দূরত্ব অতিক্রম করতে ৪২ ঘন্টা ১৩ মিনিট মতো সময় নিত। তবে এই ট্রেনটি এই দূরত্ব অতিক্রম করেছিল সাড়ে তিন বছর ধরে। কারণ, ট্রেনটির ২০১৮ সালে সেটির গন্তব্য অর্থাৎ, বস্তি স্টেশনে পৌঁছেছিল।

সাড়ে তিন বছরে নষ্ট হয়েছিল লাখ লাখ টাকার সার

এখন অনেকেই ভাবছেন যে এই মালগাড়িতে কি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কারণ, দেরির জন্য সেটিও একটি কারণ হতে পারে। তবে জানা যায়, মূল্যবান কিছু নয়, ওই ওয়াগনে ছিল ১৪ লক্ষ টাকার সার। যতদিনে ট্রেনটি বস্তি স্টেশনে পৌঁছায়, ততদিনে সব সার নষ্ট হয়ে যায়। উত্তরপ্রদেশের ওই ব্যবসায়ী সার নিতে অস্বীকার করেন। একইসঙ্গে কোম্পানিকে টাকা দিতেও অস্বীকার করেন তিনি। এরপর দুই পক্ষের অভিযোগে মামলা হিসেবে আদালতে যায় এই ঘটনা। তবে মামলার নিষ্পত্তি কিভাবে হয়েছিল, যা এখনো জানা যায়নি।

ট্রেনটি পৌঁছাতে এতটা সময় লেগেছিল কেন?

যেখানে ৪২ ঘন্টা ১৩ মিনিটে ট্রেনটির গন্তব্যে পৌঁছানোর কথা ছিল, সেখানে কেন সাড়ে তিন বছর লাগলো, সেই কারণ আজো অজানা। তবে অনেক রেল আধিকারিক মনে করেন যে ওয়াগন পুরানো হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকসময় সেগুলিকে রেল-ইয়ার্ডে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এই মালগাড়ির ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে থাকার অনুমান করেছেন তাঁরা। তবে সঠিক কারণ নিয়ে আজো ধোঁয়াশা রয়েই গেছে।

সঙ্গে থাকুন ➥