১৭০ বছরের ইতিহাস, হাওড়া স্টেশনের মুকুটে জুড়ছে বিশ্বখ্যাতির পালক! গর্ব হবে বাঙালিদের

Published on:

howrah railway station

কলকাতাঃ ফের একবার শিরোনামে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এবং দীর্ঘতম রেল স্টেশন হাওড়া স্টেশন। এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বড় এবং ব্যস্ততম রেল স্টেশনের মধ্যে একটি হল হাওড়া। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ এই রেল স্টেশনের ওপর ভর করে যে যার গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেছেন। প্রত্যেকবারই কিছু না কিছু বিষয়ের ওপর এই রেল স্টেশন নজির গড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। এই বছরই হাওড়া রেলস্টেশন ১৭০ বছরে পা দেবে। সেইসঙ্গে এই রেল স্টেশনকে UNESCO-র হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রথম নয়, আগেও এই দাবি করা হয়েছিল। তবে এই দাবি নতুন করে আরও জোরালো হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়তে জয়েন করুন Join Now

হাওড়া স্টেশনের ইতিহাস

ইতিমধ্যে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় জায়গা হয়েছে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাসের মূল ভবন এবং চার্চ গেট স্টেশন চত্বর। তবে এই তকমাটা এখনও অবধি পায়নি হাওড়া রেলস্টেশন। যা নিয়ে মন খারাপ সকলের। তবে এই রেলস্টেশনের ইতিহাস শুনলে হয়তো আপনিও আকাশ থেকে পড়বেন। এই রেল স্টেশন তৈরি হওয়ার পেছনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যা অবদান রয়েছে সেটা সম্পর্কে হয়তো কেউ জানেন না।

এর জন্য ফিরে যেতে হবে ১৮৪২ সালে। এই বছরেই ভারতে প্রথম রেল চালু করার ভাবনা আসে কবিগুরুর মাথায়। রানিগঞ্জ এবং রাজমহল পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় খনি ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথের। আর এই কয়লা দ্রুত আনার পথ খুঁজছিলেন তিনি। এসবের মাঝেই ১৮৪২ সালে ইংল্যান্ডে যান এবং সেখানকার ট্রেনে চড়েন। ব্যস সেই সময়েই নাকি তাঁর মাথায় আসে ভারতে রেল ব্যবস্থা আনার। এরপর যেমন ভাবা তেমন কাজ। তিনি প্রকল্পের এক-তৃতীয়াংশ খরচ দিয়ে ইংরেজ সংস্থার সাহায্যে রেলপথ তৈরির চেষ্টা করেন। তবে যত সময় এগোয় ততই ইংরেজদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। এরপর গ্রেট ওয়েস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি তৈরি করে নিজেই কাজে নেমে পড়েন। ১৮৪৬ সালে বিভিন্ন অনুমতি জোগাড়ের কাজে বিলেতে গিয়ে দ্বারকানাথের মৃত্যু হলে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কোম্পানির সঙ্গে মিশে যায় তাঁর সংস্থা। সেই সংস্থার তত্ত্বাবধানেই শুরু হয় রেলপথ নির্মাণ। রেলপথ নির্মানের দায়িত্বে ছিলেন জর্জ টার্নবুল। তৈরি হয় একটি লাইনের হাওড়া স্টেশন।

বাছায় করা খবর নিজের মোবাইলে পেতে Join Now

হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

এরপর ধীরে ধীরে হাওড়া স্টেশনে তৈরি হতে শুরু করে একের পর এক জিনিস। যেমন ১৯০৫ সালে তাঁর পরিকল্পনায় ছ’টি প্ল্যাটফর্ম-সহ মূল ভবন তৈরি হয়। এরপর রোমান এবং মুর স্থাপত্যের মিশেলে তৈরি করা হয় বড় বড় খিলান, প্রশস্ত বারান্দা, অর্ধচন্দ্রাকৃতি গম্বুজ। এরপর আসে ১৯৮৪ সাল। এই বছরে হাওড়া স্টেশনে আরও আটটি প্ল্যাটফর্ম হয়। ১৯৯২ সালে নতুন টার্মিনাল কমপ্লেক্স তৈরি হয়। এরপর শেষমেষ ২০০৯ সালে প্ল্যাটফর্ম বেড়ে দাঁড়ায় ২৩-এ। যাইহোক, ২০১৮ সাল থেকে হাওড়া স্টেশনকে হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার তৎপরতা শুরু করে রেল বোর্ড। তবে মাঝে করোনা অতিমারী শুরু হওয়ায় সেই ব্যাপারটি হিমঘরে ফিরে যায়। তবে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শুধরেছে। হাওড়া স্টেশনের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং প্রযুক্তিগত বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে স্টেশনের ডিআরএম ভবন এবং মূল ভবনকে ফের ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে রেলেরএই নিয়ে ইতিমধ্যে পূর্ব রেলকে চিঠি দেন রেল বোর্ডের প্রাক্তন অর্থ কমিশনার ও ‘রেল এন্থিউসিয়াস্ট সোসাইটি’র পশ্চিমবঙ্গ চ্যাপ্টারের প্রধান সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। পুরনো নথি খুঁজে বার করার কাজও চলছে।

গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্যJoin Group
চাকরির খবরের জন্যJoin Hood Jobs
রাশিফলের জন্যJoin Hood Rashifal
খেলার খবরের জন্যJoin Whatsapp
সঙ্গে থাকুন ➥
X
Join Group