শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ দার্জিলিং (Darjeeling)… নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সুবিস্তৃত পাহাড়, ঝর্ণা, সর্বোপরি টয় ট্রেন। এই টয় ট্রেন নিয়ে দার্জিলিং-এর মানুষের গর্বের শেষ নেই। তবে এবার এই টয় ট্রেন নিয়ে এমন এক মন খারাপ করা খবর প্রকাশ্যে এলে যা শুনলে চমকে উঠতে পারেন আপনিও। বর্তমানে নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন থেকে শুরু করে দার্জিলিং অবধি জয় রাইড বা টয় ট্রেন চলাচল করে। তবে দীর্ঘদিন ধরে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং অবধি টয় ট্রেন চালানোর দাবি উঠে আসছে। সকলের এই দাবি কবে পূরণ হবে তা নিয়ে বারবার উঠছে প্রশ্ন। এসবের মাঝেই এবার আশঙ্কা করা হচ্ছে যে পরিষেবা পুরোপুরি শুরু না হলে তাহলে দার্জিলিংয়ের এই টয় ট্রেন পরিষেবা UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা হারাবে। শুনে চমকে গেলেন তো কিন্তু এটাই সত্যি।
বিপদের মুখে টয় ট্রেন পরিষেবা
জানা যাচ্ছে, টয় ট্রেন না চললে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা হাতছাড়া হতে পারে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই রুটে টয় ট্রেন পরিষেবা পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং ঐতিহ্যবাহী তকমা রক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে।
পুজোর মরসুমে রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী
এক রিপোর্টে উঠে এসেছে, চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলা পুজোর মরশুমে ৫,৭৪৪ জন যাত্রী এই জয় রাইড পরিষেবা গ্রহণ করেছিলেন। জানলে চমকে উঠবেন, দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে টিকিট বিক্রি করে ৬৯,২৪,৫০০ টাকা উপার্জন করেছে। দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্ত জয় রাইড সার্ভিসের মাধ্যমে এই উপার্জন হয়েছে। এই পরিসংখ্যান দেখায় যে পর্যটকরা এখনও টয় ট্রেন পরিষেবা সম্পর্কে উত্সাহী।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লাইনের উন্নয়ন
তবে বর্ষার সময়ে এই টয় ট্রেন পরিষেবা দেওয়া এক কথায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তার অবশ্যই কারণ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিলিগুড়ি ও দার্জিলিংয়ের মধ্যে টয় ট্রেন লাইন বহু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই লাইন মেরামতির জন্য উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল বারবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
হেরিটেজ তকমা হারাবে দার্জিলিং-এর টয় ট্রেন?
তবে এই প্রথম নয়, দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে অতীতেও বেশ কয়েকবার ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা হারানোর দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছিল। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঐতিহ্য রক্ষার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সম্প্রতি পাহাড় সফরের সময় তিনি আবারও বিষয়টি উত্থাপন করেন, যা টয় ট্রেনের ভবিষ্যত নিয়ে আবারও বিতর্ক সৃষ্টি করে।