শ্বেতা মিত্র, ঝাড়গ্রামঃ ভৌগলিক অবস্থানগত বৈচিত্রের কারণে পশ্চিমবঙ্গকে ঢেলে সাজিয়েছে প্রকৃতি। রাজ্যের উত্তরে রয়েছে পাহাড়-পাইন বন, দক্ষিণে সমুদ্র। মাঝে লাল মাটি, শাল-মহুয়ার জঙ্গলমহল। জঙ্গলমহল বললে সবার আগে আলোচনায় উঠে আসতে পারে ঝাড়গ্রামের কথা। ঝাড়গ্রাম এখন রাজ্যের অন্যতম প্রধান একটি পর্যটন স্থল। এই জেলার কিছু জায়গার নাম এখন প্রায় সকলেই জানেন। আবার এমনও অনেক জায়গা এখনও রয়েছে যেগুলো পর্যটকদের চোখে দেখা এখনও বাকি। আজ এই প্রতিবেদনে তেমনই একটি জায়গার কথা তুলে ধরা হল, যেখানের নাম, ঠিকানা এখনও অনেকেই জানেন না; এক্কেবারে অফবিট ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন।
ঝাড়গ্রামের এই জায়গায় গিয়েছেন কখনও?
ঝাড়গ্রামের নাম শুনলে মানুষ আগে ভয় পেতেন। মাওবাদী উপদ্রবের কারণে সেখানের বনে জঙ্গলে ঘুরতে যাওয়ার কথা একটা সময় কেউ ভাবতেই পারতেন না। লধাশুলি, আমলাশোলের মতো জঙ্গলমহলের কিছু জায়গা, যেখানে দেখার মতো প্রাকৃতিক শোভা, সেখানেও নেহাত শখ মেটানোর জন্য কেউ পা বাড়াতেন না। এখন সময় বেড়েছে। পরিস্থিতি আগের মতো নেই। মানুষ খোলা মনে জঙ্গলমহল থেকে ঘুরে আসছেন। সেখানকার পর্যটন শিল্প যাতে আরও ফুলে ফেঁপে ওঠে সে ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। আজ আমরা ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির একটি জায়গার কথা বলবো – ঝাড়গ্রামের ‘সাদাপাহাড়’। সাদাপাহাড়ের কথা আগে শুনেছেন নাকি?
এই শীতে ঘুরে আসুন সাদা পাহাড়
এই সাদাপাহাড় যাওয়া কিছু সহজ। ঝাড়গ্রাম শহর থেলে বেলপাহাড়ি, বেলপাহাড়ি থেকে কাঁকড়াঝোড়। এখান থেকে কয়েক কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাবেন বোদাডিহি গ্রামে। এই গ্রামে গেলেই সাদাপাহাড়ের সন্ধান পেয়ে যাবেন। আসলে বন জঙ্গলের আড়ালে অনেক দিন লুকিয়ে ছিল এই পাহাড়। সেভাবে চোখে পড়েনি পর্যটকদের, তাই প্রচারের আলো এসে পড়েনি সাদা পাহাড়ের ওপর। এই পাহাড়ের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। ঝাড়গ্রামের এই পাহাড়ের গায়ে সাদা সাদা অনেক ছোটো বড় পাথর দেখতে পাবেন। বুঝতে অসুবিধা হবে না সাদাপাহাড় নামের সার্থকতা।
এমনিতেও গাছাপালার কারণে জায়গাটা ছায়াছায়া। তার ওপর এই সাদা পাথরগুলো নাকি সব সময় মারাত্মক ঠান্ডা থাকে। গরমেও এই পাথর নাকি হিমশীতল, হাত দিলে শরীরে খেলে যেতে পারে হিমেল স্রোত। ঝাড়গ্রাম হয়তো গেছেন, কিন্তু এই পাহাড়ে নিশ্চই যাওয়া হয়নি। তবে চলুন এবার যাওয়া যাক এক সাদাপাহাড় জয় করার অভিযানে।