বানিয়েছিল নাকি ভূত, ঘুরে আসুন মুর্শিদাবাদের ‘হিডেন জেম’, ভুলে যাবেন হাজারদুয়ারি

Published on:

offbeat murshidabad historical fauti masjid

পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ কাজের ফাঁকে একটু ছুটি পেলে বা সপ্তাহান্তে রবিবারে ঘুরতে যেতে সকলেই ভালোবাসেন। তবে প্রতিবার কি আর চেনা জায়গাগুলিতে যেতে ইচ্ছে করে! অনেকেই ভিড়ভাট্টা থেকে দূরে অফবিট জায়গার খোঁজ করেন। আপনিও যদি কলকাতা শহরের কাছে এমনই জায়গা খুঁজছেন তাহলে আজকের প্রতিবেদনটি শেষ অবধি পড়ুন। কারণ আজ আপনাদের সন্ধান দেব মুর্শিদাবাদের একটি হিডেন জেম বা অফবিট লোকেশনের।

মুর্শিদাবাদের হিডেন জেম । Hidden Gem of Murshidabad |

WhatsApp Community Join Now

মুর্শিদাবাদ নামটা শুনলেই সবার মাথায় প্রথমেই চলে আসে হাজারদুয়ারীর কথা। বিশেষ করে যারা ইতিহাস পড়তে ভালোবাসেন তাদের কাছে এই জায়গা খুবই প্রিয়। তবে এর ঠিক কাছেই আরও একটি মসজিদ রয়েছে যেটা মুর্শিদাবাদের সবচেয়ে বড় মসজিদ নামেও পরিচিত। যেমনটা জানা যায় এক রাতের মধ্যেই নাকি এই ফৌতি মসজিদের নির্মাণ কাজ হয়েছিল, তবে সম্পূর্ণ হয়ে ওঠেনি।

ফৌতি মসজিদ । Fauti Masjid |

মুর্শিদাবাদের কাটরা মসজিদ যাওয়ার পথেই পড়ে এই ফৌতি মসজিদ। আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর দৌহিত্র সুজাউদ্দিনের পুত্র নবাব সরফরাজ খান এটির নির্মাণ শুরু করেন। আসলে নবাবের নিজেদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে কিছু সৌধ তৈরী করেন, সেই উদ্দেশ্যেই এই মসজিদ তৈরী কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শুরু হলেও শেষ হওয়ার আগেই আলিবর্দী খাঁর সাথে গিরিয়ার যুদ্ধে প্রযাতন সরফরাজ খান। এরপরেই নামকরণ করা হয় ফৌতি মসজিদ।

মসজিদের ইতিহাস

জানা যায় নবাব সরফরাজ খান নাকি ৫০০০ শ্রমিক লাগিয়েছিলেন মসজিদ নির্মাণের জন্য। একদিন হঠাৎ করে স্বশরীরে হাজির হন কাজের তদারকির জন্য। সেই সময় রোলকল করা হয় শ্রমিকদের। কিন্তু এরপরেই উঠে আসে ভৌতিক কাণ্ড কারখানার কথা। প্রতিসপ্তাহে টাকা দেওয়া হত কিন্তু একজন শ্রমিককে না দেখা যেত, না তার সম্পর্কে কোনো খোঁজ পাওয়া যেত। তাই শ্রমিকেরা পরবর্তীতে ভয়েই কাজ বন্ধ করে দেয়।

সরফরাজ খান মারা যাওয়ার পর ১৬ জন নবাব বাংলার মসনদে এসেছিলেন। কিন্ত তাদের কেউই মসজিদের কাজ সম্পূর্ণ করেননি। তাই মোট পাঁচটি গম্বুজ দিয়ে স্থাপন করার কথা থাকলেও তিনটিতেই শেষ হয়েছে কাজ। আর অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় অনেকে এটিকে ফুটি মাসজিদ বা ফুটো মসজিদ বলেও ডাকেন। এমনকি আজও সেইভাবেই রয়ে গিয়েছে মসজিদটি। তবে অসম্পূর্ণ হলেও ধীরে সুস্থে ভাঙা চোরা পিচ্ছিল সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারলে চারিদিকের অপূর্ব সুন্দর একটা ভিউ পাওয়া যেতেই পারে। তাই যদি একেবারে অফবিট জায়গার খোঁজ চান আর অ্যাডভেঞ্চার করতে চান, মুর্শিদাবাদ ভ্রমণে ফৌতি মসজিদ ঘুরে দেখতেই পারেন।

সঙ্গে থাকুন ➥
X