শ্বেতা মিত্র, কলকাতাঃ এভাবেও যে ফিরে আসা যায় তা প্রমাণ করলেন সাধারণ একজন ব্যক্তি। অবশ্য তিনি এখন আর সাধারণ নন। হাজার হাজার মানুষের সুরক্ষার দায়িত্ব এখন তাঁর কাঁধে। অথচ একটা সময়ে স্টেশনে বসে অন্য মানুষের জুতো সেলাই করতেন। জীবনে যে সংগ্ৰাম কাকে বলে তা খুব অল্প বয়সেই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের খেলা কাকে বলে তা বুঝতে পারেননি গজে সিং। একসময় তিনি যে স্টেশনে বসে মানুষের জুতো সেলাই করতেই আজ সেই স্টেশনেরই স্টেশন মাস্টার তিনি। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন ও পড়ছেন। গজে সিং ওরফে গজ্জুর গল্প যে কোনো বলিউডের চিত্রনাট্যকে হার মানাবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই ব্যক্তির সাফল্যের কাহিনী।
গজে সিং-এর সাফল্যের গল্প
আজকের সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মের দুনিয়ায় এমন বহু জিনিস আছে যেগুলি সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। ঠিক যেমন কোনো মানুষের সাফল্যের গল্প শুনলে আমাদের সকলের খুব ভালো লাগে বৈকি। গজে সিং-এর কাহিনীও আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে। একটি রিপোর্ট অনুসারে, গজ সিং রাজস্থানের বিওয়ার রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট হয়েছেন এবং এটি সেই রেলওয়ে স্টেশন যেখানে ৩৫ বছর আগে তিনি গজ্জু নামে জুতো পালিশ করতেন।
৮ ভাইবোনের পরিবারে মেজো ছেলে গজে সিং তার পরিবারের প্রথম ব্যক্তি যিনি উচ্চ শিক্ষা লাভ করেছেন। যখন তিনি দশম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, তখন তার অটোচালক বাবা পুরো এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন। তিনি নিজে বিএ, এমএ এবং বিএড করেছেন এবং তার ভাইবোনদের শিখিয়েছিলেন এবং তিনি একজন আইনজীবীর মতো অবস্থানও অর্জন করেছিলেন। কিন্তু জীবন যে সমান্তরালভাবে সবসময় চলে না সেটা খুব অল্প বয়সেই বুঝে গিয়েছিলেন গজ্জু।
ছিল না পড়াশোনার টাকা
ছোটবেলায় বই কেনার টাকা ছিল না গজ্জু ওরফে গজ সিংয়ের, তাই ছোটবেলার বন্ধু মুরলীর সঙ্গে বই কিনে ছিঁড়ে দু’ভাগ করে পর্যায়ক্রমে পড়তেন তিনি। সংসারের খরচ চালাতে গজ্জু স্কুল থেকে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এক বাক্স বুট পলিশ আর দুটো ব্রাশ নিয়ে রেল স্টেশনে আসতেন এবং প্রতিদিন যাত্রীদের বুট পলিশারের কাজ করতেন। এই সুবাদে তিনি প্রতিদিন ২০-৩০ টাকা রোজগার করতেন। এরপর আয় বাড়ানোর জন্য ব্যান্ডের সঙ্গে বাজনা বাজানোর কাজও করেন, পেতেন ৫০ টাকা।
বারবার ব্যর্থতা দেখেও সাফল্য পেলেন শেষমেষ
জানলে অবাক হবেন, গজে সিং ২৫ বার প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও প্রায়শই ইন্টারভিউ মিস করেন। তিনি কনস্টেবল, হেড কনস্টেবল, সিপিও সাব-ইন্সপেক্টর এবং এসএসসি এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।এরপরেই ভাগ্য বদলে যায় তাঁর। সহকারী স্টেশন মাস্টারের রেলওয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি বিকানের, বিরওয়াল-সুরতগড়ের স্টেশন মাস্টার হিসাবে প্রথম পোস্টিং পান। ৩৫ বছর পরে, তিনি একই স্টেশনে সুপারিনটেনডেন্ট হয়ে যান যেখানে তিনি জুতো পালিশের কাজ করেছিলেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |