মাধ্যমিক পাস সিকিউরিটি গার্ড আজ Zoho-র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার! কাঁদাবে আলীমের গল্প

Published:

Zoho Company
Follow

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শ্রীধর ভেম্বুর জোহ কোম্পানি (Zoho Company) এখন আলোচনার শিরোনাম। Arattai থেকে Zoho Mail ইতিমধ্যেই ভারতীয় ব্যবহারকারীদের মধ্যে সারা ফেলা দিয়েছে। তবে তারই মধ্যে এক মাধ্যমিক পাস সফটওয়্যার ডেভলপারের জীবন কাহিনী সামনে আসলো। হ্যাঁ, মাধ্যমিক পাস করেই আজ জোহ কোম্পানির একজন সফল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তামিলনাড়ুর এই ব্যক্তি। বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটিতে।

নিরাপত্তা রক্ষী থেকেই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার

আসলে আমরা বলছি আব্দুল আলীমের কথা। তিনি তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। একসময় জোহতে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি লিঙ্কডিনে তিনি একটি আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে একজন নিরাপত্তা রক্ষী থেকে কোম্পানির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে উঠেছেন এবং তাঁর জীবনের লড়াই সম্পর্কিত কাহিনী।

১০০০ টাকা নিয়েই বেরিয়েছিলেন কাজের খোঁজে

আব্দুল আলীমের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট অনুযায়ী জানা যায়, ২০১৩ সালে তিনি মাত্র ১০০০ টাকা পকেটে নিয়ে কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। প্রায় দুই মাস রাস্তায় রাস্তায় ঘোরার পর তিনি জোহতে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন। তবে তাঁর এই ছোট্ট একটা সুযোগই জীবনকে ঘুরিয়ে দেয়। একদিন কর্তব্যরত অবস্থাতে তাঁর এক সিনিয়র কর্মী তাঁর কাজের অঙ্গভঙ্গিতে সন্দেহ করেন। এরপর তাঁর সঙ্গে কথোপকথনের পর তিনি জানতে পারেন যে, আব্দুল আলীম HTML সম্পর্কে কিছুটা শিখেছে। তবে তাঁর আগ্রহ দেখে মুগ্ধ হয়েই ওই সিনিয়র কর্মচারী থেকে প্রোগ্রামিং শেখানোর প্রস্তাব দেয়। আর এই ছোট্ট একটি প্রস্তাবই তাঁর জীবনকে পুরো বদলে দেয়।

তাঁর শেখার প্রতি এতটাই আগ্রহ ছিল যে, ১২ ঘন্টা নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করা সত্ত্বেও কাজের শেষে প্রতিদিন রাতে তিনি কোডিং এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট বোঝার জন্য ওই সিনিয়র কর্মচারীর সঙ্গে বসতেন। আর তাঁর সেই চেষ্টা কয়েক মাসের মধ্যেই সফল হয়। মাত্র ৮ মাস শেখার পরেই আব্দুল আলীম একটি অ্যাপ তৈরি করে ফেলেন। তা দেখে ওই সিনিয়র কর্মচারী সেই অ্যাপটি তাঁদের ম্যানেজারকে দেখিয়েছিলেন। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তিনি কোনও প্রযুক্তিগত ভূমিকায় ইন্টারভিউ দিতে প্রস্তুত কিনা।

তবে এই প্রশ্ন করাতে প্রথমে আব্দুল আলীম দ্বিধাগ্রস্থ ছিল। কারণ তাঁর শিক্ষার পরিধি খুব একটা বিস্তৃত ছিল না। মাত্র দশম শ্রেণী পাস করেছিলেন সে। তবে জোহ সবসময় ডিগ্রির থেকে দক্ষতাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। তাই তিনি ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণ করেন এবং উত্তীর্ণ হয়ে একজন সফল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কোম্পানিতে যোগদান করেন। আর সেই সাফল্যের গল্পই তিনি তাঁর লিঙ্কডিনে পোস্ট করেছেন, যেখানে ৩ লক্ষের বেশি লাইক আর ১৭ হাজারের বেশি কমেন্ট এসেছে।

আরও পড়ুনঃ আজ বিশ্ব ব্যর্থতা দিবস! জানুন এই দিনের গুরুত্ব, কীভাবে, কবে থেকে শুরু হয়েছিল সবকিছু

শিক্ষাগত যোগ্যতার থেকে দক্ষতাই আসল

তাঁর ওই পোস্টে একজন মন্তব্য করেছেন, জোহ তাঁকে কেবলমাত্র চাকরি নয়, বরং নতুন জীবন দিয়েছে। মধ্যবিত্ত একজন ছাত্রের এই প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এমনকি শ্রীধর ভেম্বু নিজেই জানিয়েছিলেন, তাঁর কোম্পানি কোনওরকম শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে না, বরং দক্ষতার উপরেই জোর দেয়। এমনকি তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, কলেজের ডিগ্রি থাকা কোনও শর্তসাপেক্ষ নয়। প্রার্থীদের কখনও তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয় না। একাডেমিক স্কুল বা সার্টিফিকেট নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনওরকম প্রভাব ফেলে না। দক্ষতা থাকলেই যে জীবনে সফলতা শিখরে পৌঁছে যাওয়া যায়, তা আব্দুল আলীম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

গুরুত্বপূর্ণ
Join
চাকরির খবর
Join
রাশিফল
Join
খেলার খবর
Join