সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের মত এক বিরাট দেশে প্রতিদিন প্রায় ২.৫ কোটি মানুষ ট্রেনে (Indian Railways) যাতায়াত করেন, আর চলে হাজার হাজার ট্রেন। কিন্তু এই প্রচুর ট্রেনের মধ্যে এমন একটি ট্রেন রয়েছে, যে ট্রেনে শুধু যাত্রা আনন্দেরই নয়, বরং বিনা পয়সায় খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও থাকে। হ্যাঁ, একদম ঠিকই পড়েছেন। সকালের জল খাবার থেকে শুরু করে রাতের খাবার পর্যন্ত সবকিছুই মেলে একদম ফ্রিতে। হ্যাঁ আমরা কথা বলছি সাচখণ্ড এক্সপ্রেস ট্রেনটির সম্পর্কে। এই ট্রেনটির নম্বর ১২৭১৫। ট্রেনটি গত ২৯ বছর ধরে এই একই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
কোথা থেকে কোথায় চলে এই ট্রেনটি?
সূত্র বলছে, সাচখণ্ড এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলে মহারাষ্ট্রের নানদেড শহর স্টেশন থেকে পাঞ্জাবের অমৃতসর পর্যন্ত। আর এই দুটি স্থানই শিখ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অমৃতসরে রয়েছে হর মন্দির সাহিব গুরুদ্বার, আর মহারাষ্ট্রে হয়েছে শ্রী হজুর সাহিব গুরুদ্বার। আর মহারাষ্ট্রের নানদেড পর্যন্তই এই ট্রেনটির যাত্রাপথ। দশম শিখ গুরু শ্রী গুরু গোবিন্দ সিংজি ১৭০৮ সালে নানদেডে পরলোকগমন করেছিলেন। আর সেই কারণে এই ট্রেনের ধর্মীয় তাৎপর্য আরো বেড়েছে।
ফ্রি খাবারের রহস্য কী?
আসলে ট্রেনটি যাত্রাপথে ৩৯টি স্টেশনে থামে। তার মধ্যে ৬টি বিশেষ স্টেশনে মহাভোজের ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে যাত্রীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয়। আর এই ছয়টি স্টেশন হল, নিউ দিল্লি, ভোপাল, পরভানি, জলনা, ঔরঙ্গাবাদ এবং মারাঠওয়াড়া। সূত্রের খবর, এই স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের বসে খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ও দেওয়া হয়। আর মেনুতে থাকে ভাত, ছোলে, ডাল, খিচুড়ি, আলু-ফুলকপি এবং অন্যান্য সবজি।
এই খাবারের খরচ কে বহন করে?
এই বিপুলসংখ্যক যাত্রীর জন্য প্রচুর পরিমাণে খাবারের খরচ তো একেবারে কম নয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, এই সমস্ত খাবারের খরচ আসে গুরুদ্বারের দান বাক্সের থেকে। হ্যাঁ, এমনকি যাত্রীরা নিজেরাই প্লেট-বাটি ইত্যাদি নিয়ে আসেন খাওয়ার জন্য। সাধারণ কামরা থেকে এসি কামরা, প্রায় সকল যাত্রীই এই খাবার গ্রহণ করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ১৫০০ টাকা বিনিয়োগে পান ১ লক্ষ টাকারও বেশি! বিশেষ অফার পোস্ট অফিসের
কতটা দীর্ঘ ট্রেনটির যাত্রাপথ?
সাচখণ্ড এক্সপ্রেস তাই ২০০০ কিলোমিটার পাড়ি জমায়। আর এই যাত্রাপথে সময় লাগে প্রায় ৩৩ ঘন্টা। এই দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রীদের মনোবল সতেজ রাখতেই এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। পাশাপাশি ধর্মীয় ভক্তির ছোঁয়াও লেগে রয়েছে এই উদ্যোগে। আজকালকার দিনে যখন অধিকাংশ ট্রেন খাবারের জন্য অতিরিক্ত পয়সা নেয়, সেখানে সাচখণ্ড এক্সপ্রেস হয়ে উঠেছে যেন এক সহানুভূতির ট্রেন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |