নয়া দিল্লিঃ শিক্ষা হল জাতির মেরুদণ্ড। তাই যেকোনও দেশকে উন্নত হতে হলে আগে শিক্ষার হার বৃদ্ধি করা উচিত। প্রাচীনকাল থেকে ভারত শিক্ষা ও সংস্কৃতির আঁতুরঘর হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে ভিনদেশী শাসকদের শাসনকালে তাতে অবনতি ঘটেছে। তবে স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের সাক্ষরতার হারে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, বিশ্ব সাক্ষরতা সূচকে ভারত ১০৫ তম স্থানে রয়েছে। ভারতে সাক্ষরতার হার প্রায় ৭৬.৩২ শতাংশ। যদিও এখনও পুরুষ ও মহিলাদের সাক্ষরতার হারের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট ব্যবধান রয়েছে।
ভারত একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেশ। কয়েক বছর ধরে সাক্ষরতার হারের উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাক্ষরতা একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির একটি প্রধান সূচক। এই নিবন্ধে, আমরা ভারতের সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত ১০ টি রাজ্যের বিষয়ে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন, ঘুরে আসি দেশের সর্বাধিক শিক্ষার হার সমৃদ্ধ রাজ্যগুলি থেকে।
(১) কেরালা
কেরালাকে ভারতের সবচেয়ে শিক্ষিত রাজ্যের তকমা দেওয়া হয়। ২০১১ সালের সেনসাস অনুসারে, কেরালার সাক্ষরতার হার ছিল ৯৪ শতাংশ। তবে সম্প্রতি এই হার বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯৬.২ শতাংশ।
(২) লাক্ষাদ্বীপ
লাক্ষাদ্বীপ হল ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যেখানে সাক্ষরতার হার ৯১.৮৫ শতাংশ। দেশের এই দ্বীপের শিক্ষাব্যবস্থা ও আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতির ব্যবহার এই পরিসংখ্যানের নেপথ্যে রয়েছে।
(৩) মিজোরাম
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত মিজোরামের সাক্ষরতার হার ৯১.৩৩ শতাংশ। রাজ্যের সাক্ষরতার নেপথ্যে খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রচেষ্টা অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
(৪) গোয়া
গোয়া রাজ্যটি মূলত নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। তবে এই রাজ্যের উচ্চ সাক্ষরতার হার এটিকে একটি অন্য মাত্রা দেয়। বর্তমানে গোয়ার সাক্ষরতার হার ৮৮.৭০ শতাংশ।
(৫) ত্রিপুরা
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আরেকটি রাজ্য ত্রিপুরার সাক্ষরতার হার ৮৭.২২ শতাংশ। রাজ্যের সরকার বিভিন্ন শিক্ষামূলক উদ্যোগের মাধ্যমে সাক্ষরতার উন্নতির জন্য যথেষ্ট প্রচেষ্টা করেছে। “শিক্ষার অধিকার আইন” এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(৬) দমন ও দিউ
দমন ও দিউ, একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এই অঞ্চলে সাক্ষরতার হার ৮৭.১০ শতাংশ। ল আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতির ব্যবহার এবং প্রাথমিক শিক্ষার উপর জোর দেওয়া এই অঞ্চলে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করে।
(৭) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সাক্ষরতার হার হল ৮৬.৬৩ শতাংশ। এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা তার অনন্য ভৌগলিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট দ্বারা সজ্জিত। তাই এখানের মানুষ শিক্ষাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
(৮) দিল্লী
ভারতের রাজধানী শহর দিল্লির সাক্ষরতার হার ৮৬.২১ শতাংশ। আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতি, ডিজিটাল ক্লাসরুম এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রবর্তন দিল্লির শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
(৯) চণ্ডীগড়
চণ্ডীগড় হল ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং পাঞ্জাব ও হরিয়ানা উভয়েরই রাজধানী। এই অঞ্চলের সাক্ষরতার হার ৮৬.০৫ শতাংশ। আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতি, ডিজিটাল ক্লাসরুম এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রবর্তন চন্ডীগড়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করেছে।
(১০) হিমাচল প্রদেশ
হিমালয়ের মধ্যে অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের সাক্ষরতার হার ৮২.৮০ শতাংশ। হিমাচল প্রদেশ সরকারের প্রবর্তিত বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ এই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করে তুলেছে।