নয়া দিল্লিঃ এমনিতে UPSC পরীক্ষাকে ভারতের সবথেকে কঠিনতম পরীক্ষা হিসেবে ধরা হয়। এই পরীক্ষা দিতে গিয়ে বাঘা বাঘা লোকের রীতিমতো ঘাম ছুটে যায়। প্রত্যেক বছর কয়েক লাখ মানুষ এই পরীক্ষায় বসেন কিন্তু কৃতকার্য হতে পারেন মাত্রই কয়েকজন। UPSC ক্র্যাক করতে মাসের পর মাসের পরিশ্রম, ধৈর্য দরকার। কপাল যদি আপনার ভালো থাকে তাহলে একবারের প্রচেষ্টাতেই পাশ করতে পারেন, আবার কপাল যদি খারাপ হয় তাহলে ৫ বার বা ৬ বারের প্রচেষ্টাতেও অনেকে সাফল্য হতে পারেন। তবে আজ এমন এক প্রতিভাকে নিয়ে আলোচনা হবে যে কিনা লাখ লাখ টাকার চাকরি ছেড়ে UPSC পরীক্ষায় বসেন এবং সাফল্য পান।
কৃষকের মেয়ের স্বপ্ন পূরণের গল্প
আজ কথা হবে এক ছাপোষা কৃষকের মেয়ের স্বপ্ন পূরণ নিয়ে। অন্নপূর্ণা সিং UPSC সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ২০২৩ সালে ৯৯তম স্থান অর্জন করেছেন। তিনি বাঁকা জেলার লাহোরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা একজন সাধারণ কৃষক। অন্নপূর্ণা Intel-এ সেমিকন্ডাক্টর ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অন্নপূর্ণা সিং বেঙ্গালুরুর একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক করেছেন। এরপর মোটা অঙ্কের মাইনে সহ বহুজাতিক কোম্পানি ইন্টেলে সেমিকন্ডাক্টর ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি পান। যদিও কোভিড মহামারী একদম জীবন পাল্টে দেয় তাঁর। ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়েই ছাড়বেন, এই লক্ষ্য নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েন অন্নপূর্ণা।
ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি
প্রথম দিকে কিন্তু অন্নপূর্ণা সাফল্য পাননি। দু দুবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হন তিনি। কিন্তু সেই যে কথায় আছে না, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়, এক্ষেত্রেও সেই ঘটনাটা ঘটেছে। কোভিড মহামারীর সময় অন্নপূর্ণা প্রথাগত অফলাইন ক্লাসের পরিবর্তে অনলাইন কোচিং বেছে নিয়েছিলেন। এ ছাড়া নিজেকে বিশেষ করে মক ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। আরো একটা কথা আছে, কষ্ট করলেই কেষ্ট মেলে, অন্নপূর্ণার ক্ষেত্রেই একই হল। অন্নপূর্ণা জানান, ইউপিএসসি-র প্রথম চেষ্টাতেই লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন নিয়ে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। তিনি তার পরবর্তী দুটি প্রচেষ্টার প্রস্তুতির জন্য পাটনা চলে গিয়েছিলেন। নিজের সব সুখ, স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন অন্নপূর্ণা।
অন্নপূর্ণার মূল মন্ত্র
অন্নপূর্ণা ইউপিএসসি প্রত্যাশীদের প্রাথমিক প্রচেষ্টায় তাড়াহুড়ো না করার পরামর্শ দেন। ব্যর্থ হলেও সেটাকে হাতিয়ার করে আগে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন অন্নপূর্ণা।