শ্বেতা মিত্র, বেঙ্গালুরুঃ বর্তমান সময় ভালো করে পড়াশোনা করে কে না নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের ছোটখাটো চাহিদা পূরণ করা থেকে শুরু করে পরিবারে পাশে দাঁড়ানোর মজাই একটা আলাদা থাকে। কিন্তু অনেক সময় এই চাকরিই আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। অনেককেই অভিযোগ করতে শোনা যায়, রোজকার ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে নিজেদের জন্য সময় বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে অনেকেই আছেন যারা সাহস করে চাকরি ছেড়ে দেন আবার অনেকেই আছেন যারা ইচ্ছা থাকলেও উপায় করে উঠতে পারেন না। কিন্তু বেঙ্গালুরুর এক যুবক সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি এক কোটি টাকার চাকরি ছেড়ে দিয়ে সুখে জীবন কাটাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুনে চমকে গেলেন তো কিন্তু এটাই দিনের আলোর মতো সত্যি। আজ কথা হচ্ছে বরুণ নামের এক যুবককে ঘিরে। আরো বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
কোটি টাকার চাকরি ছেড়ে দিলেন যুবক
৩০ বছর বয়সী পেশায় ইঞ্জিনিয়ার বরুণ হাসিদাকে নিয়ে ইন্টারনেটে এখন তুমুল আলোচনা চলছে। এক ঝটকায় এক কোটি টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে দেওয়া কিন্তু মুখের কথা নয়। কিন্তু এই কাজটাই করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বরুণ। এমন নয় যে তিনি অন্য চাকরি পেয়েছেন, তাই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন, কিন্তু তিনি জীবনে কিছুদিন বিশ্রাম চান, তাই পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আপাতত তাঁর লক্ষ্য, জীবনকে চুটিয়ে উপভোগ করবেন। মুম্বইয়ের বাসিন্দা বরুণ হাসিদা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। এই পোস্টে তিনি তার সিদ্ধান্তের কথা লিখেছেন। তিনি বলেছিলেন যে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া এত সহজ ছিল না তবে তার স্ত্রীর সঙ্গ এটি সহজ করে তুলেছিল।
এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলেন স্ত্রী
বরুণ জানান, ১০ বছর ধরে তিনি এই চাকরিতে আছেন। তার প্যাকেজ এখন ১ কোটি টাকা ছিল। কিন্তু তিনি তার জীবন নিয়ে মোটেও খুশি ছিলেন না। তিনি জীবনে বিরতি চেয়েছিলেন। মনের মধ্যে অশান্তি কাজ করছিল। এ বিষয়ে প্রথমে তিনি তার স্ত্রী ডাঃ মোক্ষদা মানচন্দার সঙ্গে কথা বলেন। পেশায় ইংরেজির অধ্যাপক মোক্ষদা তার স্বামীকে বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন।
বরুণ জানান, হঠাৎ করে ১ কোটি টাকার চাকরি ছেড়ে দেওয়া সহজ ছিল না। এর আগে এই দম্পতি তাদের আর্থিক ব্যয়ের পরিকল্পনা শুরু করেছিলেন। তিনি তার খরচের একটি এক্সেল শিট তৈরি করেছিলেন। এতে বাড়িভাড়া, রেশন, বিমা, যাতায়াতসহ যাবতীয় খরচ লেখা ছিল। কয়েক মাস রেকর্ড বজায় রাখার পর তাতে খরচ কমাতে শুরু করেন তিনি। তারপরে তিনি একটি কাগজ প্রস্তুত করেছিলেন যে যদি তার ১২ মাসের আয় না থাকে তবে কীভাবে তার ব্যয় পরিচালনা করা যায়। এই পরিকল্পনার জন্য তিনি জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনেন। এরপর সবকিছু গুছিয়ে নেওয়ার পর চাকরি থেকে ইস্তফা দেন বরুণ।
কী লিখেছেন বরুণ?
বরুণ লেখেন, “কয়েক মাস আগে আমি আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি অন্য কোনও অফার ছাড়াই আমার ভাল বেতনের (১ কোটি+) চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। পরিকল্পনা নেই। কোনও ব্যাকআপ নেই। আমার এক দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো একটি বিরতি দরকার ছিল – একটি সত্যিকারের বিরতি। দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ৮০ শতাংশ সময় কর্মক্ষেত্রে ব্যয় হয়। তাই এই সিদ্ধান্ত।”