পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসমাগম হয় কুম্ভ মেলায় (Mahakumbh)। সাধারণত প্রতি ১২ বছর পর এই মেলার আয়োজন হয়। তবে এবছর ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ। তাই ৪৫ দিন ব্যাপী এই মেলায় ৪০ কোটিরও বেশ মানুষ আসবেন বলে আন্দাজ করা হচ্ছে। বিশেষ করে শাহী স্নানের দিন গুলিতেই ৪-৫ কোটি ভক্ত সমাগম হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আপনিও কি মহাকুম্ভে যাওয়ার প্লানিং করছেন? কিভাবে একেবারে কম খরচে পৌঁছাবেন? আর একেবারে বিনামূল্যে থাকা ও খাওয়া করবেন? আজকের প্রতিবেদনেই রইল সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য।
কলকাতা থেকে সবচেয়ে কম খরচে কীভাবে যাবেন প্রয়াগরাজ?
দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে মহাকুম্ভ মেলায় আসার জন্য সবচেয়ে সহজ ও সস্তা মাধ্যম হল ট্রেন। তবে আপনি যদি আগে থেকে টিকিট বুকিং না করে থাকেন তাহলে এই মুহূর্তে ট্রেনের টিকিট পাওয়া খুবই মুশকিল। অনেকেই শেষ মুহূর্তে যাওয়ার প্লানিং করে ততকাল টিকিট কাটার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। তাই আসতে চাইলে যে কোনো এক্সপ্রেস ট্রেনের জেনারেল টিকিট কেটে নেওয়াটাই শ্রেয়। জেনারেল টিকিট কাটলে মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যেই হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে প্রয়াগরাজ পৌঁছে যেতে পারবেন।
প্রয়াগরাজ পৌঁছানোর পর সঙ্গমস্থল বা মেলা প্রাঙ্গনে পৌঁছানোর জন্য অটো টোটো রয়েছে। তবে ব্যাপক ভিড় হওয়ার দরুন বেশিরভাগ গাড়িই প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাই যদি সম্ভব হয় হেঁটে যাওয়াটাই শ্রেয়। স্টেশন থেকে মহাকুম্ভ মেলা প্রাঙ্গনের দূরত্ব প্রায় ১১ কিমির কাছাকাছি। এক্ষেত্রে হেঁটে গেলে প্রায় ২ ঘন্টা মত সময় লাগতে পারে। তাই অনেকেই কিছুটা পথ গাড়িতে এগিয়ে গিয়ে তারপর হাঁটা পথেই মেলায় পৌঁছাচ্ছেন।
মহাকুম্ভে বিনামূল্যে কোথায় থাকবেন?
মহাকুম্ভে পৌঁছানোর পর সবার আগে যে চিন্তা মাথায় আসে সেটা হল কোটি কোটি ভক্তদের ভিড়ে কোথায় থাকবেন? টাকা খরচ করে থাকার উপায় বেশ কিছু রয়েছে তবে আজকের প্রতিবেদনে সবার আগে খোঁজ দেব কোথায় বিনামূল্যে থাকতে পারবেন। সেক্টর ১৯-এ শ্রী শঙ্করাচার্য শ্রী স্বামী সদানন্দ সরস্বতী সেবা সংস্থানের পক্ষ থেকে বিরাট তাঁবুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে আপনারা থাকতে পারেন। ইসকনের তরফ থেকে ও সরকারের তরফ থেকে জন আশ্রয় স্থলে বিনামূল্যে থাকার আয়োজন করা হয়েছে।
তবে বিন্যামূল্যে থাকতে হলে পরিবার নিয়ে আসাটাই বাঞ্চনীয়। কারণ এক্ষেত্রে সকলে একসাথে বিশ্রাম নিলে বা ঘুমিয়ে পড়লে সমস্যা হতে পারে। তাই কিছুজন জেগে থাকতে হবে আর বাকিদের ঘুমাতে হবে। এছাড়া টয়লেটের জন্যও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি ১০০ মিটার অন্তর পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা করে টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভের বিরল যোগ, কোন কোন দিনে হবে শাহী স্নান? রইল দিনক্ষণ
মহাকুম্ভে বিনামূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা
মহাকুম্ভে একবার পৌঁছে যেতে পারলে আপনার খাওয়া নিয়ে কোনো চিন্তার প্রয়োজন নেই। এখানে একাধিক শিবির ও আশ্রমের তরফ থেকে কোটি কোটি ভক্তদের জন্য একেবারে বিনামূল্যে ভোজনের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেই আপনি সারাদিন ভাত, রুটি থেকে শুরু করে চা বিস্কুট সমস্তটাই পেয়ে যাবেন। তবে এক্ষেত্রে সকলের সাথে লাইন দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হবে খাবার পাওয়ার জন্য। উদাহরণ স্বরূপ সেক্টর ১৯ এ অখিল ভারতবর্ষীয় ধর্মসংঘের তরফ থেকে বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ মাত্র ১০০০ টাকায় থাকা-খাওয়া-স্নান সহ মহাকুম্ভ মেলার দর্শন, কিভাবে? দেখুন সম্পূর্ণ ট্যুর প্ল্যান
মহাকুম্ভ মেলায় কম খরচে থাকার ব্যবস্থা
আপনি যদি কিছু টাকা খরচ করে একটু ভালো জায়গায় থাকতে চান অর্থাৎ খাটে শুতে চান সেক্ষেত্রে ১০০-২৫০ টাকা খরচে জন আশ্রয় স্থল বা সরকারি তাবু বুকিং করে নিতে পারেন। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য জন আশ্রয় স্থলে আলাদা করে চেঞ্জিং রুমের ব্যবস্থা রয়েছে যেটা প্রাইভেসি বজায় রাখবে। তাই চাইলে সেগুলিও বুক করতে পারেন।