হাওড়া বা শিয়ালদা নয়, দক্ষিণবঙ্গের সবথেকে প্রাচীন রেল জংশন কোনটি জানেন?

Published on:

khana railway station

শ্বেতা মিত্রঃ ভারতের সিংহভাগ মানুষ রেল ব্যবস্থার উপর চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করেন। এই রেল ব্যবস্থা সকলের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বাস, বিমানের পাশাপাশি ট্রেনের গুরুত্ব সাধারণ মানুষের জীবনে কিন্তু কম নয়। প্রতিদিন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনে করে যে যার গন্তব্যে ছুটে চলেছেন। এদিকে বিপুল পরিমাণে রেল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করা কিন্তু মোটেই মুখের কথা নয়। তবে ভারতীয় রেলের এমন অনেক বিষয় আছে যেটির সম্পর্কে হয়তো খুব কম মানুষই জানেন আবার অনেকেই আছেন কিছুই জানেন না। যেমন দক্ষিণবঙ্গের সবথেকে প্রাচীন কিংবা প্রথম জংশন স্টেশন কোনটি সে বিষয়ে কি আপনি কিছু জানেন? আজই প্রতিবেদনই এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করা হবে।

দক্ষিণবঙ্গের সবথেকে প্রাচীন রেল জংশন কোনটি?

WhatsApp Community Join Now

আপনার মনেও কি কখনো প্রশ্ন জেগেছে যে দক্ষিণবঙ্গে সবথেকে প্রাচীন রেল জংশন কিংবা প্রথম রেল জংশন কোনটি? অনেকেই হয়তো ভাববেন যে হাওড়া কিংবা শিয়ালদা। কিন্তু উত্তর হল না। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন যে তাহলে কোন রেল স্টেশনটি সবথেকে প্রাচীন? তাহলে জানিয়ে রাখি, পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে প্রাচীন স্টেশন বা রেল জংশনের নাম হল খানা জংশন।

পূর্ব বর্ধমানের অবস্থিত এই রেল স্টেশনটির উপর দিয়ে প্রতিদিন শয়ে শয়ে ট্রেন ছুটে চলেছে। সেইসঙ্গে হাজার হাজার মানুষ এই রেলস্টেশনে উপর দিয়ে যাতায়াত করছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলাবাসীর কাছে অত্যন্ত গর্বের এই রেল স্টেশনটি । পূর্ব রেল বর্তমানে হাওড়া ডিভিশনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনটিকে পরিচালনা করছে। এই রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন কোড হল KAN। এই স্টেশনটির মধ্যে রয়েছে ৫টি প্ল্যাটফর্ম।

কবে জংশন মর্যাদা লাভ করে এই স্টেশনটি?

অনেকেই হয়তো জানেন না যে খানা রেল জংশনটি ১৮৫৯ সালে জংশন মর্যাদা লাভ করে। জানায় যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে কার, টেগোর অ্যান্ড কোম্পানি দামোদর নদের নারায়ণকুড়ি ঘাট থেকে কয়লা পরিবহন করত কলকাতায়। তবে নদীতে জলের প্রবাহ অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় এই সরবরাহ ব্যবস্থা অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল। যে কারণে লাভজনক কয়লা পরিবহন ব্যবসা পেতে সেইসময়ের ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ১৮৫৫ সালে কলকাতা ও হুগলির মধ্যে পাতা রেলপথটি রানীগঞ্জ পর্যন্ত প্রসারিত করে।

এরপর ১৮৫৯ সালে খানা জংশন-রাজমহল লাইন নির্মিত হওয়ার পরে হাওড়া-দিল্লি প্রধান রেলপথের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। এই সময়েই কিন্তু খানা রেল স্টেশনটি জংশন স্টেশনের তকমা পায়। ১৮৬৬ সালে কলকাতা ও দিল্লি সরাসরি যুক্ত হয়। ১৮৭১ সালে রানিগঞ্জকে কিউলের সাথে সংযোগকারী ৪০৬ কিলোমিটার (২৫২ মাইল) দীর্ঘ লাইনটি সম্পন্ন হয়। বর্তমান সময়ে এই রেল স্টেশনটি বহু মানুষের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হয়ে উঠেছে।

সঙ্গে থাকুন ➥