সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সাধারণ মানুষ মূলত সোনা বা গয়না (Gold Jewellery) ব্যাঙ্কে নিরাপত্তার জন্য রেখে দেয়। তবে সেখানেই ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আয়কর দপ্তরের হেফাজতে থাকা 90 লক্ষ টাকা সোনার গয়না উধাও হয়ে গিয়েছে এক ব্যাঙ্কের লকার থেকেই। আর এই ঘটনার জন্য সরাসরি আয়কর দপ্তরকেই দায়ী করেছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
ঘটনাটি কী?
ইকোনোমিক্স টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যবসায়ী মিস্টার জৈনের বাড়িতে আয়কর দপ্তর হানা দিয়েছিল। আর সেখানে বিপুল পরিমাণে সোনার গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়। অভিযোগ ওঠে, এই গয়নায় কোনওরকম সঠিক হিসাব দেখাতে পারেননি তিনি। নিয়মমাফিক গয়নাগুলি এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লকারে রাখা হয়েছিল। তবে মামলা চলাকালীন লকার ভাঙাতেই বাধে বিপত্তি। সেখান থেকেই সব গয়না চুরি হয়ে যায়।
কিন্তু এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে জৈন ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, আয়কর দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তিনি দাবি করেছিলেন, মোট 94 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর তার সঙ্গে 2025 সালের 30 জুলাই থেকে টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত 9% হারে সুদ গুনতে হবে।
আদালত কী বলল?
এদিকে 25 সেপ্টেম্বর, 2025 এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে, আয়কর দপ্তরের তরফ থেকে অযথা সময় নষ্ট করা হয়েছে। 2023 সালেই জৈনকে অন্তত 41 লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। তবে আজও তিনি কোনওরকম টাকা পাননি। আর গয়না হারিয়ে যাওয়া নিয়ে করদাতা কোনওরকম দায়বদ্ধতা নেবে না। গয়না যেহেতু আয়কর দপ্তরের হেফাজতে ছিল, তাই ক্ষতির দায় তাদেরই নিতে হবে। ফলে টাকা যেখান থেকে আসুক না কেন, ক্ষতিপূরণ আয়কর দপ্তরকেই দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ PoK-তে ফেটে পড়ল ৭০ বছরের ক্ষোভ! রাস্তায় লক্ষাধিক মানুষ, পাক সেনার গুলিতে নিহত একাধিক
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আয়কর দপ্তরকে 2025 সালের 30 জুলাইয়ের জমা দেওয়া ভ্যালুয়েশন যাচাই করে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। এমনকি আরও বলা হয়, যদি ওই সময়সীমার মধ্যে টাকা পরিশোধ না করা হয়, তাহলে সোনার গয়নার দামের উপরে 12% হবারে সুদ ধার্য করা হবে, যা গয়না বাজেয়াপ্ত হওয়ার দিন থেকেই কার্যকর হবে। পাশাপাশি আদালতে এও জানিয়েছে, চাইলে আয়কর দপ্তর আইন অনুযায়ী সেই টাকা ব্যাঙ্কের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।