সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ফ্লাইটের টিকিট বুকিং করার সময় নীচের সুন্দর ভিউ পেতে সবাই উইন্ডো সিট চায়। কেউ কেউ আবার এর জন্য অতিরিক্ত টাকাও খরচ করে। কিন্তু এবার থেকে সেই রাস্তায় বাঁধা আসতে চলেছে (Flight Window Rules)।
হ্যাঁ, দেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থা DGCA সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে। জানা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় ফ্লাইট চলাকালীন এবার থেকে উইন্ডো কভার নামিয়ে রাখতে হবে। এমনকি নীচেও তাকানো যাবে না বা কোনোরকম ছবিও তোলা যাবে না।
কী কারণে এমন নির্দেশিকা?
গোটা দেশ জুড়ে দিনের পর দিন বাড়ছে নিরাপত্তার ঝুঁকি। বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তানের গুপ্তচররা বেরিয়ে পড়ছে। কেউ ট্রাভেল ব্লগার, আবার কেউ ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশ ধারণ করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের লক্ষ্য একটাই – ভারতীয় সেনা, বিশেষ করে বায়ুসেনার ঘাঁটিগুলির তথ্য সংগ্রহ করে তার তথ্য পাচার করা।
আর এই সূত্র ধরে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে বিমানবন্দর ও বিমান ঘাঁটির নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে এই বিরাট পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার জেরেই DGCA-র এই নয়া নির্দেশিকা।
নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে?
নতুন নির্দেশিকাতে বলা হয়েছে, 10 হাজার ফুটের নীচে যখন বিমান থাকবে, তখন যাত্রীদের জানলার উইন্ডো কভার নামিয়ে রাখতে হবে। এমনকি টেক অফ ও ল্যান্ডিংয়ের সময় যেন কেউ নীচের তাকিয়ে ছবি বা ভিডিও না করে, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
শুধু তাই নয়, বায়ুসেনা ঘাঁটির উপর দিয়ে বা সেনা ঘাঁটির পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া ফ্লাইট থেকে নীচের কোনও দৃশ্য দেখাই যাবে না। এমনকি যে বিমানবন্দর বায়ুসেনা খাঁটি লাগোয়া, সেই সমস্ত এলাকায় ভিতরে বা বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ মোবাইলে ছবি বা ভিডিও করতে পারবে না। পাশাপাশি ইমারজেন্সি এক্সিটের পাশে থাকা জানলাগুলিতে ছাড় থাকলেও সেখান থেকে নীচের কোনও দৃশ্য ভিডিও করা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ এসপ্ল্যানেড থেকে নিউ গড়িয়া হয়ে এয়ারপোর্ট! চালু হচ্ছে কলকাতার প্রথম মেট্রো রিং
কেন এত কড়াকড়ি?
সম্প্রতি ভারতীয় সেনার করা অপারেশন সিঁদুরের সময় দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানের তরফ থেকে ভারতের বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিকে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সেগুলিকে মাঝ আকাশেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তবে এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই ভারত সরকার আরও কড়া পদক্ষেপ হতে চলেছে, যাতে বায়ুসেনা ঘাঁটিগুলিকে নিরাপদ রাখা যায়।
প্রসঙ্গত, ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক বেসামরিক বিমানবন্দর বায়ুসেনা ঘাঁটি লাগোয়া এলাকায় রয়েছে। আর সেই সমস্ত স্থানে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। এমনকি প্রতিটি বিমানবন্দরে এই নির্দেশিকা কার্যকর হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে খতিয়েও দেখছে বিমান সংস্থাগুলি। নির্দেশ লঙ্ঘন হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।