প্রীতি পোদ্দার, তামিলনাড়ু: দিনের পর দিন পরিবারে হয়ে চলেছে অশান্তি। সম্পত্তির লিখে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ বার বার চাপ দিচ্ছেন মেয়েরা! অবশেষে অশান্তির চাপে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা আধিকারিক। রাগে, অভিমানে চার কোটি টাকার সম্পত্তি মন্দিরে দান করলেন তিনি। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই এলাকা জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে।
ঘটনাটি কী?
ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) তিরুভান্নামালাই জেলার অরণি শহরের আরুলমিগু রেনুগাম্বল আম্মান মন্দিরে। বিশ্বাস এবং ভক্তির টানে অসংখ্য ভক্তের আগমন ঘটে এই মন্দিরে। অনেকেই মন্দিরের উন্নতির জন্য বিপুল অর্থ, গয়না দান করে থাকে। তাই মন্দিরের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি দু’মাস অন্তর ভক্তদের থেকে পাওয়া দান হিসাব করে দেখেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। প্রতিবারের মত এবারেও সেই হিসাব করতে গিয়েছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাক্স খুলতেই চোখ ছানাবড়া কর্তৃপক্ষের।
সমস্ত সম্পত্তি ভগবানের নামে!
গত ২৪ জুন আরুলমিগু রেনুগাম্বল আম্মান মন্দিরে ভক্তদের দানের বাক্স খুলতেই গিয়ে দেখা যায় ৪ কোটি টাকার সম্পত্তির দলিল রয়েছে সেখানে। যা দেখে অবাক হয়ে যায় মন্দিরে থাকা সদস্যরা। কারণ এই ধরনের ঘটনা এর আগে কোনদিনও ঘটেনি। তাই স্বভাবতই সকলের মনে সন্দেহ জাগে যে আদেও কেউ মজা করে নকল দলিল দিয়ে গিয়েছে কিনা।
তাই শুরু হয় খোঁজখবর। আর খোঁজ মিলতেই জানা যায় কোনো মসকরা নয়, অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাকর্তাই তাঁর সমস্ত সম্পত্তি ভগবানের নামে লিখে রেখে গেছেন।
সম্পত্তির জন্য বাবাকে অপমান!
জানা গিয়েছে, সেখানকার কেশবপুরম গ্রামের বাসিন্দা হলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা বিজয়ন। তিনি ছোটবেলা থেকেই ওই মন্দিরে পুজো দিতে যান। ভক্তির কারণেই তাঁর এই দান তবে এছাড়াও আরও একটি কারণে তিনি তাঁর সমস্ত সম্পত্তি মন্দিরে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁর ছেলে মেয়ে ঠিকভাবে খেয়াল রাখে না।
এছাড়াও তিনি জানান যে, স্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তিনি একা থাকেন। তাঁর দুই কন্যাও রয়েছে। উভয়েই বিবাহিত। এদিকে বয়সকালে পরিবারের কাছ থেকে কোনও রকম সহায়তা তিনি পান না। উপরন্তু সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। আর সে কারণেই সব সম্পত্তি তিনি মন্দিরে দান করার সিদ্ধান্ত নেন।
৪ কোটি টাকার সম্পত্তি!
মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন সেনাকর্তা মন্দিরের দানবাক্সে সম্পত্তির যে দুটি দলিল রেখে গিয়েছিলেন তার মধ্যে একটি দলিল ওই বৃদ্ধের জমির এবং দ্বিতীয় দলিলটি একটি একতলা বাড়ির৷ যে জমির দলিল রেখে গিয়েছিলেন তা ছিল সাড়ে তিন কাঠা জমির।
বর্তমান বাজারে যার মোট মূল্য আনুমানিক ৪ কোটি টাকা। সবটাই তিনি যে স্বেচ্ছায় মন্দিরে দান করেছেন, তা-ও একটি কাগজে লিখে দানবাক্সে ফেলে দিয়েছিলেন। গোটাবিষয়টি সরকারি দফতরে জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: বাড়তি ওজন নিয়ে নো টেনশন! নিমিষেই ঝরবে মেদ, ওষুধ এল ভারতে, কত খরচ?
যদিও সেই প্রাক্তন সেনাকর্তা বিজয়ন জানিয়ে দিয়েছেন যে মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমি ওই সম্পত্তি মন্দিরের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে দেব৷ নিজের সিদ্ধান্ত আমি কখনই পরিবর্তন করব না৷ আমার সম্পত্তির জন্যও আমার মেয়েরা আমাকে অপমান করেছে প্রতিনিয়ত৷ তাই এই সম্পত্তি আমি তাঁদের দেব না।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |