প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ছোটো থেকেই স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে একদিন উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাবেন। কিন্তু সেই স্বপ্নের মাঝে বারংবার বন্ধ হতে দাঁড়াত দারিদ্রতা। কিন্তু সন্তানের স্বপ্ন যে কিছুতেই ভাঙতে দিতে চায় না বাবা মা। তাইতো শত কষ্ট করে ছেলেকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর জন্য খেটে চলেছে বাবা মা। যার ফলে আজ সেই ছেলেই দুচোখ ভরে দেখা স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি দিতে চলেছে গজলের (Gazole) এক দরিদ্র হকারের মেধাবী সন্তান।
সংসার টানতে হকারি করতেন বাবা
জানা গিয়েছে গাজোলের তুলসীডাঙা এলাকার বাসিন্দা হলেন কালিপদ সাহা। সংসার চালানোর জন্য হকারি চালান তিনি। প্রথম দিকে হাটে হাটে হকারি করে কয়েক পয়সা রোজগার করতেন তিনি। পরে এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সহায়তায় লোন নিয়ে একটি টোটো কিনেছিলেন। তবে দারিদ্রতার মাঝে থেমে থাকেনি কালিপদ বাবুর ছেলের পড়াশোনা। চরম অভাবের মাঝেও ছেলেকে বড় মাপের মানুষ বানানোর জন্য দিনরাত খাটতেন তিনি। এদিকে ছেলে শিবশংকরও বেশ মেধাবী। তাইতো গাজোল হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পরই কলকাতার যাদবপুর হাই স্কুলে ভর্তি করান বাবা।
PhD করতে এবার বিদেশ পাড়ি
কলকাতার যাদবপুর হাই স্কুল থেকে শিবশঙ্কর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হয় বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে। সেখান থেকে মাস্টার্স সম্পূর্ণ করার পরেই পিএইচডি-র জন্য খড়গপুর আইআইটিতে সুযোগ পায় পড়াশোনা করার। “গ্রাফ থিওরি” নিয়ে পিএইচডি করার পরেই তাঁর কাছে এল এক বড় সুযোগ। পোস্ট ডক্টরেট করার জন্য এবার ডাক পেল ইজরায়েলের -ইলান ইউনিভার্সিটিতে।
জানা গিয়েছে সেখানকার জনপ্রিয় প্রফেসর আলেকজান্ডার গুটারম্যান এর তত্ত্বাবধানে গবেষণা করবে শিবশঙ্কর। ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য এত বড় সুযোগ দেখে খুব গর্বিত গোটা পরিবার। আনন্দের কান্না যেন বাজ মানতে চাইনি, বাবা-মায়ের।
আরও পড়ুন: এবার বাড়ির ঠিকানার জন্যও আধার! ইউনিক আইডি নিয়ে পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র
বিদেশে পড়াশোনা করার এই সুযোগ সকলে পায় না। কিন্তু যাঁরা পায় তাঁরা যে সত্যিই ভাগ্যবান তা আর কেউ বলার অপেক্ষা রাখে না। এই প্রসঙ্গে শিবশংকরকে তাঁর আনন্দের অনুভূতি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি জানান, ‘মা-বাবার জন্য আজ এতদূর এসে পৌঁছতে পেরেছি আমি। আমাকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য তাঁদের প্রচুর অবদান রয়েছে। এছাড়াও স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ অন্যান্যদের কাছ থেকেও প্রচুর সহযোগিতা পেয়েছি। আমি মনে করি মেধা এবং অধ্যবসায় থাকলে যে কোন মেধাবী ছাত্র উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারবে।’
এছাড়াও শিবশঙ্কর আরও বলেন যে, “প্রথম দিকে পড়াশোনার খরচ জোগাতে আমি টিউশনি করেছি। এরপর কলেজ এবং আইআইটিতে পড়ার সময় সরকারি স্কলারশিপও পেয়েছি। তাই দিয়েই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। আমার খুব প্রিয় বিষয় হল অঙ্ক। তাই খড়গপুর আইআইটিতে অঙ্কের “গ্রাফ থিওরি” নিয়ে পিএইচডি করেছি। এখন সেই বিষয় নিয়ে বিদেশে যান পড়াশোনা করতে।”
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join Hood Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join Hood Rashifal |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |