বাজারে দেদার বিকোচ্ছে নকল বিষাক্ত ঘি! আসলটা চিনবেন কীভাবে? রইল সহজ উপায়

Published on:

ghee

বৈশাখী মণ্ডল, কলকাতাঃ গরম ধোয়া ওঠা ভাতের সাথে এক চামচ সুদ্ধ ঘি (Ghee) দিলে এক নিমিষেই এক থালা ভাত শেষ করা কোনো ব্যাপারই না। গরম ভাতের সঙ্গে সুগন্ধি ঘি এর মিশ্রণ একটা আলাদা স্বাদের সৃষ্টি করে। এছাড়াও ঘি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক কিছু খাবারের স্বাদকে দ্বিগুণ করে দিতে সাহায্য করে।

WhatsApp Community Join Now

ঘি শুধুমাত্র আমাদের খাবারের স্বাদ ও গন্ধ তৈরী করতে সক্ষম তা নয়। ঘি‌ আমাদের শরীরের জন্যও অনেক উপকার। ঘিয়ে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যগুণ। সুদ্ধ ঘি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। ঘিয়ে আছে অনেক প্রকার প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ যা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। পেশিগুলো শক্তিশালী করে। হাড়ের ঘনত্ব বাড়িতে তোলে। সুদ্ধ ঘি যেমন শরীরের অনেক উপকারে লাগে ঠিক তেমনই নকল ঘি শরীরের অনেক ক্ষতি করে।

বাজার চলতি অনেক প্রকার ঘি পাওয়া যায়। সবগুলো সুদ্ধ ঘি হয়না। অনেকেই জানি তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদে পশুর চর্বিযুক্ত ঘিয়ের ব্যবহার পাওয়া গেছে। ফলে দেশ জুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। বাজারের বেশিরভাগ ঘিয়ের শিশিতেই বনস্পতি অর্থাৎ ডালডা ও পাম তেলের মিশ্রণ থাকে। এছাড়াও নকল ঘি তে প্যারাফিন, ডিটারজেন্ট এর মতো উপাদান মেশানো থাকে। কিন্তু বাজারে এতো পরিমাণে বিভিন্ন রেঞ্জের ঘি পাওয়া যায় সহজে তাতে সাধারণ মানুষের আসল ঘি নকল ঘি চেনা খুবই দুষ্কর।

নকল ঘি শরীরের কি কি ক্ষতি করে?

১) হজমের সমস্যাঃ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে নকল ঘি নিয়োমিত খাওয়া হলে পেটের নানান সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যেমন হজম শক্তি কমে আসবে। বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া, পেট ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়।

২) বিষক্রিয়াঃ প্যারাফিন, ডিটারজেন্ট মিশ্রিত ঘি খেলে পেট ব্যাথা অথবা পেটে জ্বালাযন্ত্রনার সৃষ্টি হতে পারে।

৩) অ্যালার্জিঃ যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের কাছে এই সব নকল ঘি বিষের সমান। এছাড়াও যাদের অ্যালার্জি নেই তাদের এইসব নকল ঘি খাওয়ার কারণেও অ্যালার্জি হতে পারে। এছাড়াও নিয়মিত নকল ঘি খেলে হরমোনের সমস্যা ও যকৃতের নানাপ্রকার অসুখ হতে পারে।

সুদ্ধ এবং খাঁটি ঘি চেনার উপায় | How to identify pure Ghee |

১) হাতের তালুতে এক চামচ ঘি নিন। ঘি গলতে শুরু করলে তা সম্পুর্ন খাঁটি ঘি। শরীরের তাপমাত্রায় খাঁটি ঘি গলতে শুরু করে। আর নকল ঘি হয় চটচটে, মোমের মতো।

২) অনেকেই আবার ঘি এর গন্ধ শুকে মনে করেন ঘি আসল। কিন্তু বর্তমানে নকল বা ভেজাল ঘিয়ে বিভিন্ন প্রকার ঝাঁঝালো গন্ধ মিশিয়ে ঘি এর গন্ধ তীব্র করে তোলে বাজারে সহজে বিক্রির কারণে। সুদ্ধ বা আসল ঘিয়ের গন্ধ হবে মৃদু। তীব্র নয়। আসল ঘিয়ের গন্ধ অনেকক্ষণ ধরে থাকে। তাই গন্ধে না ভুলে পরীক্ষা করে নিতে হবে।

৩) খাঁটি ঘি সাধারণ তাপমাত্রায় গলতে থাকে। তাই হাতে ঘি নেবার পরেও যদি ঘি গলতে না শুরু করে তবে বুঝবেন ঘি নকল।

৪) খাঁটি ঘিয়ের রং হালকা সোনালী। তাই রঙে যদি কোনো রকম তারতম্য দেখেন তাহলে সাবধান হয়ে যাবেন। এছাড়াও বনস্পতি অর্থাৎ ডালডা, পাম তেল মেশানো ঘি সাধারণ অবস্থায় আলাদা আলাদা স্তর ধারন করে এবং প্রতিটা স্তরের আলাদা আলাদা রঙ হয়।

সঙ্গে থাকুন ➥
X